বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিকরণের (মানথলি প্যামেন্ট অর্ডারের আওতায়) জন্য অনলাইনে আবেদন চেয়ে বিজ্ঞপ্তি আসছে আগামী সোমবার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি এই আবেদন যাওয়া হবে। বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এমপিও কমিটির সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
Advertisement
এ বিষয়ে এমপিওভুক্তি সংক্রান্ত কমিটির প্রধান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, আগামী সপ্তাহে এমপিওভুক্তির আবেদন কার্যক্রম শুরু হবে। এ সংক্রান্ত সফটওয়্যার তৈরি হয়েছে। আগামী সোমবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।
তিনি বলেন, নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কীভাবে এমপিওভুক্তির আবেদন করবে তার দিকনির্দেশনা বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া থাকবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে কী কী ডকুমেন্টস (প্রমাণপত্র) দিতে হবে তা উল্লেখ থাকবে। আবেদনের জন্য ২০ দিন সময় দেয়া হবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সারাদেশে নন-এমপিওভুক্ত ৫ হাজার ২১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও প্রথম পর্যায়ে মাত্র এক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হবে। তার মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পর্যায়ে ৪০০টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ১০, কলেজ ৭৫, ভোকেশনাল স্কুল ও কলেজ ৩০০, মাদরাসা ১০০ ও বিজনেস ম্যানেজম্যান্ট কলেজ ১১৫টি রয়েছে।
Advertisement
শিক্ষকদের নিয়োগে বয়সসীমা ৩৫ বছর নির্ধারণ করে ইতোমধ্যে এমপিও নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী, ১০০ নম্বরের গ্রেডিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে। তার মধ্যে একাডেমিক স্বীকৃতিতে ২৫ নম্বর (প্রতি দুই বছরের জন্য পাঁচ নম্বর, ১০ বা তার চেয়ে বেশি বয়স এমন প্রতিষ্ঠানের জন্য ২৫ নম্বর), শিক্ষার্থীর সংখ্যার ওপর ২৫ নম্বর (কাম্য সংখ্যার জন্য ১৫ নম্বর, এরপর ১০ শতাংশ বৃদ্ধিতে পাঁচ নম্বর), পরীক্ষার্থীর সংখ্যার জন্য ২৫ নম্বর (কাম্য সংখ্যার ক্ষেত্রে ১৫ ও পরবর্তী প্রতি ১০ জনের জন্য পাঁচ নম্বর), পাবলিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণের জন্য ২৫ নম্বরের (কাম্য হার অর্জনে ১৫ নম্বর ও পরবর্তী প্রতি ১০ শতাংশ পাসে পাঁচ নম্বর) গ্রেডিং করা হবে।
প্রভাষকদের এমপিওভুক্ততির ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক ২৫ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। তবে বিজ্ঞানবিভাগে ১৫ জন শিক্ষার্থী থাকলেও চলবে। আর নতুন জনবল কাঠামোতে সৃষ্ট পদের শিক্ষক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা দেয়া হবে না, কিন্তু নতুন পদে এমপিওভুক্ত করা হবে। নতুন জনবল কাঠামোর বাইরে কর্মরতদের পদ শূন্য হলে নতুন করে নিয়োগ দেয়া যাবে না। এ ক্ষেত্রে, যারা এমপিওভুক্ত নন, কিন্তু বৈধভাবে নিয়োগ পেয়েছেন, তাদের নতুন পদে পদায়ন করতে হবে বলে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়।
আবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে এমপিও টেকনিক্যাল কমিটির প্রধান, বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) মহাপরিচালক মো. ফসিউল্লাহ জাগো নিউজকে বলেন, এমপিওভুক্তির আবেদন গ্রহণে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। বর্তমানে তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘ফরমে ও সফটওয়্যারে এমপিও নীতিমালায় উল্লিখিত চার শর্তের আলোকে বিভিন্ন কলাম তৈরি করা হয়েছে। তাতে প্রতিষ্ঠানের বয়স, শিক্ষার্থী সংখ্যা, পাসের হার, প্রাপ্যতাসহ নানা তথ্য নেয়া হবে। প্রতিষ্ঠানের প্রাথমিক পরিচিতি, ইআইআইএন (পরিচিতি) নম্বর, প্রথম স্বীকৃতির তারিখ, স্বীকৃতি নবায়নের তারিখ ও বোর্ডের চিঠি স্ক্যান করে দেয়ার কলাম থাকবে।’
Advertisement
উল্লেখ্য, এমপিওভুক্তির দাবিতে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের বিপরীত পাশের রাস্তায় আন্দোলন করেন নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীরা। টানা ১৭ দিন ধরে আমরণ অনশন পালন করার পর গতকাল বুধবার জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী শিক্ষক-কর্মচারীদের দাবি আদায়ের আশ্বাস দেন। এই আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেন। আন্দোলন ছেড়ে শিক্ষকরা নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে গেছেন। একই দিন শিক্ষকদের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
এমএইচএম/জেডএ/জেআইএম