সাহিত্য

শাদমান শরীফের তিনটি কবিতা

ডোম

Advertisement

মাথার ওপর ঝুলে থাকা পাখার দিকে তাকিয়েআমার লুপ্ত অতীত বলে দেয় মর্গের ডোমকীভাবে কপালে আঘাত পেয়েছিলাম তা আমারবুকের পাঁজর কাটতেই নাকি বেরিয়ে এসেছে।

শ্যেন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি তার দিকে বলছে সে, আমিও তোমার মতোই ছিলাম একদিন ঠিকএ বেডে জীবন্ত শবদেহে।

বৃদ্ধ ডোমের সাথে চা-পানির আলাপ জমে দীর্ঘক্ষণক্রমাগত বলে যাচ্ছে সে আর আমার তাজা দেহকেটে আলাদা করে ভেতর থেকে বের করছে কলিজাআমি টের পেয়ে গেছি জেনে লোকটি দাঁত কেলিয়ে হাসছেবিদ্ঘুটে তার চেহারা আর কপালভর্তি চোখ আমাকে ভয় পাইয়ে দেয়।

Advertisement

এর চেয়ে বিনাশ্রমে কারাদণ্ড হলে অনেক ভালো হতোআমার চোখে জল, ডোম বললেন—মৃত মানুষের চোখে অশ্রু জমে না, জানো তো?

****

ক্লান্ত বিছানায় রাখো পিঠ

পথের ধুলো আমার পায়ে শেকল পরিয়ে দেয়যেন অযাচিত আর্তনাদে ক্রোধে ফেটে যাচ্ছে তার যিশুজীবনহাতের কলম বিশ্বাস করে না আমাকেঅল্প অল্প করে জীবনের ইতি ঘটছে ব্যর্থতার চাকায়।

Advertisement

কে জানতো পুরোনো স্মৃতির পাতা ইতিহাস হবেশতবর্ষী বটমূলে জড়ানো ছায়ার রং কালো, আরশূন্য ছায়ায় নিরর্থক প্রশ্ন আমাকে বারবার অভিযোগ করে

কামনার জমিনে ধর্ষণের দুর্গন্ধ জারজ বীর্যে ফসলের আরাধ্য অভিসারে মেনে নিয়েছি ভবিষ্যৎ

তোমার স্তনে মুখ রেখে চুষে নিই বাঁচার আস্বাদতুমি ক্লান্ত বিছানায় পিঠ রাখো আরেকবার। ****

তোমাকেই পাঠ করি

তুমি চলে গেলে ঘরমুখী বাদুড়েরা বসন্ত বিলাপেমাতিয়ে তোলে শৈশবের বাগানবাড়িউড়ে আসে চোখের দেওয়ালে কতক কুয়াশারাত্রির গভীরে পাখিগুলো লেলিয়ে দিয়েকুকুরেরা নেচে ওঠে ল্যাম্পপোস্টেনিত্যরসদ বিলবোর্ডে তুমি হিসাব কষোসবশেষে খতিয়ান করো শূন্যের খাতায়।

তুমি কি আগের মতো পথের বাঁকে অঙ্ক বানাও? সমূহ জাবেদার করণিক ভুলেএলোমেলো করো বাৎসরিক প্রেমের রশিদ?

ভালো লাগা দিনে বিদ্যালয়ের পাঠে চুকে যাকতোমাকেই পাঠ করি জীবনপাতায়।

এসইউ/জিকেএস