মাউন্ট এভারেস্টজয়ী বাংলাদেশি পর্বতারোহী ইকরামুল হাসান শাকিল দেশে ফিরছেন আজ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেল ৪টায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করবেন তিনি।
Advertisement
ইকরামুল হাসান শাকিল এক অডিও বার্তার মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন।
শাকিল কক্সবাজার থেকে প্রায় ১ হাজার ৩৭২ কিলোমিটার পথ হেঁটে গত ১৯ মে সকালে পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট জয় করেন। সপ্তম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয় করেছেন তিনি। পদযাত্রা করে সবচেয়ে বেশি পথ পাড়ি দিয়ে সবচেয়ে কম সময়ে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এভারেস্ট জয়ের বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তিনি। শাকিল এটা করেছেন সর্বকনিষ্ঠ হিসেবে। এতে দেশের মানুষের মধ্যে বইছে আনন্দের বন্যা।
আরও পড়ুন বিশ্বরেকর্ড গড়ে শাকিলের এভারেস্ট জয় এভারেস্ট জয়ের ছবি প্রকাশ করলেন শাকিল এভারেস্টের চূড়ায় দাঁড়িয়ে কেঁদেছি কৃতজ্ঞতায়, আনন্দে, দায়িত্ববোধেসমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পদযাত্রা করে এভারেস্ট জয়ের শাকিলের এই অভিযানের নাম ছিল ‘সি টু সামিট’। অভিযানের আয়োজক বাংলা মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব। টাইটেল স্পন্সর দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ ‘প্রাণ’। সহযোগী স্পন্সর হিসেবে রয়েছে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি), স্ন্যাকস পার্টনার মিস্টার নুডলস, গিয়ার পার্টনার মাকলু-ই-ট্রেডার্স নেপাল ও ওরাল হেলথ সিস্টেমা টুথব্রাশ, নিউজ পার্টনার জাগো নিউজ ও রেডিও পার্টনার জাগো এফএম।
Advertisement
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের ইনানী সমুদ্র সৈকত থেকে শুরু হয় শাকিলের পদযাত্রা। ৯০ দিনের মধ্যে ‘সি টু সামিট’ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে অভিযান শুরু করেন তিনি। যাত্রাপথে বাংলাদেশ, ভারত এবং নেপালের প্রায় এক হাজার ৩৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ ও দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে এভারেস্টের ২৯ হাজার ৩১ ফুট উঁচু শিখরে আরোহণ করেন শাকিল।
বাংলাদেশের গাজীপুরের কালিয়াকৈরের স্বপ্নবাজ এ তরুণের আগে ১৯৯০ সালে অস্ট্রেলিয়ার পর্বতারোহী টিম ম্যাকার্টনি-স্নেপ ভারতের গঙ্গাসাগর থেকে ৯৬ দিনে প্রায় ১২শ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গে পদচিহ্ন রাখেন। শাকিল তার চেয়ে সপ্তাহখানেক কম সময়ে পাড়ি দিয়েছেন আরও একশ কিলোমিটার বেশি। ম্যাকার্টনি রেকর্ড গড়েছিলেন ৩৪ বছর বয়সে। শাকিল সেটা করে দেখিয়েছেন ৩১ বছর বয়সে।
আরও পড়ুন ভাঙা ঘর থেকে এভারেস্টের চূড়ায় শাকিল, গর্বিত এলাকাবাসী কেমন ছিল শাকিলের প্রথম অভিযান শাকিলকে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে অভ্যর্থনাএর আগে ২০১৩ সালে শাকিল কলকাতা থেকে হেঁটে ১১ দিনে ঢাকায় পৌঁছান। তখনই যোগ দেন বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্র্যাকিং ক্লাবে। পর্বতারোহণের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন ভারত থেকে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ২০ হাজার ২৯০ ফুট উচ্চতার কেয়াজো-রি পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে যান এম এ মুহিতের নেতৃত্বে সাত পর্বতারোহী। তাদের একজন শাকিল।
শেষ পর্যন্ত মুহিত, শাকিল ও কাজী বাহলুল শৃঙ্গটি জয় করেন। ২০১৭ সালে লারকে পিক জয়ের অভিযানেও ছিলেন তিনি। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে খুব কাছাকাছি গিয়ে তা জয় করা হয়নি। পরের বছর ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেইনিয়ারিং থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণের সময়েই তিনি জয় করেন ‘দ্রৌপদী-কা-ডান্ডা-২’ শৃঙ্গ। ২০১৯ সালে বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশের আট পর্বতারোহী ‘হিমলুং’ জয়ের অভিযানে নামেন। সেই দলে অংশ নিয়ে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হিমলুং-এর চূড়ায় পা রাখেন।
Advertisement
এমএমএআর/এএসএম