দেশজুড়ে

এক ইনজেকশনে ৪৭ দিন অজ্ঞান ছাত্রী, ডাক্তার-নার্স কারাগারে

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মরিয়ম সুলতানা মুন্নিকে ভুল ইনজেকশন পুশ করার ঘটনায় চিকিৎসক ও নার্সকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

Advertisement

এ ঘটনায় জড়িত চিকিৎসক তপন কুমার মন্ডল ও নার্স কুহেলিকা রোববার আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে জামিন আবেদন বাতিল করে তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়।

এদিকে, ৪৭ দিন ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকলেও জ্ঞান ফেরেনি মরিয়ম সুলতানা মুন্নির। এ ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেছে পরিবার।

অপরদিকে উচ্চ আদালত থেকে নেয়া জামিনের সময় শেষ হওয়ায় রোববার গোপালগঞ্জ সদর আমলি আদালতের বিচারক মো. হুমায়ুন কবীরের আদালতে হাজির হয়ে জামিন চান তারা। শুনানি শেষে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। তবে এদিন আদালতে হাজির হননি অভিযুক্ত আরেক নার্স শাহনাজ পারভীন।

Advertisement

অভিযুক্ত চিকিৎসক ও দুই নার্স এর আগে হাইকোর্ট থেকে আট সপ্তাহের জামিন নেন। জামিনের সময় শেষ হওয়ায় চিকিৎসক তপন কুমার মন্ডল ও নার্স কুহেলিকা রোববার নিম্ন আদালতে হাজির হন।

জানা যায়, মরিয়ম সুলতানা মুন্নি পিত্তথলিজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক আব্দুল মতিনের তত্ত্বাবধানে একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. তপন মন্ডলের কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন মুন্নি।

গত ২০ মে হাসপাতালে মুন্নির পোস্ট এনেস্থেটিক একটিভিটি সম্পন্ন করা হয়। ২১ মে সকালে তার অপারেশন করার কথা ছিল। সে অনুযায়ী হাসপাতালের ফিমেল ওয়ার্ডের সিনিয়র স্টাফ নার্স শাহনাজ সকালে রোগীর ফাইল না দেখে গ্যাসট্রাইটিসের ইনজেকশন সারজেলের পরিবর্তে অ্যানেস্থেসিয়ার (অজ্ঞান কারার) ইনজেকশন সারভেক ওই রোগীর শরীরে পুশ করেন। এই ইনজেকশন দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন মুন্নি। তার অবস্থা দ্রুত অবনতির দিকে চলে যাওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে সংশ্লিষ্ট ডাক্তার তাকে খুলনা আবু নাসের হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মুন্নি। তবে এখন পর্যন্ত জ্ঞান ফেরেনি মুন্নির।

এ ঘটনায় হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক মাসুদুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে মুন্নির চাচা জাকির হোসেন বাদী হয়ে গোপালগঞ্জ থানায় চিকিৎসক তপন কুমার মন্ডল ও দুই নার্স শাহনাজ ও কুহেলিকাকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন।

Advertisement

এস এম হুমায়ূন কবীর/এএম/এমএস