হবিগঞ্জের চুনারুঘাট থেকে তেলিয়াপাড়া পর্যন্ত পুরাতন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কটি অনিরাপদ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর যানবাহন ও মানুষের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। আতঙ্কে মানুষ সন্ধ্যার পর থেকেই এ রোডে চলাচল বন্ধ করে দেন। কারণ—আগের তুলনায় বেড়েছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই। এমনকী খুন-খারাবিরও ভয় পেয়ে বসেছে চলাচলকারীদের মনে।
Advertisement
এ সড়কের কয়েক কিলোমিটার পর্যন্ত মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক না থাকায় ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় রাতে ওই সড়কে সতর্কতার সঙ্গে চলাচলের আহ্বান জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুর আলম জানান, এ সড়কটি এমনিতেই নিরিবিলি। বিকেল থেকেই মূলত যানবাহন ও মানুষের চলাচল সীমিত হয়ে পড়ে। রাতে গাড়ি চলাচল একেবারেই কম থাকে। তাছাড়া সড়কটি পাহাড়ি এবং মোবাইলের নেটওয়ার্কও থাকে না।
তিনি আরও বলেন, গাড়ি বন্ধের বিষয়ে আমরা কাউকে বলিনি। কিন্তু জনগণ যাতে নিরাপদে যেতে পারে, সেজন্য রাতে যে দু-একটি গাড়ি যায় সেগুলো একত্রিত করে ঝুঁকিপূর্ণ স্থান পার করে দেওয়া হয়। তাদের পরবর্তী পুলিশ স্টেশনের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।
Advertisement
সরেজমিন জানা যায়, একসময়ের জাকজমকপূর্ণ রাস্তা ছিল জেলার চুনারুঘাট-তেলিয়াপাড়া সড়কটি। এটি ছিল ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক। প্রায় ২০ বছর আগে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক নির্মাণের পর থেকেই এ সড়কটি নীরব হয়ে পড়ে। গাড়ির যাতায়াতও অনেকটা কমে যায়। বর্তমানে সড়কটি শুধু সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান এবং চা বাগানগুলোতে যাতায়াতের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।
চুনারুঘাট এবং মাধবপুরের মানুষজন যাতায়াতের জন্য সড়কটি ব্যবহার করেন। রাতে বালু ও ইটবাহী ট্রাক চলাচল থাকে বেশি। সবমিলিয়ে সড়কটি নীরব হওয়ায় এখানে চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। এ অবস্থায় ওই সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষের মনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, চা বাগানবেষ্টিত এ সড়কের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই সড়কটি রাতে চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
সাতছড়ি এলাকার বাসিন্দা রাজন সাঁওতাল বলেন, আগে অনেক রাতেও আমরা এ সড়কে যাতায়াত করতে পারতাম। কিন্তু এখন সন্ধ্যা ৭টার পরেই আতঙ্ক থাকে যে, নিরাপদে বাসায় ফিরতে পারবো কি-না। মোটরসাইকেলতো নিয়েই যায়। জীবনের নিরাপত্তাও নেই। আমরা আতঙ্কে আছি। পুলিশের টহল বাড়ানোর দাবি জানান তিনি।
Advertisement
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর নেতা স্বপন সাঁওতাল বলেন, মানুষের চলাচলে নিরাপত্তা নেই। সন্ধ্যা হলেই ছিনতাইকারীরা লুটপাট করে। এ কারণে মানুষ এ রাস্তা এখন নিরাপদ মনে করে না। বিশেষ করে মেয়েদের চলাচল একেবারেই অনিরাপদ।
সৈয়দ এখলাছুর রহমান খোকন/এসআর/এএসএম