ঘরে পানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে আসবাবপত্র। গোয়াল ঘরেও পানি। তাই বাধ্য হয়ে গরু-ছাগল নিয়ে ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছে মানুষ। ফেনীর ফুলগাজী উপজেলায় দেখা গেছে মানুষের এমন কষ্টের চিত্র।
Advertisement
এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামের তনিমা সুলতানা পরিবার নিয়ে গবাদিপশুসহ আশ্রয় নেন পার্শ্ববর্তী শাহজাহান মজুমদারের দোতলা ভবনের ছাদে।
শুধু তনিমাই নয়, এলাকার আশপাশের ১০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে এ ছাদে। তাদের মতো দুর্ভোগের একই চিত্র পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার হাজারো মানুষের।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া এবং সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২১টি স্থানে ভেঙে প্লাবিত হয়েছে শতাধিক গ্রাম। নদীর পানি কমলেও ভাঙন স্থান দিয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত থাকায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। একাধিক সড়ক পানিতে তলিয়ে বন্ধ রয়েছে যান চলাচল। দুর্যোগে আক্রান্ত হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন ২০ হাজারের বেশি মানুষ। জেলা প্রশাসন জানায়, পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার আংশিক অংশে ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যাদুর্গত ৬ হাজার ৮২৬ জন মানুষ অবস্থান করছেন। পরশুরাম ও ফুলগাজী উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে এরই মধ্যে ৯০ স্বেচ্ছাসেবক মাঠে কাজ করছে।
Advertisement
আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা আলা উদ্দিন বলেন, গেল বছরের বন্যার সময়ও প্রতিবেশীর ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলাম। এবার পানি এখনো কম। তবে ঘর বসবাস অনুপযোগী হওয়ায় জিনিসপত্র নিয়ে ছাদে আশ্রয় নিয়েছি।
মোতাহার হোসেন নামে এক ব্যক্তি বলেন, এটি আমার মামার বাসা। তারা এলাকার বাইরে অবস্থান করলেও বাড়ির ছাদ মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এখানে আশ্রয় নেওয়া ১০টি পরিবার কোনোমতে দিনযাপন করছে।
ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার আংশিক অংশে প্রায় ২০ হাজার মানুষ দুর্যোগে আক্রান্ত। এরই মধ্যে ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে ৭ হাজারের মতো মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
আবদুল্লাহ আল-মামুন/জেডএইচ/জিকেএস
Advertisement