সাহিত্য

ধূসর নীল কুয়াশা এবং অন্য কবিতা

অনিন্দ্য নূর

Advertisement

ধূসর নীল কুয়াশা

এই বিভ্রম আদিম বাংলার জনপদে—চোখে চোখে প্রেমার্দ্র অন্ধকার নিয়েহিম শিশিরের কী অদ্ভুত সূর্যোদয়—মাধবী রাতভর—ওরা রক্ত ঘামের ফেরি শেষেশতাব্দীর ক্ষুধার্ত—লাল সূর্যের পরোয়ানা নিয়েশিরদাঁড়া হয়ে দাঁড়ায়—উদ্ভিদের মতো।শীর্ণ বনো কঙ্কালসার শরীরে গড়েরক্ত-মাংসের—প্রতিরোধের শীতল মঞ্জিল।

মহাকাল বয়—আচ্ছাদিত হৃদ-বৃন্তের নিঃশ্বাসে—নিকষ নতুন আলোয়—প্রাণ স্থবির হয়বুক-মুখ অবধি উগরে আসে জীবনের লেনদেন।ইতিহাস থেকে নিহত বর্ণগুলো বিদ্রোহ করেখাদ্যভান্ডারে; কিংবা দুর্মর ভাঙে সভ্যতার সোপান।শুধু কুয়াশার মতো—আব্রুহীন দৃষ্টি মলিন হয় প্রচণ্ড।

Advertisement

****

ফেরারী চিরকুট

আমার ফেরারী দিনগুলোর চিরকুটে—তোমার বয়োবৃদ্ধ ডাকবাক্স ভরে গেছে।পার্থিব গল্পের সমাধির চত্বরে—সহস্র উপন্যাসেরক্ষত-বিক্ষত লাইনগুলো নগ্ন বিদ্রোহ করেযেন ছিনিয়ে নেবে—নতুন জীবনের উপসংহার অধ্যায়গুলো।কোটি বছরের মৌনতার নীল বিষে জর্জরিতনক্ষত্রগুলো—নিঃসঙ্গতার বিষ উগরে দেয়।অন্ধকারে বনোল্লাসে পাপে কাঁপে বৃক্ষরাজি।নীল আকাশের যন্ত্রণা মোড়ানো বিছানায়কাতরায় একেকটা জীবন্ত পাপাত্মার মাংসপিণ্ড।চোখে তার এক রাজ্যের মদিরার সর্বনাশা নেশাহৃদয়ে পঙ্কিল সন্ন্যাসিক শয়তানের উপাখ্যান। ‘আহ জীবন তবুও চলে যায় বিধাতার আরাধ্য অনুকম্পায়’চারিদিকে মহাসমুদ্র ডেউয়ের মতোআজানের পবিত্র ধ্বনি আছড়ে পড়ে—অন্দর থেকে অন্তরেআমরা আগুন পাখির ডানা নিয়ে আদিমযাযাবর শামুকের মতো গুটিয়ে নিই জীবন।জীবনের অধ্যায় থেকে অধ্যায় শুধুই নষ্ট হচ্ছেঅলৌকিক নিয়ামতের অফুরন্ত ভান্ডার।

****

Advertisement

না ফেরার ডানা

তোমার প্রতি ফেরার দিনগুলো আর নেই—এই প্রবীণ চশমার ফাঁকে উড়ে গেছে রঙিন প্রজাপতি;কোথায় পাবো তারে! আঁধারে নাকিতোমার অলিখিত সত্তার ভেতর।মরীচিকা প্রজাপতির ডানায় তোমার চুম্বনআর আমার মৃত্যুর চিহ্ন আঁকা আছে।অনন্ত নৈঃশব্দে তোমার ছায়ামূর্তি দেখেজন্মাবধি শুধু ভুলের ভেতরই রয়ে গেলাম।ভেতরে ভেতরে এক শূন্য সমীকরণেআত্মমগ্ন পৃথিবী কিংবা আমি; অবশেষেদিবস আর রজনীর দু’টি ডানায় ধাবিত হচ্ছি—বিমোহিত অনন্তকালের তরে।

এসইউ/