দেশজুড়ে

এবারও আইডিয়া’র ঠান্ডা পানিতে তৃষ্ণা মিটছে রোজাদারদের

রমজান এলেই রোজাদারদের জন্য বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি নিয়ে হাজির হয় যশোরের সমাজকল্যাণমূলক সংগঠন ‘আইডিয়া’। ২০১৯ সাল থেকে শহরের খড়কি এলাকায় রমজানে মাসব্যাপী বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করে আসছে সংগঠনটি। ওই এলাকার রোজাদারদের জন্য বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি প্রাপ্তিতে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে সংগঠনটি।

Advertisement

প্রতিবছরের মতো এবারও প্রথম রমজানেই পানি নিয়ে হাজির হয়েছেন আইডিয়ার সেচ্ছাসেবকরা। রোববার (২ মার্চ) বিকেলে প্রথম রমজানে শহরের খড়কি এলাকায় সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এবারের বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।

আয়োজকরা জানান, প্রতিবছরের ধারাবাহিকতায় এবারের রমজানেও পানি বিতরণ শুরু হয়েছে। খড়কি এলাকার আঞ্জুমানে খালেকিয়া এতিমখানার সামনে মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এবারের পানি বিতরণ প্রকল্প শুরু হয়েছে। এসময় খড়কি মসজিদের ইমামসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি ও আইডিয়া সমাজকল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা হামিদুল হক শাহীন উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা হামিদুল হক বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে আইডিয়ার স্বেচ্ছাসেবকরা এ কাজ করছেন। এলাকার বহু মানুষ রমজানে এই পানির অপেক্ষা করেন। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত মানুষের পরিবারে রেফ্রিজারেটর না থাকায় তারা এখান থেকে ঠান্ডা পানি নিয়ে পান করেন। এছাড়া দোকানদার, দিনমজুর ও মেসে থাকা শিক্ষার্থীদের কাছে এ প্রকল্প বিশেষ আবেদন সৃষ্টি করে। স্বেচ্ছাসেবকরা ইফতারের আগে আইডিয়া মোড় থেকে খড়কি পীর বাড়ি ও হাজামপাড়া এলাকা পর্যন্ত পানি সরবরাহ করেন।’

Advertisement

কার্যক্রমের সমন্বয়ক দীপ্ত সিংহ বলেন, ‘আমি একজন সনাতন ধর্মাবলম্বী। কিন্তু রোজাদারদের মধ্যে বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি বিলিয়ে দেওয়ার এই ব্যাপারটি যেন আমার আত্মার সঙ্গে জড়িয়ে গেছে। ছোট শিশু থেকে বয়োবৃদ্ধ মুরব্বিরাও আমাদের পানির ভ্যান দেখলে বোতল, ঘড়া হাতে ছুটে আসেন। পানি নিয়ে তারা তৃপ্তির হাসি দেন এবং আবারো পরের দিন ইফতারের আগে এই পানির অপেক্ষা করেন। এটাই আইডিয়ার প্রাপ্তি।’

পানি নিতে আসা খড়কি এলাকার মো. নাসিম বলেন, ‘বাসায় ফ্রিজ নেই। ফলে সারাদিন রোজার পর বিশুদ্ধ ঠান্ডা পানি পাওয়া দুর্লভ আমাদের কাছে। কিন্তু আইডিয়া বিগত কয়েক বছর আমাদের সেই চিন্তা দূর করছে। আমরা ইফতারের আগে এই পানির জন্য অপেক্ষা করি।’

মেসে থাকা শিক্ষার্থী আমেনা বলেন, ‘আমি এম এম কলেজের শিক্ষার্থী। অন্তত বিশ রোজার আগে বাসায় যাওয়া হয় না। সেই পর্যন্ত ঠান্ডা পানির উৎস বলতে আইডিয়ার এই পানি। রোজার সময় মেসের সবাই অপেক্ষা করি এই পানি নেওয়ার জন্য।’

স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, এই প্রকল্পে শিক্ষার্থীরা সাবমারসিবল পাম্প থেকে উত্তোলন করা বিশুদ্ধ পানি বিশুদ্ধ বরফ দ্বারা শীতলীকরণ করে বিতরণ করেন। তারা বিনামূল্যে পূর্ব নির্ধারিত ভিন্ন স্পটে চাহিদা মাফিক পুরো রমজান মাসব্যাপী সরবরাহ করে থাকেন। কখনো হঠাৎ পানির পরিবর্তে ঠান্ডা শরবত বিতরণ করেন তারা। এতে পানি নিতে আসা সবাই শরবত পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।এইচআরএম

Advertisement

মিলন রহমান/এমএন/জিকেএস