পবিত্র রমজান মাসের শুরুতেই গাজায় সব ধরনের ত্রাণ ও পণ্যের প্রবেশ স্থগিত করছে ইসরায়েল। একইসঙ্গে তারা হুমকি দিয়েছে, হামাস যদি ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর প্রস্তাব গ্রহণ না করে, তবে এর ‘পরিণতি’ ভোগ করতে হবে।
Advertisement
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর রোববার (২ মার্চ) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, গাজা উপত্যকায় সব ধরনের পণ্য ও ত্রাণ প্রবেশ স্থগিত থাকবে।
আরও পড়ুন>>
জিম্মিদের ফেরত পেয়েও ফিলিস্তিনি বন্দিদের ছাড়লো না ইসরায়েল ২৬৬ বার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ১৩২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল গাজায় ফের হামলার প্রস্তুতি ইসরায়েলের, পশ্চিম তীরেও পাঠিয়েছে ট্যাংকবিবৃতিতে আরও বলা হয়, জিম্মিদের মুক্তি ছাড়া কোনো যুদ্ধবিরতি মেনে নেবে না ইসরায়েল। হামাস যদি তাদের অবস্থানে অনড় থাকে, তবে আরও পরিণতি ভোগ করতে হবে।
Advertisement
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়ে একে ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে হামাস। ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ গোষ্ঠীটি বলেছে, এটি উভয় পক্ষের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করছে, যার প্রথম ৪২ দিনব্যাপী ধাপ সম্প্রতি শেষ হয়েছে।
নেতানিয়াহুর দপ্তর জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফের প্রস্তাব অনুসারে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের একটি প্রস্তাবিত সম্প্রসারণ করা হবে, যা রমজান থেকে শুরু হয়ে মধ্য এপ্রিলের পাসওভার পর্যন্ত চলবে।
ইসরায়েলের বিবৃতি অনুযায়ী, এই সম্প্রসারণ কার্যকর হলে প্রথম দিনেই গাজায় বন্দি অর্ধেক জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে এবং একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছানো গেলে বাকিদের মুক্তি দেওয়া হবে।
হামাস রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, মানবিক সহায়তা স্থগিতের সিদ্ধান্ত সস্তা ব্ল্যাকমেইল, যুদ্ধাপরাধ এবং (যুদ্ধবিরতি) চুক্তির বিরুদ্ধে সরাসরি অভ্যুত্থান।
Advertisement
ফিলিস্তিনি এই গোষ্ঠী বরাবরই যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপে প্রবেশের পক্ষে, যা অবশিষ্ট সব জিম্মির মুক্তি এবং যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় আরও স্থায়ীভাবে সংঘর্ষ বন্ধের পথ সুগম করবে।
হামাস ‘মধ্যস্থতাকারী ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি’ আহ্বান জানিয়েছে, তারা যেন ইসরায়েলের ওপর চাপ প্রয়োগ করে এবং গাজায় বসবাসকারী ২০ লাখের বেশি মানুষের বিরুদ্ধে নেওয়া ‘শাস্তিমূলক ও অনৈতিক পদক্ষেপ’ বন্ধ করে।
১৫ মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধ গাজায় মারাত্মক মানবিক সংকট সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘ বারবার সতর্ক করেছে, যুদ্ধবিরতির আগে অঞ্চলটি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ছিল। তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর সহায়তা প্রবেশ কিছুটা বেড়েছিল।
সূত্র: এএফপিকেএএ/