কিশোর গ্যাংয়ের কুখ্যাত গডফাদার ও শীর্ষ সন্ত্রাসী শিহাব হোসেন শয়ন ওরফে আরাফাতকে গ্রেফতার করতে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শেরেবাংলা নগর ও আদাবর এলাকায় অভিযান চালিয়েছে সেনাবাহিনী। সোমবার (৩ মার্চ) মধ্যরাতে রাজধানীর মানিকনগর এভিনিউয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
Advertisement
এসময় শয়নের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তার দুই সহযোগী হৃদয় এবং সোহাগকেও গ্রেফতার করা হয়। তবে প্রধান সহযোগী এবিএম মাহমুদুল বশ্রী ওরফে জন পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ৪৬ পদাতিক ব্রিগেড-এর ২৩ ইস্ট বেঙ্গল পদাতিক ব্যাটেলিয়ান সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডিএমপির তেঁজগাও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান বলেন, বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের দমন নিপীড়নে রাজধানীর আদাবর থানায় দায়ের করা একটি মামলায় শয়নকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হবে। তার বিরুদ্ধে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাসহ বিভিন্ন থানায় আরও একাধিক মামলা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে তার নামে থাকা বাকি মামলাগুলোতে শোন অ্যারেস্ট দেখানো হবে।
Advertisement
জানা গেছে, শিহাব হোসেন শয়ন মিরপুর মডেল থানাধীন ১৩ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা, ট্রিপল মার্ডার, ধর্ষণ, গণধর্ষণ, চাঁদাবাজি এবং অপহরণসহ অন্তত ১০টিরও বেশি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। গত জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের দমন-পীড়নের অভিযোগে ৫ আগস্টের পর তার বিরুদ্ধে আরও চারটি মামলা করা হয়েছে। এরমধ্যে মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলাও রয়েছে।
শিহাব হোসেন শয়ন ওরফে আরাফাত মিরপুরের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহাদাতের অন্যতম সহযোগী। ঢাকা উত্তরের ২৮ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফোরকান এবং রাষ্ট্রনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি ঢাকা থেকে শেরপুরে পালিয়ে যান। সম্প্রতি তিনি আগারগাঁও এলাকায় তার সন্ত্রাসী বাহিনীকে পুনর্গঠিত করতে ঢাকায় ফেরেন।
শয়নের বিরুদ্ধে যত মামলাগ্রেফতার শয়নের বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের পর ছাত্র-জনতার ওপর দমন-পীড়নের দায়ে চারটি মামলা দায়ের করা হয়। এরমধ্যে মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলার নম্বর-২৩, তারিখ- ২৩-৯-২৪, আদাবর থানায় গত ৩০ নভেম্বর ও ১০ ডিসেম্বর দায়ের করা মামলা নম্বর ১৮ ও ৩ এবং ভাটারা থানায় ২৮ জানুয়ারি দায়ের করা মামলা নম্বর ৫১।
এছাড়া শয়নের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যার দায়ে মিরপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। ২০০৯ সালে আরও একটি হত্যা মামলা, ২০১৩ সালে শিল্পি (ডাক নাম অধরা) নামের একটি মেয়েকে গণধর্ষণ (আলোচিত শিল্পি ধর্ষণ), ২০১৯ সালে কুপিয়ে জখম করে ছিনতাইয়ের ঘটনায় একই থানায় আরও একটি মামলা হয়। মিরপুর মডেল ২০২১ ও ২৩ সালে একই থানায় ভাঙচুর, লুটপাট, চাঁদাবাজিসহ দুটিসহ আরও বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। এছাড়া রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানায় অপহরণ, শেরেবাংলা নগর থানায় বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা রয়েছে।
Advertisement
জানা গেছে, শিহাব হোসেন শয়নকে অবৈধ অস্ত্রসহ নিজ বাসা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আটক করে। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। যে মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
টিটি/এমকেআর/এমএস