ধর্ম

ইহরাম বাঁধার আগে সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে কি?

ইহরাম বাঁধার আগে সুগন্ধি ব্যবহার করা যাবে কি?

হজ ও ওমরাহর গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ ইহরাম। নির্দিষ্ট স্থান থেকে হজ ও ওমরাহর নিয়তে নির্ধারিত নিয়মে ইহরাম বাঁধতে হয়। যারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সরাসরি মক্কায় যাওয়ার ইচ্ছা করেছেন, তারা নিজেদের ঘর থেকেই ইহরাম বেঁধে রওয়ানা হতে পারবেন। অথবা নিজ নিজ দেশের হজ ক্যাম্প থেকে অথবা মিকাত অতিক্রম করার আগেই ইহরাম বাঁধবেন। ইহরাম বাঁধার জন্য ওজু বা গোসল করবেন অতঃপর মিকাত পার হওয়ার আগেই পুরুষ হজ-ওমরাহ পালনকারীরা দুটি সেলাইবিহীন কাপড় পরিধান করবেন, নারীরা তাদের ইহরামের পোশাক পরিধান করবেন।

Advertisement

ইহরাম বেঁধে ফেলার পর বৈধ অনেক কিছু হারাম হয়ে যায়। এর মধ্যে সুগন্ধি ব্যবহার অন্যতম। তবে ইহরাম বাঁধার সময় অর্থাৎ ইহরামের কাপড় পরে ফেলার আগে শরীরে সুগন্ধি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ নয়, বরং মুস্তাহাব। এর ঘ্রাণ ইহরাম বাঁধার পর বাকি থাকলেও অসুবিধা নেই। ইহরামের কাপড়ে আতর বা সুগন্ধি না লাগালেই ভালো। কারণ ইহরামের কাপড়ে এমন আতর বা সুগন্ধি লাগানো নিষিদ্ধ, যা ইহরাম বাঁধার পরও বাকি থাকে।

ইহরাম বেঁধে ফেলার পর মাথা, চেহারা, দাড়ি, হাত, হাতের তালু, পায়ের গোছা, রান ইত্যাদি বড় অঙ্গের সব জায়গায় সুগন্ধি লাগালে দম ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ হারামের সীমার ভেতরে (মিনা বা মক্কায়) কোরবানির উপযুক্ত একটি ছাগল বা দুম্বা জবাই করে তার মাংস দরিদ্রদের মধ্যে বণ্টন করে দিতে হবে।

শরীরের বিভিন্ন স্থানে সুগন্ধি লাগালে যদি তা একত্র করলে বড় অঙ্গের সমপরিমাণ হবে বলে মনে হয়, তাহলেও দম ওয়াজিব হবে।

Advertisement

ইহরাম অবস্থায় কেউ যদি কাপড়ে সুগন্ধি লাগায় বা সুগন্ধি লাগানো কাপড় পরিধান করে, তাহলে সুগন্ধির পরিমাণ এক বর্গবিঘত বা তার বেশি হলে এবং পূর্ণ এক রাত বা পূর্ণ এক দিন পরিধান করলে দম ওয়াজিব হবে। আর সুগন্ধির পরিমাণ তার চেয়ে কম হলে বা পূর্ণ এক রাত বা পূর্ণ এক দিনের কম সময় পরিধান করলে সদকা ওয়াজিব হবে। অর্থাৎ সর্বনিম্ন এক কেজি ৬৫০ গ্রাম গম বা এর সমমূল্য দান করে দিতে হবে।

ইহরামের পোশাক পরিধানের পর যেভাবে ওমরাহ বা হজের নিয়ত করবেন

ইহরামের পোশাক পরিধানের পর মাকরুহ ওয়াক্ত না হলে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করে শুধু ওমরাহর নিয়ত করবেন যদি তামাত্তু হজ পালনকারী হয়ে থাকেন অর্থাৎ মক্কায় গিয়ে ওমরাহ করার পর হালাল হয়ে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে। অন্তরে কোনো কাজের সিদ্ধান্ত নেওয়াকে নিয়ত বলে। মুখে নিয়তের শব্দ উচ্চারণ করা জরুরি নয়, অন্তরে ইচ্ছা পোষণ করলেই নিয়ত হয়ে যাবে। তবে হজের নিয়তের শব্দ মুখেও উচ্চারণ করা উত্তম।

তামাত্তু হজ পালনকারী প্রথম ইহরামের সময় শুধু ওমরাহর নিয়ত করবেন এভাবে, ‘হে আল্লাহ আমি ওমরাহর নিয়ত করছি, আমাকে যথাযথভাবে ওমরাহ পালন করার তওফিক দিন!’

Advertisement

তারপর তালবিয়া পাঠ করবেন,

لَبَّيْكَ اَللَّهُمَّ لَبَّيْكَ، لَبَّيْكَ لا شَرِيْكَ لَكَ لَبَّيْكَ، إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ، لا شَرِيْكَ لَكَ

উচ্চারণ: লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল-হামদা, ওয়ান-নি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক, লা শারিকা লাক।

অর্থ: আমি উপস্থিত, হে আল্লাহ! আমি আপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি। আমি আাপনার ডাকে সাড়া দিয়েছি, আপনার কোনো শরীক নেই, আমি উপস্থিত। নিশ্চয়ই সমস্ত প্রশংসা, নেয়ামত আপনার এবংএবং একচ্ছত্র আধিপত্য আপনারই। আপনার কোনো শরিক নেই।

ওএফএফ/এমএস