ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে বাজারে চাহিদা বেড়েছে গরু, খাসি ও মুরগির মাংসের। এতে দামেও বেশ চড়াভাব দেখা গেছে। বাজারভেদে গরুর মাংস ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। এছাড়া ব্রয়লার ও পাকিস্তানি মুরগির দাম বেড়েছে কমপক্ষে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
Advertisement
তবে ঈদের বাড়তি চাহিদার অন্যান্য পণ্য, যেমন চিনি, তেল ও পোলাওয়ের চাল বা সেমাইয়ের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। সবজি ও মাছের দামেও খুব বেশি হেরফের দেখা যায়নি।
শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। বিক্রেতারা জানিয়েছেন, প্রতি ঈদেই বাড়তি চাহিদার কারণে মাংসের দামে কিছুটা হেরফের হয়। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার দাম তুলনামূলক কমই রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য পণ্য ক্রেতার নাগালের মধ্যে আছে। বরং কিছু পণ্যের দাম অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার অনেক কম।
বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২১০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে। একইভাবে বেড়ে পাকিস্তানি মুরগির দাম ৩৩০-৩৪০ টাকা হয়েছে। এ মুরগি আগে ৩০০-৩১০ টাকায় পাওয়া যেত।
Advertisement
সেগুনবাগিচা বাজারের বিক্রেতা জিয়া বলেন, ঈদে মুরগির চাহিদা অনেক বেড়ে যায়। প্রতিটি পরিবার রোস্ট বা বিরিয়ানির জন্য মুরগি কেনে। সেই তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
শুল্ক কমিয়েও বাজার পাচ্ছে না ভারতের পেঁয়াজএদিকে বাজারে কয়েকদিন আগেও সাড়ে ৭০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস কেনা যেত। এখন ৮০০ টাকার নিচে কেউ বিক্রি করছে না। অর্থাৎ দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। মাংস বিক্রেতা বিদ্যুৎ মিয়া বলেন, গরুর দাম একটু বেড়েছে। সে কারণে মাংসের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।
শান্তিনগর বাজারে ব্যবসায়ী মো. রবিউল বলেন, এখন অনেকে ঈদের জন্য আগেভাগে মাংস কিনছেন। সকাল থেকে দুইটা গরুর মাংস বিক্রি শেষ। এদিকে প্রতিটি গরু আগের চেয়ে প্রায় পাঁচ হাজার টাকা বেশি দামে কিনতে হয়েছে।
Advertisement
এদিকে ঈদের আগে মাংসের দাম বেড়ে যাওয়ায় অসুবিধায় পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। ওই বাজারে ক্রেতা ইয়াসমিন সুলতানা বলেন, অন্য কোনো সময় হলে দাম বাড়ার কারণে কিনতাম না। কিন্তু এখন বাধ্য হয়ে কিনতেই হচ্ছে, কারণ ঈদ। সে সুযোগে ওরাও (বিক্রেতারা) দাম বাড়িয়ে নিচ্ছে। ঠকছি শুধু আমরা।
এদিকে ঈদের বাজারে অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল দেখা গেছে। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকা কেজি দরে। গতবার ঈদের আগে এ চিনি কিনতে হয়েছে ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকায়। সয়াবিন তেলও সরকার নির্ধারিত ১৭৫ টাকা লিটারে মিলছে। একইভাবে ভালো মানের সুগন্ধি চাল ১১৫-১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে, যা গত বছরের ঈদের আগের চেয়ে প্রায় ২০ টাকা কম।
অন্যদিকে প্যাকেট সেমাই বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। এছাড়া খোলাসেমাই প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২৪০, খোলা চিকন সেমাই ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মসলাজাতীয় পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের দর এখনো কম। প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। রসুনের দরে পরিবর্তন নেই। আগের মতোই আমদানি করা রসুনের কেজি ২০০ থেকে ২২০ এবং দেশি রসুনের কেজি ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়।
যদিও অস্বাভাবিক দর দেখা গেছে এলাচের। তবে বেশ কয়েক মাস ধরে এলাচের দাম বেশি। খুচরা ব্যবসায়ীরা মানভেদে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি করছেন ৪৫০০ থেকে ৫০০০ টাকা দরে। এছাড়া প্রতিকেজি জিরা ৬৫০ থেকে ৭৫০, লবঙ্গ ১৪০০ থেকে ১৬০০ এবং দারুচিনি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এনএইচ/এমএইচআর/এমএস