দেশজুড়ে

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে মানুষের ঢল

ঈদের ছুটি কাটাতে সিলেটের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। পর্যটকদের কাছে সিলেটের সবচেয়ে আকর্ষনীয় স্থান গোয়াইনঘাট উপজেলা। এ উপজেলায় রয়েছে প্রকৃতিকন্যা জাফলং, মায়াবী ঝর্ণা, পান্তুমাই, লক্ষণছড়া, বিছনাকান্দি, জলারবন রাতারগুলের মতো পর্যটন স্পট।

Advertisement

ঈদের দিন থেকে তাই সিলেটের গোয়াইনঘাটের সবকটি পর্যটন স্পট লোকে লোকারণ্য। ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পরিবার-পরিজন নিয়ে সমবেত হয়েছেন হাজার হাজার পর্যটক।

তবে পর্যটন এলাকায় যাওয়া আসার সবকটি সড়কই ভাঙাচোরা আর খনাখন্দে ভরা। সড়কের বেহাল দশার কারণে সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটক-দর্শনার্থীরা পড়েন চরম বিপাকে। তবুও পর্যটকদের ভিড় কমেনি।

মঙ্গলবার বিছনাকান্দিতে ঘুরতে আসা ঢাকা কলেজছাত্র রেজওয়ান জানান, সিলেটের নয়নাভিরাম বিছনাকান্দি এবং একমাত্র মিঠাপানির সোয়াম্প ফরেস্ট রাতারগুল ঘুরে দেখতেই সড়কের কষ্ট সহ্য করে তিনি এখানে এসেছেন। তবে ভাঙা-চোরা রাস্তা পেরিয়ে এখানে আসতে তাদের খুব কষ্ট হয়েছে।

Advertisement

ফয়সাল চৌধুরী নামের ঢাকার জুরাইন এলাকা থেকে আসা এক পর্যটক জানান, দিগন্তজোড়া সবুজে বেষ্টিত পাহাড়, পিয়াইনের স্বচ্ছ জলরাশি, নুড়িপাথর, খাসিয়া সম্প্রদায়ের বাড়ি-ঘর, চা বাগান সবকিছুই যেন জাফলংকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে।

তিনি বলেন, সড়ক যোগযোগের করুণ দশায় কিছুটা ভোগান্তির শিকার হয়েছি, তবুও এখানকার প্রকৃতির অমিয়বন্ধনে সব দুঃখ কষ্ট ভুলে গেছি।

পর্যটকরা বলেন, এখানকার পরিবেশ-প্রকৃতি এবং রূপ-লাবণ্যতা পর্যটকদের প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করে। মানুষ আনন্দ পেতে এখানে ছুটে আসে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি যে, এখানে পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃক বিভিন্ন অবকাঠামো স্থাপনা তৈরি করে এবং সিলেট থেকে এসব স্পটে আসার সড়কগুলো অতিদ্রুত মেরামত করে যোগাযোগ উপযোগী করে পর্যটক এবং যাত্রী ভোগান্তি কমাতে হবে।

জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকার পাশেই অবস্থিত ভারতীয় ফাটাছড়া মায়াবী ঝর্ণা। সেখানে ঘুরতে আসা এক শিক্ষার্থী বলেন, জাফলংয়ে শুধু পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করে সরকার বছরে লাখ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করতে পারে। এজন্য সড়কগুলো চলাচলের উপযোগী করে তুলতে হবে।

Advertisement

রাতারগুলের সোয়াম্প ফরেস্টেও এবারের ঈদে পর্যটক দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। রাতারগুলে ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে সবুজ অরণ্য ঘেরা গহীন বনে ভেসে বেড়ানোর এ দৃশ্য সুন্দরবনকেই কাছে নিয়ে আসে।

বিছনাকান্দি থেকে ঘুরে এসে কেরানীগঞ্জের পর্যটক সোলায়মান আহমেদ জানান, ঈদের আনন্দ পরিবার-পরিজনদের নিয়ে ভাগাভাগি করতেই সিলেটে আসা। আর সিলেটে আসা মানেই জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুল ঘুরে বেড়ানো। সিলেটের এই পর্যটন স্পটগুলো রক্ষণাবেক্ষণ এবং পর্যটন খাতে বিনিয়োগ করলে সরকার প্রতি বছর লাখ লাখ টাকা আয় করার পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার এবং কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।

গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার পাল জানান, জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগুলসহ সবকটি পর্যটন স্পটে ঘুরতে আসা পর্যটক দর্শনার্থীদের ভ্রমণ নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জাফলংসহ প্রায় সবকটি স্পটেই তথ্য কেন্দ্র স্থাপনসহ পর্যটকদের দিক নির্দেশনায় প্রশাসনিক ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া পর্যটন পুলিশও নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

ছামির মাহমুদ/আরএআর/পিআর