হাতকড়াসহ পালানো ছিনতাইকারী অবশেষে গ্রেফতার

বগুড়ার আদমদীঘিতে ছিনতাই করে পালানোর সময় গণপিটুনিতে আহত শাহাদত হোসেন কলম (৩০) পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালে হাতকড়াসহ পালিয়ে যান। প্রায় ৩৩ ঘণ্টা পর ফের গ্রেফতার হয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) রাত সোয়া ১০টার দিকে নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার লেহেন্দা গ্রামে তার স্ত্রীর বড় বোনের মেয়ের (ভাগনি) শ্বশুরবাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর আগে কলম বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ হেফাজত থেকে পালিয়ে যান।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতাল থেকে হাতকড়াসহ পালানো আসামি কলম নিয়ামতপুর লেহেন্দা গ্রামে ভাগনির শ্বশুরবাড়িতে আত্মগোপনে ছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আদমদীঘি-দুপচাঁচিয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজরান রউফ ও আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মোস্তাফিজুর রহমান সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে শুক্রবার রাত সোয়া ১০টার দিকে সেখানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করেন। এসময় হাতকড়াও উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ আরও জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে জয়পুরহাটের তিলকপুর বাজারের এক বিকাশ এজেন্টের টাকাসহ ব্যাগ ছিনতাই করে মোটরসাইকেলে করে পালাচ্ছিলেন তিনজন। এ সময় বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার আমইল গ্রামে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে শাহাদত হোসেন কলম এবং রাজু পালোয়ানকে আটক করে গণপিটুনি দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা। এছাড়া আরেক সহযোগীকেও জনতা আটক করে। একপর্যায়ে তিনজনকে পিটুনির পর রাজুর পায়ের রগ কর্তন করা হয়। পরে পুলিশ তিনজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।

আহত রাজু পালোয়ান, কলম ও বাঁধন আদমদীঘির ছাতিয়ানগ্রাম ইউপির চৌধুরীপাড়ার বাসিন্দা। তাদের মধ্যে রাজু ও কলমকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং বাঁধনকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানায় ভুক্তভোগী বিকাশ এজেন্ট আব্দুল্লাহ আল ইমরান বাদী হয়ে ওই তিনজনের নামে একটি মামলা করেন।

এদিকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে বগুড়া পুলিশ লাইনসের রিজার্ভ পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মফিজুল ও কনস্টেবল জাকিরুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া ও ট্রাফিক) সুমন রঞ্জন সরকার।

তিনি জানান, এ ঘটনার তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. মোস্তফা মঞ্জুরকে প্রধান করে একটি বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

আদমদীঘি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আসামি কলম ওই হাসপাতালে সার্জারি বিভাগে ভর্তি ছিলেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন কলম বাথরুমে যাওয়ার কথা বলে হাতকড়া পরা অবস্থায় কৌশলে পালিয়ে যান। তিনি পুলিশি হেফাজত থেকে পালানোর ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের হয়েছে। শনিবার সকালে তাকে বগুড়া সদর থানায় সোপর্দ করা হবে।

এফএ/এমএস