আইন, ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার রক্ষায় অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদকে ‘অনারারি ফেলোশিপ’ দিয়ে সম্মানিত করেছে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
Advertisement
বুধবার (২৬ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শফিকুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতির এই অর্জনটি বিরল এবং অত্যন্ত গর্বের। এই মর্যাদাপূর্ণ সম্মাননা সুপ্রিম কোর্ট এবং বাংলাদেশের বিচার বিভাগের জন্য এক বিরল এবং গৌরবময় মুহূর্ত এনে দিয়েছে।
তিনি আরও জানান, এই বিরল আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি শুধু প্রধান বিচারপতির ব্যক্তিগত সাফল্যের স্মারক নয়; বরং এটি বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রতি বৈশ্বিক পর্যায়ে যে সম্মান ও মর্যাদা প্রদর্শিত হচ্ছে তারও প্রতিফলন ও পরিচায়ক। নিঃসন্দেহে এ সম্মান বাংলাদেশের বিচার বিভাগের উৎকৃষ্টতা, বুদ্ধিবৃত্তিক দৃঢ়তা এবং ন্যায়বিচারের প্রতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনের স্বীকৃতির একটি নিদর্শন।
Advertisement
প্রধান বিচারপতিকে পাঠানো এক চিঠিতে ওয়াডাম কলেজের ওয়ার্ডেন রবার্ট হ্যানিং বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, ওয়াডাম কলেজের গভর্নিং বডি আপনাকে সম্মানসূচক ফেলোশিপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি আশা করি, আপনি এ সম্মাননা গ্রহণ করতে সম্মত হবেন।’
সম্মানসূচক এই ফেলোশিপ আজীবনের জন্য। একজন ফেলো হিসেবে প্রধান বিচারপতি কলেজের বিভিন্ন বার্ষিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবেন এবং নৈশভোজে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ পাবেন। পাশাপাশি তিনি কলেজের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ব্যবহার করতে পারবেন। ফেলো হিসেবে আলাদা কোনো দায়িত্ব তাকে পালন করতে হবে না।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সবচেয়ে বড় কথা হলো—এই ফেলোশিপের মাধ্যমে কলেজ আপনার সঙ্গে যুক্ত থাকার এবং আপনার অসাধারণ অর্জনগুলোকে স্বীকৃতি দেওয়ার সম্মান অনুভব করতে চায়।
যুক্তরাজ্যের এ বিশ্বখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়াডাম কলেজ থেকেই একসময় প্রথম শ্রেণিতে আইন শাস্ত্রের ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
Advertisement
ব্যাংক খাতের আইনজীবী হিসেবে পেশাজীবন শুরু করা সৈয়দ রেফাত আহমেদ অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইউএনএইচসিআরের সঙ্গেও কাজ করেছেন। তিনি ১৯৮৪ সালে ঢাকা জেলা আদালতে এবং ১৯৮৬ সালে হাইকোর্ট বিভাগে আইনজীবী হিসেবে নিবন্ধিত হন। ২০০৩ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। দুই বছর পর হাইকোর্ট বিভাগের স্থায়ী বিচারপতি হন।
গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নেন সৈয়দ রেফাত আহমেদ। সে সময় তিনি ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের জ্যেষ্ঠতম বিচারক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র সৈয়দ রেফাত আহমেদ পরে আইন পড়তে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ওয়াডাম কলেজে যান। সেখানে ডিগ্রি পাওয়ার পর মাস্টার্স ও পিএইচডি করেন যুক্তরাষ্ট্রের টাফ্টস ইউনিভার্সিটির ফ্লেচার স্কুল অব ল অ্যান্ড ডিপ্লোমেসিতে।
তার বাবা প্রয়াত সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল, যিনি পরে অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্বও পালন করেন। সৈয়দ রেফাতের মা জাতীয় অধ্যাপক সুফিয়া আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজের অধ্যাপক ছিলেন।
এফএইচ/এমকেআর/জেআইএম