গরমের প্রচণ্ড রোদে বারান্দার গাছগুলোর পাতা ঝলসে যাওয়ার ভয় করছেন? বর্ষা থেকে বসন্ত আমাদের দেশি গাছগুলো বেশিরভাগই বান্দারায় আসা রোদে বেশ ভালোভাবে বেড়ে ওঠে। তবে গ্রীষ্মকালের তীব্র রোদে কিছু গাছ টিকতে পারেনা। তাই এ সময় আপনার বারান্দার গাছগুলোকে নতুনভাবে সাজানো দরকার। তাহলে জেনে নিন আপনার ইনডোরের কোন গাছগুলো কড়া রোদ ও গরম সহ্য করে সতেজ থাকে।
Advertisement
১. স্নেক প্ল্যান্ট এই গাছটি ঘরে রাখার যেমন উপকার আছে, তেমনই দেখাশোনা করাও খুব সহজ। কড়া রোদ, কম পানি সবই সহ্য করে স্নেক প্ল্যান্ট। তাই মাটি শুকালেই শুধু পানি দেবেন। খেয়াল রাখবেন যেন গোড়ায় পানি জমে না থাকে। এই গাছটি ঘরের শোভা বাড়ানোর পাশাপাশি বাতাস বিশুদ্ধ করে।
২. অ্যালোভেরাঅ্যালোভেরার গুণাগুণ বলে শেষ করা কঠিন। স্বাস্থ্য ও রূপচর্চা, উভয় দিকেইে এর ব্যাপক ঔষধি বৈশিষ্ট রয়েছে। এই গাছে পানি কম লাগে, সেই সঙ্গে রোদ পেলে দ্রুত বাড়ে। সাধারণত সপ্তাহে একবার পানি দিন। তবে মাটি অতিরিক্ত শুকনো লাগলে প্রয়োজন মতো অল্প করে পানি দিতে পারেন। টবে ক্যাকটাসের মাটি ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ক্রোটনক্রোটনকে আমরা সাধারণত পাতাবাহার বলে চিনি, যদিও পাতাবাহার কোন নির্দিষ্ট গাছ নয়; এটি গাছের ধরন। ক্রোটনের পাতা রোদ পেলে আরও রঙিন হয়। বাড়ির সৌন্দর্য বাড়ায়। এর মাটি সামান্য ভেজা রাখুন আর মাসে একবার সার দিন।
Advertisement
৪. জেড প্ল্যান্ট জেড প্ল্যান্ট পাতার মধ্যে অনেকটা পানি ধরে রাখতে পারে, ফলে এটি ক্যাকটাসের মতো রোদ-সহিষ্ণু। কড়া রোদেও সতেজ থাকে। মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দেবেন। অতিরিক্ত যত্ন লাগেনা।
৫. অ্যাগ্লোনিমাএই গাছটি কম আলোতেও টিকে, তবে রোদে দ্রুত বাড়ে ও ঘরের বায়ু দূষণ কমাতে সাহায্য করে। টবের মাটি শুকালেই পানি দিন। পাতায় পানি স্প্রে করতে পারেন, এতে পাতা দেখতে সতেজ ও চকচকে লাগবে।
৬. পথোসপথোস অনেক রকমের হয়, আমাদের সবচেয়ে পরিচিত পথোসটি মানিপ্ল্যান্ট নামে পরিচিত। এটি ঝুলন্ত গাছ হিসেবেও চমৎকার। রোদ-ছায়া দুইয়েই বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে ঘরের বাতাসও ফিল্টার করে। এই গাছটি মাটি ও পানি উভয়তেই বাঁচে। টবে লাগালে প্রতিদিন পানি লাগে না। মাটি শুকালে পানি দেবেন।
৭. স্পাইডার প্ল্যান্টএটিও ইনডোরের জন্য আদর্শ একটি গাছ, কেননা এটি ঘরের বাতাস ফিল্টার করে। স্পাইডার প্ল্যান্ট নিয়মিত বেবি প্ল্যান্ট জন্ম দেয়, সেগুলো কেটে নতুন গাছ তৈরি করতে পারবেন। রোদেও এই গাছটি বেশ ভালো বাড়ে, তবে মাটি ভেজা রাখতে হবে, শুকানো যাবে না।
Advertisement
৮. ইন্ডিয়ান বেসিল বা তুলসীআয়ূর্বেদিক গুণাগুণসম্পন্ন চমৎকার একটি গাছ তুলসী। পোকা দূরে রাখে। সর্দি-কাশিতেও কাজে দেয়। তুলসী গাছের প্রতিদিন ৬-৮ ঘণ্টা রোদ চায়। তাই কড়া রোদের দিনে বারান্দায় রাখার জন্য আদর্শ একটি গাছ তুলসী। মাটি শুকালে পানি দিবেন, ব্যস।
৯. জবাঔষধি গুণের পাশাপাশি রোদে এই গাছে দৃষ্টিনন্দন নানা রংয়ের ফুল ফোটে। সেই ফুল দিয়ে কেউ কেউ চা-ও বানান, একে বলে হিবিস্কাস টি। কড়া রোদেও গাছ ভালো থাকবে, তবে নিয়মিত পানি দিন। ফুল বাড়াতে সার দিন।
১০. ক্যাকটাস ও সাকুলেন্টএ এক অদ্ভুত গাছ। রোদ ও খরা সহ্য করতে ক্যাকটাসের জুড়ি নেই। অতি কম যত্নেও টিকে যায়। আর সাকুলেন্ট তার পাতার মধ্যে পানি ধরে রাখতে পারে। তাই রোজ পানি লাগেনা। এদিকে সাকুলেন্টও মরুভূমির গাছ হওয়ায় কড়া রোদ কোন সমস্যাই না। তবে টবে অবশ্যই পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা রাখবেন। গাছের গোড়ায় যেন পানি জমে না থাকে। বিশেষ ধরনের ক্যাকসাট সয়েল মিক্স ব্যবহার করলে বা নিজে বানিয়ে নিলে ভালো ফলাফল পাবেন।
প্রতি ঋতুতে আপনার বাড়ির গাছগুলোকে তাদের প্রয়োজন অনুয়ায়ী সাজালে গাছগুলো যেমন সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে, তেমনই তাদের বেড়ে ওঠা দেখে আপনার মনও খুশিতে ভরে উঠবে। তাই এই গ্রীষ্মে আপনার সংগ্রহের রোদ-প্রেমী গাছগুলোকে বারান্দার রোদেলা কর্নারে সাজিয়ে ফেলুন।
এএমপি/জিকেএস