মাউন্ট এভারেস্টজয়ী বাংলাদেশি পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল দেশে ফিরছেন আজ ২৯ মে বিকেল ৪টায়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন। নেপালে অবস্থানকালে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা হয় তার। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সালাহ উদ্দিন মাহমুদ—
Advertisement
জাগো নিউজ: শাকিল আপনাকে অভিনন্দন। কোথায় আছেন, কেমন আছেন?ইকরামুল হাসান শাকিল: ধন্যবাদ আপনাকে। এই মুহূর্তে একটি অনুষ্ঠান শেষ করে হোটেলে এসেছি। এখন ড্রেস চেঞ্জ করবো। রাতের খাবার খাবো।
জাগো নিউজ: নেপালে তো অনেক সংবর্ধনা পাচ্ছেন।ইকরামুল হাসান শাকিল: এই তো, তারা ভালোবেসে সংবর্ধনা দিচ্ছে। শেরপা জনগোষ্ঠী অভ্যর্থনা জানালো। নেপালের ইউএনডিপি অফিস সংবর্ধনা দিয়েছে। ২৯ মে বিশ্ব এভারেস্ট দিবস। নেপালে দিবসটি পালিত হবে। এই অনুষ্ঠানে থাকার জন্য তারা বলেছিলেন। তারপরও দেশে ফেরার তাগিদে সব অনুষ্ঠানে অংশ নিতে পারছি না। আরও তিন-চার দিন থাকলে তারাও খুশি হতেন। এদিকে ২৯ মে আমাকে দেশে ফিরতে হবে। এদিন আবার সেখানেও পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা অপেক্ষা করছেন।
জাগো নিউজ: এভারেস্ট তো জয় করলেন। খরচ কেমন হলো—ইকরামুল হাসান শাকিল: সে আর বলতে হয়? অনেক প্রতিষ্ঠান পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা। তারা যথেষ্ট সাহায্য করেছেন। তারপরও এই মুহূর্তে তিন-চার লাখ টাকা ঋণী আছি নেপালে। এক শুভাকাঙ্ক্ষীকে কিছু টাকা নিয়ে বিমানবন্দরে আসতে বলেছি (হাসি)। বলতে পারেন, বাংলাদেশের বিমানবন্দরে নামবো একদম খালি হাতে।
Advertisement
জাগো নিউজ: বিমানবন্দরে নেমে কী কী কার্যক্রম রয়েছে?ইকরামুল হাসান শাকিল: যেহেতু প্রধান পৃষ্ঠপোষক বাংলাদেশের শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ গ্রুপ। বিমানবন্দরে তারা যে কর্মসূচি রাখবেন, সেগুলোই আপাতত আজকের কর্মসূচি। আমার ব্যক্তিগত কোনো কর্মসূচি নেই।
জাগো নিউজ: গ্রামের বাড়িতে কবে যাচ্ছেন?ইকরামুল হাসান শাকিল: প্রাণ গ্রুপ আমার মাকে বিমানবন্দরে নিয়ে আসবে। মায়ের সঙ্গে দেখা বিমানবন্দরেই হচ্ছে। তবে গ্রামবাসীর আয়োজনে আগামী ৩১ মে গ্রামের বাড়িতে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। সেদিন অবশ্যই গ্রামে যেতে হবে।
আরও পড়ুন বিশ্বরেকর্ড গড়ে শাকিলের এভারেস্ট জয় সুস্থ আছেন শাকিল, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের শুভেচ্ছাজাগো নিউজ: আপনার এভারেস্ট জয়ের গল্প কবে শুনবো?ইকরামুল হাসান শাকিল: বিমানবন্দরে নেমে একটি হোটেলে প্রেস ব্রিফিং করা হবে। সেখানে হয়তো বিস্তারিত গল্প বলা যাবে না। যতটুকু পারি বলার চেষ্টা করবো। তবে ইচ্ছে ছিল একটি দিন যে কোনো মিলনায়তনে বসে কক্সবাজার থেকে যাত্রা শুরুর গল্পটা বলবো। মোট ৮৪ দিনে যেসব ধাপ এবং প্রতিবন্ধকতা পার হয়েছি, সবই বলার ইচ্ছা আছে।
জাগো নিউজ: আপনি তো একজন লেখক। এভারেস্ট জয় নিয়ে বই পাচ্ছি কবে?ইকরামুল হাসান শাকিল: আমার এই অভিযানে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অদ্রি আর্থিকভাবে সাহায্য করেছে। তাদের একটি পাণ্ডুলিপি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। দেশে ফিরে লেখা শুরু করবো। দেখি কতদিনে শেষ করতে পারি। লেখা শেষ হলে অবশ্যই বই আকারে পাবেন। এর বাইরে অন্য বিষয় নিয়ে আরও দু’একটি বই হতে পারে।
Advertisement
জাগো নিউজ: ঢাকায় কোথায় উঠবেন?ইকরামুল হাসান শাকিল: এই মুহূর্তে ঢাকায় আমার কোনো বাসা নেই। অভিযানে যাওয়ার আগে যে বাসায় থাকতাম; সেটা ছেড়ে দিয়েছি। ঢাকায় পৌঁছে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমি কোথায় থাকবো। হয়তো আবার নতুন বাসা খুঁজতে হবে। দু’তিন দিন হয়তো এদিক-সেদিক থাকা যাবে। আর্থিক সংকট কেটে গেলে নিজের একটি থাকার জায়গা হয়তো হবে।
জাগো নিউজ: ভবিষ্যতে আর কী কী করার ইচ্ছা আছে?ইকরামুল হাসান শাকিল: আগে এই ধকলটা কাটিয়ে উঠি। এখনই কোনো ইচ্ছার কথা বলতে পারছি না। যদি আল্লাহ বাঁচিয়ে রাখেন, তাহলে হয়তো অন্য কোনো অভিযানের জন্য তৈরি হবো।
জাগো নিউজ: বাংলাদেশের মাটিতে আপনাকে স্বাগতম। সুস্থভাবে আমাদের মাঝে ফিরে আসুন— ইকরামুল হাসান শাকিল: জাগো নিউজকে ধন্যবাদ। আপনার সঙ্গে বিমানবন্দরে দেখা হচ্ছে। সেখানে যদি আপনার মুখ না দেখি, তাহলে হোটেলেও আমার মুখ দেখবেন না (হাসি)। সাক্ষাতে অনেক গল্প হবে, আড্ডা হবে। আমি এখন ফ্রেশ হয়ে রাতের খাবার খাবো। ভালো থাকবেন।
এসইউ/জিকেএস