মতামত

মশাবাহিত রোগ থেকে বাঁচান

 

রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক। এডিস মশার কামড়ে ডেঙ্গু হয়। ডেঙ্গুর প্রকোপ বন্ধ করতে হলে এডিস মশার উৎপাত বন্ধ করতে হবে সবার আগে।

Advertisement

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন বলেছেন, গত দুই-তিন বছরের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক বেড়েছ, তবে তা উদ্বেগজনক নয়। ডেঙ্গু নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। গত সোমবার রাজধানীর ইস্কাটনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে এডিস মশার লার্ভা বা প্রজননস্থল শনাক্তকরণ ও ধ্বংসে বিশেষ এক ক্র্যাশ প্রোগ্রামের উদ্বোধনকালে মেয়র এ সব কথা বলেন। সাঈদ খোকন বলেন, বিগত ২-৩ বছরের তুলনায় ডেঙ্গুর প্রবনতা সামান্য বেড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি হলেও উদ্বোগ জনক বা আতঙ্কিত হওয়ার কিছুই নেই। ডেঙ্গু আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মেয়র আরো বলেন, ‘আমরা প্রথম পর্যায়ে প্রায় ১৫ হাজার বাসা বাড়িতে ডেঙ্গু মশার লার্ভা ধ্বংস করেছি। দ্বিতীয় পর্যায়ে ধানমন্ডি ও কলাবাগান এলাকায় ১৭ হাজার বাসাবাড়িতে লার্ভা ধ্বংস করেছি। এই এলাকার প্রায় ৩৭ শতাংশ বাড়িতে ডেঙ্গু মশার লার্ভা পাওয়া গেছে।’

বাস্তবতা হচ্ছে মশার উৎপাতে জনজীবন অতিষ্ঠ। কিন্তু বিপুল পরিমাণ বরাদ্দ থাকলেও সে অনুযায়ী মশক নিধনে নেই দুই সিটি কর্পোরেশেনের তেমন কোনো কার্যক্রম। তাই মশা নিয়ে দুর্ভোগ বাড়ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে মশাবাহিত নানা রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও। তাই মশক নিধনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নগরবাসীরা বলছেন অন্য সময়ের চেয়ে মশার উপদ্রব খুব বেড়েছে। দিনেও মশার হাত থেকে রেহাই নেই। অন্যদিকে সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গেসঙ্গেই দরজা-জানালা সব বন্ধ করে বদ্ধভাবে থাকতে হয়। অথচ মশক নিধনে দুই সিটি কর্পোরেশেনের নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করার কথা।

এ সংক্রান্ত রিপোর্ট থেকে জানা যায়- মশা নিধনে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনের কার্যকরী পদক্ষেপ প্রশ্নবিদ্ধ। প্রতিদিন সকাল-বিকেল দুবেলা মশা নিধনে বিষাক্ত কীটনাশক ছিটানোর কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। মশক নিধনকারী কর্মীদের দেখা পাওয়া যায় না। মশা শুধু দুর্ভোগই সৃষ্টি করেনা। ডেঙ্গু, জিকা ভাইরাসহ বিভিন্ন মরণঘাতি রোগের জীবাণুও বহন করে মশা। এজন্য মশার উপদ্রব বন্ধ করতে হবে। বিশেষ করে এডিস মশার সংখ্যা যাতে বৃদ্ধি না পায় এ লক্ষ্যে সিটি কর্পোরেশন সরকার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, গণমাধ্যমসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। মানুষজনকে সচেতন করে তুলতে হবে।

Advertisement

এ বিষয়ে নাগরিক সচেতনতাও গুরুত্বপূর্ণ। বাসাবাড়ির আঙিনা, ফুলের টব, ছাদের বাগান, ভবনের চৌবাচ্চা, এসি-ফ্রিজ থেকে জমা পানিতে মশার বংশ বিস্তার বেশি ঘটে। এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নানা সময় মশক নিধনের নানা প্রতিশ্রুতি দিলেও প্রত্যাশা অনুযায়ী কাজ হয় না। দিন দিন রাজধানীতে মশার উৎপাত বেড়েই চলেছে। মশক নিধনে তেমন কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ছে না। অথচ এ জন্য বাজেট রয়েছে। রয়েছে দায়িত্বপ্রাপ্ত লোক। মশক নিধন নিয়ে কোনো ধরনের অবহেলা বা শৈথিল্য মেনে নেওয়া যায় না।

এইচআর/এমএস