একদফার আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট নড়াইলের চিত্রাসেতু এলাকায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় নেতৃত্ব দেন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ক্যাডার রাকিবুল ইসলাম রকি (২৮)।
Advertisement
এ হামলার ছবি ও ভিডিও ফেসবুকসহ গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে গত ১০ ফেব্রুয়ারি নড়াইল পৌরসভার ভওয়াখালীর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার হন তিনি। রকি মিকাইলের ছেলে। গ্রেফতারের পরদিন আসামিকে আদালতে উপস্থিত করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন নড়াইলের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানা। সেদিনই রকিকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজ থেকে বিবৃতিও দেওয়া হয়।
বুধবার (১৯ মার্চ) রকির জামিন আবেদনের ওপর শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দিয়েছেন নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ নিগার সুলতানা। এদিন আসামিপক্ষের আইনজীবী তার জামিন চেয়ে শুনানি করেন। অন্যদিকে জামিনের বিরোধিতা করেন রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল হক।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় নেতৃত্বদানের ছবি ও ভিডিও ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও জজকোর্টেই রকির জামিন মেলায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকে। এর ফলে নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য হয়েও কারাগারে যাওয়ার ৩৭ দিনের মাথায় জামিন মিললো তার।
Advertisement
এ প্রসঙ্গে নড়াইলে সংঘটিত ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া ফারহান সাদিক মুন্না নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই আসামি রকি গত ৪ আগস্ট পুলিশকে ডিঙিয়ে সামনে গিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সংগঠিত করে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা আমাদের ওপর বৃষ্টির মতো গুলি ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে সেদিন। রকির হামলার ছবি ও ভিডিও ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও সে নিম্ন আদালতেই (জজকোর্ট) জামিন পেয়ে গেলো। অথচ, আগেকার দিনে আমরা দেখেছি হাইকোর্টে যাওয়া ছাড়া বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন মিলত না।’
এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হক বলেন, আমরা আজ আসামি রকির জামিনের বিরোধিতা করি। তবে শুনানি শেষে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছেন।
রকিকে গ্রেফতার দেখানো মামলার সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট নড়াইলের চিত্রাসেতু এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছিল ছাত্র-জনতা। এ সময় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও মহিলা লীগের নেতাকর্মীরা নানা ধরনের দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী আহত ও গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুর রহমান পলাশ বাদী হয়ে নড়াইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জানা গেছে, নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ক্যাডার রকি মূলত নড়াইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাশরাফী বিন মোর্ত্তজার গ্রুপে রাজনীতি করতেন। তিনি নড়াইল পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী নাহিদ ইকবাল পায়েলের ঘনিষ্ঠ।
Advertisement
এমআইএন/এমআরএম/এমএস