‘প্রথমে পাতিলে গরম পানি সিদ্ধ করে নেবেন। তারপর গরম পানিতে চাল ঢেলে একবার বলক (বুদবুদ) উঠতেই চুলা থেকে নামিয়ে মাড় ঢেলে নেবেন। শোনেন ভাই, আতপ চাল কিন্তু খারাপ না। মানুষ রান্না করতে জানে না বলে ঠান্ডা পানিতে চুলায় চড়িয়ে দেয়। তাই ভাত নরম হয়ে যায়।’
Advertisement
সোমবার বেলা ১টায় রাজধানীর নিউমার্কেট পোস্ট অফিসের অদূরে খোলাবাজারে চাল বিক্রি (ওএমএস) করার সময় বিক্রেতা মহিউদ্দিন একজন ক্রেতাকে চাল কিনতে এভাবেই অনুপ্রাণিত করছিলেন।
কিন্তু রান্নার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়েও ওই ক্রেতার কাছে চাল বিক্রি করতে ব্যর্থ হলেন তিনি।
এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে মহিউদ্দিন জানান, সকাল থেকে দু’বস্তা চাল ও দু’বস্তা আটা বিক্রি করেছেন। এবার তার মালিক কাঁঠালবাগান এলাকার ডিলার আতিকুর রহমান দুটি ট্রাকে ওএমএসের চাল-আটা বিক্রি করছেন। কিন্তু এবারের বিক্রি গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।
Advertisement
কী কারণে বিক্রি কম হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মূলত আতপ চালের কারণে বিক্রির পরিমাণ কম। চট্টগ্রাম এলাকার মানুষ ছাড়া অন্য এলাকার মানুষ এ চাল রান্না করার পদ্ধতি জানে না বলে ভাত জাউ হয়ে যায়। তবে তারা লোকজনকে রান্নার পদ্ধতি সম্পর্কে অবহিত করছেন। তাতেও খুব একটা কাজ হচ্ছে না।
জিগাতলা এলাকার বাসিন্দা ক্ষুদে চাকরিজীবী সাদেক আলী জানান, ওএমএসের আতপ চালের চেয়ে আটার গুণগত মান ভালো। তিনি দাম কম দেখে চাল ও আটা দুটোই কিনে খেয়েছেন। তবে আজ আটা কিনতে এসেছেন।
এদিকে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম দৈনিক বরাদ্দের ৭৫ শতাংশ ওএমএসের আতপ চাল বিক্রি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন। সোমবার সচিবালয়ে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক (আরসি ফুড) ও জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকদের (ডিসি ফুড) সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওএমএসে সারাদেশে দিনে দুই হাজার ১০৫ টন আতপ চাল বরাদ্দ দেয়া হয়, বিক্রি হয় দেড় হাজার টন। ঢাকায় প্রতিদিন ১২০ টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় ৯০ টন চাল বিক্রি হয়েছে।’
Advertisement
উল্লেখ্য, চালের দাম বাড়ার পর গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশে খোলাবাজারে আতপ চাল বিক্রি শুরু করে সরকার। এ চালেরও দাম প্রতি কেজিতে ১৫ থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করা হয়।
এমইউ/জেডএ/এমএস