একুশে বইমেলা

কখনো অমৌলিক লিখবো, এতটা অধঃপতন যেন আমার না হয়: ইকবাল খন্দকার

ইকবাল খন্দকার একাধারে কথাসাহিত্যিক, টিভি উপস্থাপক, গীতিকার, নাট্যকার, টিভি স্ক্রিপ্ট লেখক। তবে কথাসাহিত্যিক ও উপস্থাপক হিসেবে বেশি পরিচিত। অনার্স-মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তিনি যখন অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র; তখনই সিদ্ধান্ত নেন লেখালেখির বাইরে কিছু করবেন না। লেখকজীবনই হবে তার কর্মজীবন। সেই লক্ষ্যে এখনো অবিচল আছেন। এগিয়ে যাচ্ছেন আপন গন্তব্যে। এ পর্যন্ত তার লেখা প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ১৪০টি।

Advertisement

সম্প্রতি তার লেখালেখি, উপস্থাপনা ও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কথাশিল্পী ও সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন মাহমুদ—

জাগো নিউজ: বইমেলা নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে নিয়মিত উপস্থাপনা করছেন। বইও এসেছে বিভিন্ন স্টলে। সবমিলিয়ে আপনার ব্যস্ততা কেমন?ইকবাল খন্দকার: জি, বইমেলা নিয়ে একটা টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করছি আমি। গাজী টিভিতে প্রচার হচ্ছে ‘আলোঘর প্রকাশনা বইমেলা প্রতিদিন’ নামের অনুষ্ঠানটি। প্রতিদিন রাত ৮টা ৩০ মিনিটে প্রচার হয়। আর অনুষ্ঠানটি আমি উপস্থাপনা করছি এ বছরসহ নয় বছর ধরে। হয়তো বিভিন্ন সময়ে টিভি চ্যানেল পরিবর্তন হয়েছে। তবে উপস্থাপক হিসেবে আমি ছিলাম এবং আছি। উপস্থাপনা, নতুন ১১টি বইয়ের প্রচার-প্রচারণা ইত্যাদি নিয়ে বেশ ব্যস্ত সময় পার করছি।

জাগো নিউজ: এবার এগারোটি বই এসেছে আপনার। এতগুলো পাণ্ডুলিপি তৈরির ক্ষেত্রে আপনার কৌশল কেমন ছিল?ইকবাল খন্দকার: হ্যাঁ, আমার নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে ১১টি। বইগুলো হলো- ১. সুন্নত (দেশ পাবলিকেশন্স, স্টল: ৬৮৬-৬৮৮) ২. যখন তার ফাঁসির রায় হলো (মেধা পাবলিকেশন্স, স্টল: ২৪১-২৪২) ৩. নিশি ঘাতক (অনন্যা, প্যাভিলিয়ন: ২৭) ৪. রহস্যময় রেলব্রিজ (কথাপ্রকাশ, প্যাভিলিয়ন: ২৫) ৫. খুনির মুখোমুখি (অনিন্দ্য প্রকাশ, স্টল: ৭২৫-৭২৮) ৬. কবিরদের নিখোঁজ রহস্য (পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স, প্যাভিলিয়ন: ২৯) ৭.ভুতুড়ে বারান্দা (কথাপ্রকাশ, প্যাভিলিয়ন: ২৫) ৮. নিমপুরের তেরো খুন (শব্দশিল্প, স্টল: ৩৪৬-৩৪৯) ৯. মচমচে হাসি (আদিগন্ত প্রকাশন, স্টল: ৯৩৬-৯৩৮ শিশু চত্বর) ১০. আমার কলামদানি-২ (মায়ান প্রকাশনী, স্টল: ৮১০) ১১. তরু কাকার সরু বুদ্ধি (আলোঘর প্রকাশনা, স্টল: ৫০৮-৫১০)। পাণ্ডুলিপি তৈরির ক্ষেত্রে আমার কৌশল একটাই, মৌলিক একটা গল্প উপস্থাপন করা। অবশ্যই শুদ্ধ শব্দে, শুদ্ধ বাক্যে।

Advertisement

আরও পড়ুনকালু মিয়ার পিএইচডি: সামাজিক ও সৃজনমুখর আখ্যানপাওয়া যাচ্ছে সালাহ উদ্দিন মাহমুদের ‘বিষণ্ন সন্ধ্যা কিংবা বিভ্রম’

জাগো নিউজ: এ পর্যন্ত ১৪০টি মৌলিক বই প্রকাশিত হয়েছে আপনার। এটাকে বিরল ঘটনা বলতেই পারি। ফলে মৌলিকতা বজায় রাখার বিষয়টি যদি খোলাসা করতেন।ইকবাল খন্দকার: আমি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ, কখনোই অমৌলিক কিছু লিখবো না। তাই গর্বের সঙ্গে বলি, আমার ১৪০টি বইয়ের মধ্যে ১৪০টিই মৌলিক। আর আমার একটা স্লোগান আছে, ‘অনুকরণ-অনুসরণ কিংবা ছায়া অবলম্বন নয়; জয় হোক মৌলিক লেখার’। আর আমি যতদিন লিখবো, মৌলিক লেখাই লিখবো। কখনো অমৌলিক লেখা লিখবো, এতটা অধঃপতন যেন আমার না হয়।

জাগো নিউজ: গণ-অভ্যুত্থান বা বিপ্লব পরবর্তী এবারের বইমেলা কেমন হচ্ছে বলে মনে করেন?ইকবাল খন্দকার: বিপ্লব পরবর্তী বইমেলা জমজমাট। যারা মনে করেছিলেন মেলা জমবে না; তাদের হতাশ করে দিয়ে মেলা জমেছে এবং জমছে।

জাগো নিউজ: মানোত্তীর্ণ বই এবং বইয়ের মূল্য সম্পর্কে কী বলবেন? কেমন বই প্রকাশ হওয়া উচিত?ইকবাল খন্দকার: আমি মনে করি, বই প্রকাশ হওয়া উচিত। কোনটা মানোত্তীর্ণ হবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। আর বইয়ের মূল্য নিয়ে যদি বলতে হয়, সব জিনিসের দামই তো এখন বেশি। তাহলে ৩০০-৪০০ টাকা কেন হবে না একটা বইয়ের দাম?

জাগো নিউজ: একজন লেখক হিসেবে আমাদের দেশের প্রকাশনা শিল্পের সমস্যা এবং সম্ভাবনা সম্পর্কে আপনার অভিমত কী?ইকবাল খন্দকার: আমাদের দেশীয় বইয়ের প্রডাকশন দিনদিন কেবল উন্নতই হচ্ছে। এটা আমাদের প্রকাশনা শিল্পের অত্যন্ত ইতিবাচক একটা দিক। মোটকথা, প্রকাশনা শিল্প এগিয়ে যাচ্ছে।

Advertisement

জাগো নিউজ: আপনার লেখালেখি নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? আপনার পাঠকের জন্য কী ভাবছেন?ইকবাল খন্দকার: লেখালেখি নিয়ে আমার একটাই পরিকল্পনা, জীবনের শেষ দিনটি পর্যন্ত মৌলিক লেখা লিখে যেতে চাই। পাঠকের জন্য আমার ভাবনা হলো, প্রতিটা বইয়ে আমি পাঠককে চমৎকার একেকটা মৌলিক গল্প উপহার দিতে চাই। আমি চাই, দেশে মৌলিক গল্পের পাঠক তৈরি হোক।

এসইউ/জেআইএম