তথ্যপ্রযুক্তি

ইমোজি নিয়ে বিতর্কে অ্যাপল

সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের মধ্যে ইমোজি বেশ জনপ্রিয়। মেসেজ রিঅ্যাকশনের জন্য কিংবা নিজের ভাব প্রকাশে দীর্ঘ চ্যাটের বদলে একটি ইমোজিই যথেষ্ট।

Advertisement

প্রযুক্তি-নির্ভর দুনিয়ায় ইমোজি আমাদের জীবনের সঙ্গে মিশে গিয়েছে। মান-অভিমান, হাসি-কান্না, রাগ, খুনসুটি, ভালোবাসা, দুঃখ-মনের ভাগ প্রকাশে ইমোজিই প্রথম পছন্দ সবার।

আর সেই ইমোজিই অপর প্রান্তের মানুষটার কাছে সঠিক সময়ে, সঠিক ভাবের বহিঃপ্রকাশ করে দেয়। এর এত বেশি জনপ্রিয়তার কারণেই নতুন নতুন ইমোজি যোগ করছে বিভিন্ন সংস্থা।

তবে সেই ইমোজির জন্যই এবার বিতর্কের মুখে প্রযুক্তি পণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল। গত বৃহস্পতিবার আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য আইওএস ১৫.৪ (iOS 15.4) আপডেট নিয়ে এসেছে সংস্থাটি।

Advertisement

আর সেই আপডেটের পর কিছু নতুন ইমোজিও পেয়ে যাবেন ইউজাররা। সেই তালিকায় রয়েছে একটি অন্তঃসত্ত্বা পুরুষ ও একটি অন্তঃসত্ত্বা ব্যক্তির ইমোজি, যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক দানা বেঁধেছে।

অ্যাপল খুব সম্প্রতি এই ধরনের ইমোজি দিলেও তা কিন্তু নতুন নয়। ২০২১ সালেই একটি আপডেটের মাধ্যমে ইমোজি এনসাইক্লোপিডিয়া, ইমোজিপিডিয়া এই প্রেগনেন্ট ইমোজি বা অন্তঃসত্ত্বা ইমোজি নিয়ে এসেছিল। ইমোজিপিডিয়ার সেই আপডেটে ছিল অন্তঃসত্ত্বা ব্যক্তি ও পুরুষের ইমোজি।

অ্যাপল যেহেতু একটি ব্র্যান্ড, তার একাধিক ডিভাইস একটা বৃহদংশের মানুষজন ব্যবহার করেন, সেই কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বহু মানুষ নির্দিষ্ট করে এই দুটি ইমোজিরই ঘোরতর বিরোধিতা করেছেন। ট্যুইটারেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন অনেকে। সেই সঙ্গে আবার অনেকে তা নিয়ে হাসিখোরাকিও করেছেন।

সংবাদমাধ্যম ফক্স বিজনেস-এর একটি রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, সে দেশের কিছু সংস্কৃতি পরায়ণ মানুষ যুক্তি দিয়েছেন, বায়োলজিক্যাল দিক থেকে সবাইকে এই ইমোজির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করার ফলে নারীকে পুরুষদের থেকে আলাদা ভাবার বিষয়টি আরও মাথাচারা দিতে পারে। সেই সঙ্গেই আবার নারীকে অমানবিকও করে তোলে এই ধরনের ইমোজি।

Advertisement

গত বছর সেপ্টেম্বরে ইমোজিপিডিয়া যখন অন্তঃসত্ত্বা পুরুষ ও ব্যক্তির ইমোজি নিয়ে হাজির হয়েছিল, তখনও বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। সেই সময় ইমোজিপিডিয়ার তরফ থেকে একটি ব্লগপোস্টে লেখা হয়েছিল, “ট্রান্স পুরুষ, নন-বাইনারি ব্যক্তি বা ছোট চুলের নারীদের দ্বারাও প্রতিনিধিত্বের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এই ইমোজিগুলো।

যদিও একথা অবশ্যই বলতে হয় যে, এই ইমোজিগুলোর ব্যবহার কেবল মাত্র ওই গোষ্ঠীগুলোর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়।

ইমোজিপিডিয়ার জেন সোলোমন লিখেছেন, ‘অত্যাধিক খাবার পর যেমন আমাদের পেট ফুলে যায়, যে অবস্থাটাকে আমরা ফুড বেবি বলে থাকি, সেই অবস্থা বোঝাতেও ব্যবহার করা যেতে পারে এই ইমোজি দুটি।’

নতুন এই দুটি প্রেগনেন্ট ইমোজির মোট পাঁচটি স্কিন টোন রয়েছে। যেরকম ভাবে আমরা হোয়াটসঅ্যাপে লাইক পাঠানোর সময় একাধিক স্কিন টোন দেখতে পাই, এ ক্ষেত্রেও তাই। ইমোজি সিলেক্ট করার সময় ইউজাররা আঙুল দিয়ে সেটিকে হোল্ড করে রাখলেই তার বিভিন্ন স্কিন টোন দেখতে পাবেন।

এই আইওএস ১৫.৪ আপডেটে মোট ৩৭টি ইমোজি যোগ করেছে অ্যাপল। তার সঙ্গে রয়েছে ৭৫টি স্কিন টোন। সব মিলিয়ে এই আপডেটে মোট ১১২টি ক্যারেক্টার যোগ করেছে কুপার্টিনোর কোম্পানিটি।

তবে শুধু যে অন্তঃসত্ত্বা পুরুষের ইমোজি নিয়ে বিতর্ক হয়েছে এমনটা নয়। এই ৩৭টি ইমোজির মধ্যে রয়েছে একটি ঠোঁট কামড়ানোর ইমোজিও। যা নিয়ে ট্যুইটারে অনেকেই বলেছেন, খুবই নোংরা এবং নিম্নরুচির একটি ইমোজি।

তবে এবারই প্রথম নয়, অ্যাপল এর আগেও ইমোজি নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিল। ২০২০ সালে আইওএস ১৪.২ বিটা আপেডেটে একটি জেন্ডার নিউট্রাল সান্তা ক্লজের ইমোজি নিয়ে এসেছিল, যা নিয়ে রক্ষণশীল সমালোচকরা ইমোজি নির্মাতাদের কাঠগড়ায় তুলে ক্রিসমাসের উপরে একপ্রকার যুদ্ধই লাগিয়ে দিয়েছিলেন!

সূত্র: ডেইলি মেইল

কেএসকে/এমএস