অর্থনীতি

একক গ্রাহক ঋণসীমা বাড়ানোর দাবি শীর্ষ ব্যবসায়ীদের

ব্যাংকের একক গ্রাহকের ঋণসীমা ২৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।

Advertisement

রোববার (১২ জানুয়ারি) দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরের কাছে এসব দাবি জানান শীর্ষ ব্যবসায়ীরা।

বর্তমানে একটি ব্যাংক ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে একজন গ্রাহককে মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। এর আগে সীমা ৩৫ শতাংশ ছিল, পরিবর্তন করে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছিল ২০২২ সালে। পাশাপাশি বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এনে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধাসহ ঋণ থেকে প্রস্থান-সংক্রান্ত নীতিমালা (এক্সিট পলিসি) প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তারা।

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন। এ সময় বিজিএমইএ’র প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন, বিসিআই’র পরিচালক ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, এলএফএমইবি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল হাসান সোইল, রাভিডার সভাপতি আব্দুল হক, বিসিএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মইনুল ইসলাম স্বপন, সিটি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাসান, কোকাকোলা বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাদাপ আহমেদ, বিসিআই’র সিনিয়র সহ-সভাপতি প্রিতি চক্রবর্তী, সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Advertisement

আরও পড়ুন গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত শিল্প ধ্বংসের চক্রান্ত: বিপিজিএমইএ

গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক শেষে আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, একসঙ্গে ঋণের সুদহার বাড়ানো, গ্যাসের দাম বাড়ানো, বেতন বাড়ানো, প্রণোদনা দেন- এভাবে ব্যবসা চালানো কঠিন। কোনো দেশে এমনটা নেই। এজন্য আমরা চাই বড় শিল্পের জন্য এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১২ বছরের ঋণ সুবিধা এবং ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে পুনঃতফসিলের সুযোগ রাখা হোক। ছোট শিল্পের জন্য এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১৫ বছরের ঋণ সুবিধা চাই, যেখানে এক শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে পুনঃতফসিলের সুবিধা থাকবে। এজন্য পৃথক সার্কুলার দিতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মর্টগেজ সম্পদ বিক্রির জন্য অনুমোদন নিতে হবে। ব্যাংকের একক গ্রাহকের ঋণসীমা আগের অবস্থানে নেওয়ার দাবি জানাই। একটি ব্যাংক বর্তমানে ফান্ডেড ও নন-ফান্ডেড মিলিয়ে একজন গ্রাহককে মোট মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। এর আগে এ সীমা ৩৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও তা পরিবর্তন করা হয়েছিল। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন, বিশেষ করে এলসির (ঋণপত্র) ক্ষেত্রে।

তিনি জানান, নগদ প্রণোদনার জন্য যে কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানের কাগজপত্র জমা দিতে ন্যূনতম ৯ থেকে ১২ মাস সময় লাগে, এরপর বিতরণ করতে ৮ থেকে ১২ মাস সময় লাগে। এ সময় নামিয়ে আনতে হবে ২ থেকে ৩ মাসের মধ্যে। ব্যাংক সুদের হার ৯ থেকে ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা, যে সংকট সমাধান করা অসম্ভব। এ সমস্যা নিরসনের জন্য জোর দাবি জানাই। কোনো উৎপাদনমুখী শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য সুদহার কমানোর দাবি জানিয়েছি। দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের কথা জানিয়েছি, দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নের জন্য একটি প্রক্রিয়া খুঁজে বের করার জন্য আমরা বাংলাদেশ ব্যাংককে বলেছি।

পারভেজ চৌধুরী বলেন, আমাদের একটা এক্সিট পলিসি দরকার। হেরে যাওয়া থেকে অন্তত মানসম্মান নিয়ে ব্যবসা করে যেতে চাই। এ নিয়ে আমাদের জোর দাবি ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংকও এটা নিয়ে কাজ করছে। ঋণখেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করার যে শর্ত ঠিক করা হয়েছে, তা শিথিল করার দাবি জানাই। গ্রাহক ছয় মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ না করলে খেলাপি হবে, এটাকে অন্তত ৯ মাসে নিয়ে যাওয়ার দাবি করেছি। দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি না হলে শিল্প সার্ভাইভ করতে পারবে না। শিল্পে এলসি খোলায় এখনো জটিলতা রয়েছে। যে রিফর্ম কমিটি গঠন করা হয়েছে, আমরা সেখানে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি রাখার কথা বলেছি। সবকিছুতে খরচ বাড়লে শিল্পের গ্রোথ কীভাবে হবে? ললিপপ দিয়ে শিল্প চলে না, এজন্য সাপোর্ট লাগে। অর্থনীতির স্বার্থে বিভিন্ন দেশের শিল্প এগিয়ে নিতে এ ব্যবস্থা রাখা হয়।

Advertisement

ইএআর/ইএ/জিকেএস