পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ঘরমুখো মানুষের ঈদের বিশেষ টিকিট কেনার চাপ নেই রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে। তাই কাউন্টারের ভিতরে বাইরে পরিবহন শ্রমিকরা যাত্রীদের ডাকাডাকি করেও টিকিট বিক্রি করতে পারছেন না। তবে বিশেষ কয়েকটি পরিবহনে ঈদের বিশেষ টিকিট কেনার চাপ রয়েছে। বুধবার (৮ আগস্ট) গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
Advertisement
ঈদুল আজহার সম্ভাব্য দিন ২২ আগস্ট ধরে আগামী ১৭ ও ১৮ আগস্ট সাপ্তাহিক সরকারি ছুটির পর ১৯ ও ২০ আগস্ট কার্যদিবস রয়েছে। পরিবহন সংশ্লিষ্টদের মতে, এই দুইদিনের ছুটি নিশ্চিত হবার পর বাসের টিকিটের জন্য যাত্রীদের ঢল নামবে। যারা পরিবারকে আগে পাঠিয়ে দিতে চাচ্ছেন, তারা এখন আসছেন, তবে তাদের সংখ্যাও খুব কম।
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে গত রোববার (৫ আগস্ট) বাসের অগ্রিম টিকিট শুরু হলেও পুরোদমে শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (৭ আগস্ট)। বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা গেছে আগামী ১৮ থেকে ২১ আগস্ট পর্যন্ত অগ্রিম টিকিটের চাহিদা বেশি। তাই হানিফ কাউন্টারে এক ঘণ্টা দাঁড়িয়েও সৈয়দপুর যাওয়ার টিকিট পাচ্ছে না মঞ্জুরুল ইসলাম। তারা চার বন্ধু গ্রামের বাড়িতে ঈদ করার জন্য আগামী ১৮ আগস্ট যেতে চাইলেও হানিফ কাউন্টারে এসে সেদিনের টিকিট পাননি। সব টিকিট বিক্রি হয়ে যাওয়ায় তারা কবে যাবেন তা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বে আছেন।
হানিফ কাউন্টারের ম্যানেজার শফিকুল ইসাম বাবু জাগো নিউজকে বলেন, মঙ্গলবার থেকে আমাদের ঈদের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। কাউন্টারে আগের মতো ভিড় হয় না। কারণ যেকোনো কাউন্টার থেকেই যেকোনো রুটের টিকিট কেনা যায়। তাই সবার গাবতলী বা সায়দাবাদ যাওয়া লাগে না। এছাড়া অনলাইনে ঘরে বসেই মানুষ টিকিট কিনতে পারে।
Advertisement
তিনি বলেন, এবার আগামী ১৮ থেকে ২১ আগস্টের টিকিটের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ২০ তারিখের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সন্ধ্য ৬টা পর্যন্ত অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে যাত্রীদের চাপ কম থাকায় ঈদের অগ্রিম টিকিট কেনার ক্ষেত্রে তেমন কোনো ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না। পছন্দসই সিট ও স্বাভাবিক ভাড়ায় টিকিট পেয়ে আনন্দেই আছেন তারা।
মিরপুর থেকে আসা আরিফ হাসান জানান, তারা রাজশাহী যাবেন। বাবা সরকারি কর্মকর্তা, তিনি ঈদের ছুটি শুরু হলে পরে যাবেন। তাই পরিবারের বাকি সদস্যদের জন্য আগামী ১৮ তারিখের অগ্রিম টিকিট কিনেছেন।
তিনি বলেন, অগ্রিম টিকিটের জন্য লাইনেও দাঁড়াতে হয়নি, ভাড়াও অতিরিক্ত না। ওইদিন রাস্তায় কোনো সমস্যা না হলে বেশ আরামেই হবে ঈদযাত্রা।
Advertisement
গাবতলীতে অপেক্ষারত বেসরকরি চাকরিজীবি ইমদাদুল রহমান জাগো নিউজকে বলেন, গাবতলী আসতেই লোকজন টিকিট কেনার জন্য ডাকাডাকি শুরু করে দিয়েছেন। এটা দেখেই শান্তি পেয়েছি। কারণ এতেই বুঝেছি, চাপ এখনও শুরু হয়নি এবং ভালো সিট পাবো। আমি আগামী ২০ আগস্টের টিকিট কাটবো।
এদিকে সৌখিন পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার সবুজ জাগো নিউজকে বলেন, যাত্রীর চাপ নেই তাই এবার ঈদে বিশেষ টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে না। স্বাভাবিক সময়ে যেভাবে বাস চলে এবার সেভাবেই টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। রাস্তায় এক ধরণের আতংক সৃষ্টি হওয়ায় এবার ঈদে অগ্রিম টিকিট বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি বলেও জানান তিনি।
গাবতলী থেকে খুলনা, চট্টগ্রাম, সিলেট ও উত্তর বঙ্গের বিভিন্ন রুটে অগ্রিম বাসটিকিট মিললেও গোপালগঞ্জ, বরিশাল, দিনাজপুরসহ অপেক্ষাকৃত কম দূরত্বের অগ্রিম টিকিট বিক্রি এখনও শুরু হয়নি। আগামী শুক্রবার (১০ আগস্ট) থেকে এসব রুটের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হবে।
গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার আসিফ জানান, ঈদে আমাদের গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর রুটে যাত্রী পরিপূর্ণ হলেই বাস ছেড়ে যায়। অগ্রিম টিকেটের চাপ থাকে, কিন্তু তুলনামূলক কম। তাই হয়তো মালিকপক্ষ আরও পরে অগ্রিম টিকেট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
এমএইচএম/এমএমজেড/পিআর