ফরিদপুর জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু রাজা ও বাদশা। ফরিদপুর শহরতলীর বিল মাহমুদপুর এলাকার একটি ডেইরি ফার্মের মালিক রফিকুল ইসলামের ফার্মে বড় হওয়া দুটি গরুর মধ্যে বাদশার ওজন ৩০ মণের মতো। যেটির বয়স সাড়ে ৪২ মাস। রাজা ৩২ মাস বয়সী, যার ওজন প্রায় ২৮ মনের মতো। রাজার দাম হাঁকানো হয়েছে ১৩ লাখ টাকা, বাদশার ১৫ লাখ। প্রতিদিন রাজা ও বাদশার খাদ্য তালিকায় রয়েছে, আপেল-আঙ্গুরসহ বিভিন্ন দামি ফলমূল।
Advertisement
মায়শা এগ্রোফার্ম সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনই আশপাশের এলাকা থেকে গরু দুটিকে দেখতে আসছেন ক্রেতারা। ঈদের মাত্র তিন দিন বাকি থাকলেও কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় এখনো রাজা-বাদশা বিক্রি হয়নি। ন্যায্য দাম পেলে গরু দুটি বাড়ি থেকেই বিক্রি করা হবে। তা না হলে ঈদের শেষ মুহূর্তে গরু দুটি ঢাকার হাটে পাঠানো হবে। তাদের ফার্মের রাজা ও বাদশা নামের গরু দুটি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু বলে তাদের দাবি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিবছরই খামারিরা কোরবানি সামনে রেখে গরু মোটাতাজা করেন অনেকটা প্রতিযোগিতামূলক ভাবে। সবার থেকে বড় কোন গরু, কার গরু, ক্রেতাদের মধ্যেও বড় গরু নিয়ে থাকে বিশেষ আগ্রহ লক্ষ্য করা যায়। এবার কোরবানির পশুর হাট কাঁপাতে রাজা-বাদশা।
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরে কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৮ হাজার ১১টি। এর মধ্যে পশু প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৮৯১টি। সেই হিসেবে প্রায় ৩ হাজার পশু দেশের বিভিন্ন বাজারে নেওয়া হবে। খামারি ও পশু ব্যবসায়ীরা এবার কোরবানির বাজারে পশুর ভালো দাম পাওয়ার আশায় রয়েছেন।
Advertisement
জানতে চাইলে মায়শা অ্যাগ্রোফার্মের রফিকুল ইসলাম সবুজ জাগো নিউজকে বলেন, গরু দুটি ফিজিয়ান জাতের। গরুর আচরণ, হাবভাব রাজা ও বাদশার মতো। তাই নামকরণ করা হয়েছে রাজা ও বাদশা। তাদের দিন শুরু হয় আঙুর, আপেল, কমলার নাস্তা দিয়ে। রাজা ও বাদশার জন্মও এই ফার্মে। একটির বয়স ৪২ মাস অপরটির ৩২ মাস। বাদশার দাম চাওয়া হচ্ছে ১৫ লাখ আর রাজার ১৩ লাখ।
তিনি আরও বলেন, এসব গরু পালনে খরচ ও কষ্ট আছে। অনেক শ্রম দিয়ে তাদের বড় করা হয়েছে। এবার বড় গরুর চাহিদা তেমন একটা নেই বলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কেনার চেয়ে দেখার লোকের সংখ্যা বেশি। শেষ পর্যন্ত গরু দুটি কাঙ্ক্ষিত দামে বিক্রি করতে পারবো কিনা সংশয় কাজ করছে। তারপরও আশা করি ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো।
জেলা প্রাণীসম্পদ কার্যালয়ের জেলা ট্রেনিং অফিসার ডা. একেএম আসজাদ বলেন, জানামতে গরু দুটি প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে, কোনো ধরনের স্টেরয়েড দেওয়া হয়নি। জেলায় এ বছর চাহিদার তুলনায় দুই সহস্রাধিক পশু বেশি রয়েছে।
ফরিদপুর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সঞ্জীব কুমার বিশ্বাস জাগো নিউজকে বলেন, মায়শা অ্যাগ্রোফার্মের রাজা ও বাদশা নামে গরু দুটি জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু। আমাদের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও সার্বিক সহোযোগিতা করা হয়েছে। যদিও এবার বড় গরুর চাহিদা অন্যবারের তুলনায় কম। তারপরও গরুদুটি ভালো দামে বিক্রি হলে খামারিরা এ ধরনের গরু পালনে আগ্রহী হবেন।
Advertisement
এন কে বি নয়ন/এমএন/এমএস