ফিচার

ফয়সাল করিমের ‘ব্যাটেল অব ৭১’র গল্প

২৫ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক কম্পিউটার গেম ‘ব্যাটেল অব ৭১’। গেমটি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর নির্মিত। এছাড়া গেমসটিতে দেখা যাবে বিশ্বে সর্বপ্রথম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ত্রিমাত্রিক মডেল, যা আগে কখনো করা হয়নি। গেমসটি তৈরি করেছেন ওয়াসিইউ টেকনোলজি লিমিটেড। মুক্তির পর গেমটি বেশ সাড়া ফেলেছে। মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক দেশের প্রথম কম্পিউটার গেমের পেছনের গল্প জানাতে বিজয়ের মাসের প্রথমেই জাগোনিউজ২৪.কমের মুখোমুখি হয়েছেন ওয়াসিইউর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও গেমটির প্রজেক্ট ম্যানেজার ফয়সাল করিম। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাহবুবর রহমান সুমন।জাগো নিউজ : গেমটি বানানোর পরিকল্পনা কীভাবে মাথায় আসে? ফয়সাল করিম : ২০১৩ সালের কথা, আমি তখন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সপ্তম সেমিস্টারে পড়ছি। ওই সময় আমাদের ক্যাম্পাসে একটি গেমিং প্রতিযোগিতা হয়। আমি সেখানে আয়োজক হিসেবে ছিলাম। তখনই আমাদের মাথায় প্রথম মুক্তিযুদ্ধের ওপর গেম বানানোর পরিকল্পনা মাথায় আসে। ওই সময় আমার একটি আইটি কোম্পানিও ছিল। পরিকল্পনার পর আমি  ফারহান মাহমুদের (প্রধান গেমস ডেভেলপার) সঙ্গে কথা বলে উদ্যোগ নিলাম গেমটি তৈরির। তারপরে আরো অনেকে যোগ দেয় আমাদের সঙ্গে।জাগো নিউজ : গেমটি তৈরি করতে কতো সময় লাগলো?  ফয়সাল করিম : ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমরা কাজ শুরু করি আর ২০১৬ সালের অক্টোবরে গেমের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়। প্রথমে আমি আর ফারহান মিলে শুরু করলেও গেমটি আমরা ১৭ জন মিলে তৈরি করেছি।জাগো নিউজ : গেম তৈরিতে কাদের সহযোগিতা পেয়েছেন?ফয়সাল করিম : বেসিসের সহযোগিতা পেয়েছি। অন্যদিকে বেসিসের মোস্তাফা জব্বারও ব্যক্তিগতভাবে আমাদের সহযোগিতা করেছেন। এছাড়া ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন ড. তৌহিদ ভুঁইয়া স্যারের সহযোগিতা পেয়েছি।জাগো নিউজ : ভবিষ্যতে আর কী পরিকল্পনা আছে? মোবাইলে গেমটি কবে মুক্তি পাচ্ছে?ফয়সাল করিম : ২০১৭ সালের শেষের দিকে ব্যাটেল অব ৭১ দ্বিতীয় পর্ব মুক্তির পরিকল্পনা আছে। আর এই গেমটি মোবাইলে মুক্তি দেয়া হবে না কিছু টেকনিক্যাল কারণে। মোবাইলে মুক্তিতে বাধা হলো গেমটির বিশাল পর্বের একটি গেম, যা মোবাইলে খেলে গেমাররা মজা পাবে না।জাগো নিউজ : গেমটিতে এখন পর্যন্ত কেমন সফলতা পেয়েছেন?ফয়সাল করিম : আমরা আজ পর্যন্ত ৫ হাজারেরও বেশি কপি বিক্রি করতে সফল হয়েছি। সংখ্যা দিন দিন আরো বাড়বে বলে আশা করি।জাগো নিউজ : গেমটির দাম রেখেছেন ৩০০ টাকা? এটা কি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বেশি নয়?ফয়সাল করিম : বাংলাদেশে এই ধরনের গেম নতুন বলে দামটা বেশি মনে হচ্ছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে এই ধরনের গেম তৈরিতে খরচও বেশি পড়ে। তাই সেভাবে দামটা নির্ধারণ করা হয়েছে।জাগো নিউজ : বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই ধরনের কম্পিউটার গেম সফলতা পাবে বলে আপনি মনে করেন কি?ফয়সাল করিম : গেমসটি তৈরি করতে আমাদের অনেক সময় লেগেছে। কারণ আমাদের দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ গেমস তৈরি করার মতো টেকনিক্যাল সাপোর্ট নেই বললেই চলে। তাছাড়া কম্পিউটার গেমস ডেভেলপারও খুব কম। অন্যদিকে আমদের দেশের গেমাররা টাকা নিয়ে কিনে গেম খেলতে আগ্রহী নয়। তাছাড়া গেম বিক্রি করা বাংলাদেশ এখনো একটু কঠিন। তবে আমি মনে করি, আস্তে আস্তে এই সময় বদলাবে।জাগো নিউজ : জাগো নিউজকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।ফয়সাল করিম : জাগো নিউজ এবং আপনাকেও ধন্যবাদ।এসইউ/এনএইচ

Advertisement