আইন-আদালত

আসামিরা উপদেষ্টার কোম্পানির বড় কর্মকর্তা, মামলা প্রত্যাহারে হুমকি

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে গুলিতে নিহত সাংবাদিক মেহেদী হাসান হত্যা মামলার দুই আসামি অন্তর্বর্তী সরকারের একজন উপদেষ্টার কোম্পানিতে ঊর্ধ্বতন পদে এখনো চাকরি করছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের বাবা ও মামলার বাদী মোশাররফ হোসেন।

Advertisement

মোশাররফ হোসেনের অভিযোগ, মামলার দুজন আসামি খোরশেদ আলম ও আশরাফুল হক ক্ষমতার অপব্যবহার করে মামলা থেকে তাদের নাম প্রত্যাহারের জন্য তাকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন। তাদের হুমকিতে তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

বুধবার (১৯ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব অভিযোগ করেন। পরে সেখানে একটি মানববন্ধনও করেন মেহেদী হাসানের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন এবং শুভাকাঙ্ক্ষীরা।

আরও পড়ুন গুলিতে সাংবাদিক মেহেদীসহ ৭ জনের মৃত্যু: ৩০ হাজার জনের নামে মামলা শেখ হাসিনাসহ ৩৬ জনের নামে সাংবাদিক মেহেদীর বাবার হত্যা মামলা

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি একজন হতভাগ্য পিতা। একবুক কষ্ট নিয়ে আজ আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি। আপনারা জানেন, গত বছরে জুলাই মাসে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে আমার ছেলে ঢাকা টাইমস পত্রিকার সাংবাদিক মেহেদী হাসান আপনাদের মতোই সাংবাদিকতার দায়বদ্ধতা থেকেই যাত্রাবাড়ীতে নিউজ কাভারেজের জন্য সাহসিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ১৮ জুলাই বিকেলে যাত্রাবাড়ীর কাজলার মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের কাছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সন্ত্রাসী ও পুলিশের হামলা এবং গুলিতে মেহেদী হাসান নিহত হন। তার মৃত্যুতে আমরা যেমন সন্তানহারা হয়েছি, দেশও একজন সম্ভাবনাময় সাংবাদিককে হারিয়েছে।’

Advertisement

নিহত সাংবাদিক মেহেদীর বাবা মোশাররফ হোসেন

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ছেলের মৃত্যুর পর মামলা করতে গেলেও বারবার বাধার মুখে পড়তে হয়েছে। অবশেষে মামলা রুজু হলেও আমরা ন্যায়বিচার পাচ্ছি না। যাত্রাবাড়ী থানার মামলায় কয়েকজনকে গ্রেফতার দেখানো হলেও মামলার অন্য আসামিরা এখনো বহাল তবিয়তে বাইরে ঘুরে বেড়ালেও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না পুলিশ।’

মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘এ মামলার দুজন আসামি খোরশেদ আলম ও আশরাফুল হক বর্তমানে একজন উপদেষ্টার কোম্পানিতে ঊর্ধ্বতন পদে কর্মরত। তারা ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে বিভিন্ন সময় নানাভাবে হুমকি দিচ্ছেন তাদের নাম প্রত্যাহার করার জন্য। তাদের হুমকিতে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তা হুমকিতে রয়েছি।’

‘এ অবস্থায় আমি সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমার সন্তানের হত্যাকারীদের উপযুক্ত শাস্তির জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি। আমার সন্তান আপনাদের মতোই একজন সাংবাদিক ছিলেন। তার আজ আপনাদের কাতারেই দাঁড়িয়ে থাকার কথা ছিল। কিন্তু ভাগ্যের পরিহাসে তিনি আজ অন্ধকার কবরে শুয়ে।’

Advertisement

কান্নাজড়িত কণ্ঠে মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ঈদ সামনে। তাই ছেলে ও তার সন্তানদের নিয়ে যখন আমাদের ঈদ আনন্দ করার কথা ছিল, সেখানে আমরা তার হত্যার বিচার চাইতে আপনাদের কাছে দাঁড়িয়েছি।’

এএএইচ/ইএ/এএসএম