দেশজুড়ে

কোরবানি ঘিরে কামারপট্টিতে ব্যস্ততা, যন্ত্রপাতির দাম চড়া

কোরবানি ঘিরে কামারপট্টিতে ব্যস্ততা, যন্ত্রপাতির দাম চড়া

আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে পিরোজপুরে ব্যস্ততা বেড়েছে কামারপট্টিতে। পশু কোরবানির জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম দা, ছুরি, চাপাতি ও বঁটি তৈরিতে দিনরাত ব্যস্ত সময় পার করছেন কামাররা। তবে কয়লা, লোহা ও শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় কপালে চিন্তার ছাপ পড়েছে এ পেশায় জড়িতদের।‎সোমবার (২ জুন) সকালে রাজারহাট উপজেলার কামারপট্টিতে গিয়ে দেখা যায়, লোহা কাটা ও ঘষার শব্দে মুখরিত চারপাশ। প্রচণ্ড গরমেও আগুনের ফুলকি ছুটিয়ে কঠিন পরিশ্রম করে চলেছেন কামাররা। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে দা, ছুরি, চাপাতি ও বঁটি তৈরিতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে কাজ। দম ফেলারও সময় নেই তাদের।

Advertisement

নতুন ছুরি-চাপাতি কেনার জন্য দোকানগুলোতে যেমন ভিড় বেড়েছে, তেমনি পুরোনো ছুরি-চাপাতি ধার দেওয়ার জন্যও কামারপট্টিতে ভিড় করছেন লোকজন। পশু জবাই ও চামড়া ছাড়ানোর কাজে ব্যবহৃত নানা ধরনের ছুরি, চাপাতি, দা, বঁটি সাজিয়ে রেখেছেন দোকানিরা। ওজনভেদে চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে এক হাজার টাকা পর্যন্ত দামে। চামড়া ছাড়ানো ও মাংস কাটার জন্য বানানো ছোট-বড় ছুরিগুলো ১৫০ থেকে হাজার টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। তবে গরু জবাইয়ের জন্য তৈরি হচ্ছে বিশেষ রকমের লম্বা ছুরি। এসব ছুরি কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা।

কোরবানি উপলক্ষে ছুরি ও চাপাতি কিনতে আসা রফিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‌‘এবছর জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি। অনলাইনে বিদেশি যে ধরনের চাপাতি-ছুরি পাওয়া যায়, তার তুলনায় লোহার তৈরি জিনিসপত্র অনেক ভালো। দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়। এজন্য এখানে চাপাতি-ছুরি কিনতে এসেছি।’

চাপাতি কিনতে আসা শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘পশু কোরবানির জন্য চাপাতি দরকারি জিনিস। তাই কামারপট্টিতে এসেছি। এখানকার চাপাতিগুলো ভালো এবং দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায়।’

Advertisement

ছুরি ধার দেওয়াতে নিয়ে এসেছেন শাহজাহান মল্লিক। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘ছুরি আগেই বানানো আছে। এখন ধার দেওয়ালে কাজ করা যাবে। এখানকার কারিগররা খুব ভালো কাজ করে।’

কথা হয় কামারপট্টির কারিগর সুকান্ত মন্ডলের সঙ্গে। তিনি বলেন, কোরবানির সময় আমাদের কাজের চাপটা একটু বেশি থাকে। তবে বেশিরভাগ ছুরি বানানোর চাহিদা থাকে মাদরাসা থেকে। অনেকে পুরোনো যন্ত্রপাতি ধার দেওয়াতে নিয়ে আসেন।

দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কোরবানি উপলক্ষে আমরা দাম সীমিত রাখার চেষ্টা করি। তবে কয়লা, লোহার দাম বেড়ে যাওয়ায় বিগত বছরের তুলনায় এবছর দামটা একটু বেশি।

পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মামুনুর রশীদ বলেন, রাজারহাট কামারপট্টিতে প্রায় ২৫টি পরিবার লৌহজাত সামগ্রী নির্মাণ করে জীবিকা নির্বাহ করে। তারা দীর্ঘদিন স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে আসছেন। ঈদুল আজহা উপলক্ষে তাদের কাজের পরিসর অনেকগুণ বেড়ে যায়। তাদের আত্মসামাজিক উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ, সহজ শর্তে ঋণ প্রদানসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Advertisement

মো. তরিকুল ইসলাম/এসআর/জিকেএস