আবারও টানা দরপতনের সঙ্গে লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। প্রতিনিয়ত লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে কমছে লেনদেনের গতি।
Advertisement
আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতয় সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (৪ মার্চ) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। এতে করে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। বাজারটিতে ১৭ কার্যদিবসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে।
ডিএসইর মতো অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে সিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। এর মাধ্যমে টানা পাঁচ কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার।
টানা চার কার্যদিবস দরপতনের পর মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। লেনদেনের প্রথম এক ঘণ্টা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার ধারা অব্যাহত থাকে। ফলে সূচকও ঊর্ধ্বমুখী থাকে।
Advertisement
কিন্তু প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যেতে থাকে। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় নাম লেখায়। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে দরপতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। ফলে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে মাত্র ৬৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ২৬৭টির। আর ৬৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৬ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ১৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৩৮ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৮১ কোটি ৭৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৪৩ কোটি ১৮ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ৯ ফেব্রুয়ারির পর ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হলো।
Advertisement
এ লেনদেনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লিন্ডে বাংলাদেশের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকার। ৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে শাইনপুকুর সিরামিক।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ব্র্যাক ব্যাংক, কেডিএস এক্সেসরিজ, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, আইএফআইসি ব্যাংক এবং লাভেলো আইসক্রিম।
অন্য শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৮২ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৭ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৯টির এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
এমএএস/এএমএ