‘এবার রোজায় জিনিস পাতির দাম এত কম যে, কোনোবারই এরকম ছিল না। বিগত বছরগুলোতে রোজায় জিনিস পাতিতে আগুন লাগছিল। এবারে রোজার মতো শান্তি আগে পাই নাই।’
Advertisement
গাইবান্ধায় এবারের রমজানে বাজার পরিস্থিতি নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন শ্রমিক ওহেদুল ইসলাম। তার মতো আরও অনেকে দ্রব্যমূল্য নিয়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, গতবছরও রমজানে নিত্যপণ্যের দামে অস্থির ছিলেন তারা। তবে এবার সেই অবস্থা নেই, বিশেষ করে কাঁচাবাজারে সাশ্রয়ী মূল্যে মিলছে পণ্য।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) গাইবান্ধা শহরের পুরাতন বাজার, হকার্স মার্কেটসহ জেলার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা ক্রয়ক্ষমতা অনুযায়ী তাদের যা প্রয়োজন, সেসব পণ্য কিনছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রতিবছর রমজানে শাক-সবজি ও বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের চাহিদা থাকে দ্বিগুণ। চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দামও বাড়ে। কিন্তু চলতি রমজানে সেই দামের প্রভাব পড়েনি। বাজারে ব্যাপক সরবরাহ থাকায় দাম রয়েছে অনেকটা কম।
Advertisement
বর্তমানে প্রতি কেজি আলু ১৫ টাকা, বেগুন ১৫-২০ টাকা, টমেটো ১০ টাকা, সিম ২৫ টাকা, বাঁধাকপি ৩ টাকা, ফুলকপি ১০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, করলা ৮০, গাজর ২০ টাকা, পেঁপে ১৫ টাকা, লাউ ১০ থেকে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা, শসা ২০ টাকা, পটল ৮০, কাঁচামরিচ ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৩০ টাকা, আদা ১২০ টাকা, রসুন ৭০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা, চিনি ১২০ টাকা, মসুর ডাল ১০০ টাকা, ব্রয়লার মাংস ১৭০ টাকা, কর্ক মুরগি ২৪০ টাকা ও ডিম ১০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মাছ-মাংসের দামও স্থিতিশীল রয়েছে।
শহরের পুরাতন বাজারে আসা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের গড়দিঘির রিকশাচালক হাসেম আলী বলেন, ‘প্রত্যেক বছর রোজা এলেই জিনিসের দাম বাড়ে। এবার আর সেভাবে বাড়ে নাই। সব জিনিস কেনা যাচ্ছে।’
ছালাম মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘রোজা লাগলেই ব্যবসায়ীরা গুদামে মজুত করে। এবার মনে হয় সেভাবে পারে নাই। তাই সব জিনিসের দাম কম। দাম সারাবছর এমন থাকলে গরিব মানুষ বাঁচবে।’
শহরের পুরাতন বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী হায়দার আলী বলেন, সব কিছুর দাম কম। দাম কম হওয়ায় মানুষ কিনছে খুব।
Advertisement
মসলা, ছোলা, চিনি ও ডাল বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। এতে ভোক্তারা নির্বিঘ্নে কিনতে পারছেন বলে মন্তব্য করছেন শহরের হকার্স মার্কেটের মুদির দোকানদার আনিছুর রহমান।
গাইবান্ধা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক পরেশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, রমজানকে ঘিরে বাজারে সিন্ডিকেট ঠেকাতে তৎপর। কেউ যাতে ভোগ্যপণ্যের কৃত্রিম সংকট করতে না পারে সে বিষয়ে আমাদের তদারকি অব্যাহত রয়েছে।
এ এইচ শামীম/জেডএইচ/জিকেএস