দেশের ঐতিহ্যবাহী হল মধুমিতার মালিক ইফতেখার-উদ্দিন নওশাদ। তার বাবা একজন শিল্পপতি ছিলেন। তাদের একটি ক্যামিকেল কারখানাও ছিলো। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বলাকা সিনেমা হলে তখন ‘মহানগর’ ছবিটি মুক্তি পেয়েছিলো।
Advertisement
ছবিটি দেখতে চেয়েও তিনি তার টিকিট সংগ্রহ করতে পারেননি। সেই জিদ নিয়েই ১৯৬৭ সালে তিনি নির্মাণ করেছিলেন সিনেমা হল। নওশাদ জানান, তার পিতা সিনেমার লোক না হলেও তিনি সিনেমা দেখতে ভালোবাসতেন। তিনি এমন সিনেমা-পগল ছিলেন যে ছবি দেখতে কলকাতায়ও চলে যেতেন।
সেই সিনেমা পাগল মানুষটির হাত ধরেই ‘মধুমিতা’ সিনেমার যাত্রা। পরবর্তীতে মধুমিতা মুভিজের নামে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও যাত্রা করে। দেশের সিনেমার প্রচার ও প্রসারে এই হল ও প্রযোজনা পরিবারে ভূমিকা অনেক।
এবার সেই পরিবারের আয়োজনে মধুমিতা হলে শুরু হচ্ছে সাত দিনব্যাপী সিনেমা সপ্তাহ। এই সিনেমা সপ্তাহের আয়োজন করছে ইফতেখার-উদ্দিন নওশাদের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘মধুমিতা মুভিজ’।
Advertisement
তিনি জানালেন, আগামী ১৮ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই আয়োজনের সিনেমা প্রদর্শনী।
প্রতিদিন প্রদর্শিত হবে পুরনো দিনের একটি করে সিনেমা। তারমধ্যে ১৮ জানুয়ারি শুক্রবার দেখানো হবে ‘নিশান’ চলচ্চিত্রটি। ১৯৮৪ সালে ছবিটি মুক্তি পায় মধুমিতা মুভিজের ব্যানারে। এই ছবির নির্মাতা প্রয়াত ইবনে মিজান। এতে কালে খাঁ চরিত্রে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য স্মরণীয় হয়ে আছেন অভিনেতা জাভেদ। এতে আরও অভিনয় করেছেন ওয়াসিম, ববিতা, সুচরিতা, মিজু আহমেদ প্রমুখ।
১৯ জানুয়ারি দেখানো হবে ‘সুজন সখী’ সিনেমাটি। জনতা চিত্র প্রকল্পের ব্যানারে ইফতেখার-উদ্দিন নওশাদ প্রযোজিত এই ছবিটির কাহিনীকার আমজাদ হোসেন ও চিত্রনাট্য-পরিচালনা করেছেন খান আতাউর রহমান। নায়ক ফারুক ও নায়িকা কবরী জুটির অন্যতম সফল একটি চলচ্চিত্র ‘সুজন সখী’।
২০ জানুয়ারি প্রদর্শিত হবে সালমান শাহ ও শাবনূর জুটির সিনেমা ‘চাওয়া থেকে পাওয়া’। ১৯৯৬ সালের ২০ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ছবিটির পরিচালক এম এম সরকার। এতে আরও অভিনয় করেছেন ডলি জহুর, দিলদার, আহমেদ শরীফ, প্রবীর মিত্র প্রমুখ।
Advertisement
২১ জানুয়ারি দেখানো হবে ‘দূরদেশ’ ছবিটি। ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও কানাডার সম্মিলিত উদ্যোগে আলোচিত দূরদেশ ছবিটি মুক্তি পায়। বাংলাদেশের প্রখ্যাত পরিচালক এহতেশাম এবং ভারতের অমরিশ পরিচালনা করেছিলেন বহুল প্রশংসিত এ ছবিটি।
বাংলাদেশ থেকে এ ছবির প্রযোজক ছিল মধুমিতা মুভিজ। দূরদেশ ছবিতে নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেন বাংলাদেশের দর্শকনন্দিত নায়িকা ববিতা। ওই সময়ে বলিউডের চারজন সুপারস্টার অভিনয় করেছিলেন এই ছবিতে। ভারতের শশী কাপুর, শর্মিলা ঠাকুর, রাজ বব্বর এবং পারভিন ববি- এই চার শিল্পীর সঙ্গে বাংলাদেশের সুপারস্টার ববিতা ও পাকিস্তানের সুপার স্টার নাদিম ছিলেন বাড়তি আকর্ষণ।
২২ জানুয়ারি প্রদর্শিত হবে ‘মিস লংকা’ চলচ্চিত্র। বাংলাদেশ-পাকিস্তানের যৌথ প্রযোজনায় ‘মিস লংকা’ মুক্তি পায় ১৯৮৫ সালে। এ সিনেমায় নাম ভূমিকায় অভিনয় করে ববিতা কুড়ান প্রশংসা। ছবিটির বাংলাদেশি পরিচালক ইকবাল আখতার।
২৩ জানুয়ারি প্রদর্শিত হবে মধুমিতা মুভিজের আরও একটি ছবি ‘এক মুঠো ভাত’। এটি নির্মাণ করেছেন ইবনে মিজান। এতে অভিনয় করেছেন চিরসবুজ নায়ক জাফর ইকবাল। পরিচালক ইবনে মিজান রাজেশ খান্না অভিনীত ‘রুটি’ ছবির আদলে ‘এক মুঠো ভাত’ তৈরি করেন যেখানে রাজেশ খান্নার চরিত্রটি করেন জাফর ইকবাল। ১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়র এই ছবির নায়িকা ববিতা।
সর্বশেষ ২৪ জানুয়ারি শুক্রবার দেখানো হবে ‘নাচের পুতুল’ সিনেমাটি। রাজ্জাক-শবনম জুটির এই চলচ্চিত্রটির নির্মাতা অশোক ঘোষ। ১৯৭১ সালে এটি মুক্তি দেয়া হয়।
এলএ/এমকেএইচ