জাতীয়

‘ওরা ভালো আছে’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের আইসিইউতে (ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) চিকিৎসাধীন শিশু তৌফা ও তহুরা শারীরিক অবস্থা ভালো আছে। গতকাল মঙ্গলবার দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের ধকল গেলেও বুধবার সকাল পর্যন্ত শারীরিকভাবে তাদের বড় ধরনের কোনো জটিলতা দেখা দেয়নি।

Advertisement

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আইসিইউ ও শিশু সার্জারি বিভাগের দুজন চিকিৎসক জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ‘এক কথায় বলি, ওরা ভালো আছে।’

এ ধরনের অস্ত্রোপচারের রোগীদের শারীরিক অবস্থা যেকোনো সময় অবনতি ঘটতে পারে উল্লেখ করে তারা বলেন, ঢামেক কর্তৃপক্ষ বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে তৌফা ও তহুরার অস্ত্রোপচার পরবর্তী শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করবে।

তৌফা ও তহুরার সফল অস্ত্রোপচারের কৃতিত্ব আসলে কার- এ নিয়ে নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে? কেউ বলছে শিশু সার্জারি বিভাগের, কেউ চলছে প্লাস্টিক সার্জারি আবার কেউ বলছে অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের!

Advertisement

ঢামেক হাসপাতালের একাধিক সিনিয়র চিকিৎসক জানান, এ কৃতিত্ব কোনো বিভাগের একার নয়। এ কৃতিত্ব অস্ত্রোপচারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত শিশু সার্জারি, নিউরোসার্জারি, প্লাস্টিক সার্জারি, শিশু বিভাগ ও অ্যানেসথেসিওলজি বিভাগের চিকিৎসক ও নার্সদের যেমন রয়েছে, তেমনি হাসপাতাল পরিচালক থেকে শুরু করে সংশ্লিষ্ট সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর রয়েছে। তবে গণমাধ্যমে কাউকে কাউকে বেশি হাইলাইট করা হচ্ছে বলে তারা মন্তব্য করেন।

মঙ্গলবার দুই দফায় তৌফা ও তহুরার অস্ত্রোপচার হয়। প্রথম দফায় অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হওয়ার পর শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক কানিজ হাসিনা শিউলি সাংবাদিকদের জানান, সকাল ৮টায় জরুরি বিভাগের তৃতীয় তলার অপারেশন থিয়েটারে অস্ত্রোপচার শুরুর পর দুপুর আড়াইটায় শেষ হয়। তৌফা ও তহুরার স্পাইনাল কর্ড ও মেরুদণ্ড আলাদা করতে পেরেছি। এ পর্যন্ত যতটুকু সম্পন্ন হয়েছে, তা সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শিশু দুটি ভালো আছে। দুই শিশুকে আলাদা করার পর দুপুরের পর ফের অপোরেশন চলে প্রায় ৫টা পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের রাজু মিয়ার স্ত্রী সাহিদা বেগম নিজ বাড়িতে জোড়া লাগানো অবস্থায় দুই কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।

কোমরের কাছে জোড়া লাগানো শিশু দুটির সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গই রয়েছে, তবে তাদের প্রস্রাব-পায়খানার রাস্তা একটি। গত বছরের অক্টোবরের তৃতীয় সপ্তাহে প্রথমবার ঢামেক হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করে তাদের পায়ুপথের রাস্তা পৃথক করা হয়। সাহিদা বেগম ও রাজু মিয়া দম্পতির পাঁচ বছর বয়সী একটি ছেলেও রয়েছে।

Advertisement

এমইউ/জেএইচ/আরআইপি