দেশজুড়ে

চেয়ারম্যানের টাকা মেরে দিলেন ইউএনও’র অফিস সহকারী

সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে গ্রাম পুলিশ ও ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বারদের ৯ মাসের বেতন ও সম্মানী ভাতার ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ইউএনওর অফিস সহকারী আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে হাসেমের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসক ও দুদক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গ্রাম পুলিশের সদস্যরা।

Advertisement

জানা যায়, চৌহালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে ২০১৭ সালের প্রথমদিকে যোগদানের পর থেকে যমুনার চরাঞ্চল থেকে সেবাগ্রহীতাদের বিভিন্নভাবে হয়রানি ও ইউপি সদস্যদের অফিস ফাইল আটকে রেখে অর্থ হাতিয়ে নেন আবুল হাসেম। সম্প্রতি ৭টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ গ্রাম পুলিশদের ২০১৭-১০১৮ অর্থ বছরের ৯ মাসের সম্মানী ভাতার ২৪ লাখ ৭০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন হাসেম।

এদিকে আত্মসাৎকৃত টাকা ফেরতের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলা নিবার্হী অফিসে উপজেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্য ও গ্রাম পুলিশসহ স্থানীয়রা হাসেমকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে সন্ধ্যার দিকে গ্রাম পুলিশদের যাতায়াত ভাতা বাবদ কিছু টাকা দিয়ে পরবর্তীতে অবশিষ্ট টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অবরুদ্ধ থেকে তাকে মুক্ত করেন ইউএনও।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন গ্রাম পুলিশ বলেন, অফিস সহকারী হাসেম আমাদের ভাতার টাকা দেয়ার কথা বলে বেশ কয়েকবার উৎকোচ নিয়েছেন। এরপর জানতে পারি তিনি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। টাকা ফেরত পেতে তার কাছে বারবার যোগাযোগ করেও কোনো কূলকিনারা না পেয়ে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও দুদকের পাবনা আঞ্চলিক কার্যালয়ে অভিযোগ করা হয়েছে। রোববার সকালে এ বিষয়ে অফিস সহকারী আবুল হাসেম মুঠোফোনে বলেন, কোনো টাকা আত্মসাৎ করা হয়নি, কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তবে গ্রাম পুলিশদের যাতায়াত ভাতা বাবদ কিছু টাকা দেয়া হয়েছে।

Advertisement

তবে বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যন আব্দুল কাহার সিদ্দিকী জানান, অফিস সহকারী হাসেম সম্মানী ভাতা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি কোনো টাকা পয়সা আমাদের দেননি।

এ ব্যাপারে কয়েকজন ইউপি সদস্য বলেন, আমাদের ২ মাসের বৈধ বেতন মাফ করে দিয়েছি। তারপরও অফিস সহকারী আবুল হোসেন ৭ মাসের বেতন দিতে গড়িমসি করছেন। বিষয়টি মিমাংসার জন্য উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনিছুর রহমান চেয়ারম্যানদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। এ ঘটনায় চৌহালী উপজেলা কার্যালয়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আনিছুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

ইউসুফ দেওয়ান রাজু/এফএ/এমএস

Advertisement