ফরিদুল ইসলাম নির্জনের জন্ম ১৯৮৭ সালের ১০ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। হিসাববিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সরকারি বাঙলা কলেজ থেকে। বর্তমানে আইসিএমএবিতে সিএমএ কোর্সে অধ্যয়নরত। শৈশব থেকেই পড়ার প্রতি তুমুল আগ্রহ। সেই আগ্রহ থেকেই নিয়মিত লিখতে থাকেন। লেখালেখির হাতেখড়ি কবিতা হলেও কথাসাহিত্য নিয়েই এগিয়ে চলেছেন। সাহিত্যচর্চার স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন একাধিক পুরস্কার ও সম্মাননা। তার শিশু-কিশোর গল্পগন্থ ‘স্কুল মাঠে ভূতের মেলা’; রম্যগল্পের বই ‘প্রেমের নাম হাসপাতাল’; গল্পের বই ‘সে শুধু আড়ালে থাকে’ এবং উপন্যাস ‘আজো খুঁজি তারে’, ‘আশ্রয়’, ‘আপনজন’, ‘জীবনবিলাস’।
Advertisement
বইমেলা, বই প্রকাশ ও বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন কবি ও কথাশিল্পী সালাহ উদ্দিন মাহমুদ—
জাগো নিউজ: এবারের বইমেলা সম্পর্কে কিছু বলুন—ফরিদুল ইসলাম নির্জন: এবারের শুরুটা বেশ অগোছালো ছিল। স্টল সাজানো, ওয়াশরুমসহ অনেক কিছুই দেরিতে হয়েছে। প্রথমদিকে নিরাপত্তা ছিল না। ইচ্ছেমতো মানুষ প্রবেশ করতো। তবে এখন আগের মতো নেই। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কিছু ঘটনায় মানুষের ভেতর ভয়-ভীতি কাজ করেছে। তবে সবার উপস্থিতি আবার প্রাণবন্ত করেছে।
জাগো নিউজ: অনেকেই বলেন তরুণদের বই চলে না—এ ব্যাপারে আপনার অভিমত?ফরিদুল ইসলাম নির্জন: তরুণদের বই চলে না—এ কথার সাথে আমি পুরোপুরিভাবে দ্বিমত। আমার কাছে মনে হয়, এখন সবচেয়ে বেশি বই বিক্রি হচ্ছে তরুণদের। তরুণ লেখকদের নিয়ে প্রকাশকরা নতুন স্বপ্ন দেখছেন। বর্তমান তরুণরা সাহিত্যের বিপ্লব ঘটিয়েছেন। বাংলা সাহিত্যের নতুন বাঁক বিনির্মাণ করেছেন।
Advertisement
জাগো নিউজ: তরুণ লেখকদের বই প্রকাশে প্রকাশকদের আগ্রহ বাড়ছে নাকি কমছে?ফরিদুল ইসলাম নির্জন: অবশ্যই বাড়ছে বলে আমার মনে হয়। সাহিত্যের ভাষা, প্রেক্ষাপট, বর্ণনা পরিবর্তন করে ফেলেছে। আগামীতে আরও বাড়বে। আমার কাছে মনে হয়, পাঠক তরুণদের বই বেশি সংগ্রহ করছেন।
আরও পড়ুন পাওয়া যাচ্ছে সালাহ উদ্দিন মাহমুদের ‘বিষণ্ন সন্ধ্যা কিংবা বিভ্রম’ বইমেলায় শফিক হাসানের ভ্রমণগ্রন্থ ‘দেখি বাংলার মুখ’জাগো নিউজ: এবারের মেলায় আপনার কী বই এসেছে?ফরিদুল ইসলাম নির্জন: এবারের মেলায় এসেছে ‘আগুনজনম’ উপন্যাসটি। যাতে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটকে চিত্রায়ন করা হয়েছে। শুরু হয়েছে ১৯৮৮ সালের বর্ণনা দিয়ে। বর্ণনায় উঠে এসেছে আটাশি সালের বন্যার অসংখ্য দৃশ্য। গ্রাম ও শহরের দুটি পরিবারকে উপজীব্য করে তার চারপাশের মানুষের গল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে উপন্যাসটি। বইটি পাওয়া যাচ্ছে ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশের ১৯ নম্বর প্যাভিলিয়নে।
জাগো নিউজ: অনুপ্রাণন পাণ্ডুলিপি পুরস্কার পেয়েছেন গল্পগ্রন্থের জন্য; সে সম্পর্কে কিছু বলুন—ফরিদুল ইসলাম নির্জন: মানবজনম যেন গল্পের মোড়কে আবদ্ধ। প্রতিটি জীবনে কিছু গল্প থাকে। কিছু গল্প প্রকাশ করা যায় আবার কিছু গল্প হৃদয়ের গহীনে অপ্রকাশিত হয়ে জমা থাকে। যা বলা যায় না। জীবনপাঠে এই অধ্যায়ের বলা বা না-বলা গল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে ‘সে শুধু আড়ালে থাকে’ বইটি। অনুপ্রাণন তরুণ পাণ্ডুলিপি প্রতিযোগিতা ২০২৪ বিজয়ী বইটির প্রতিটি গল্প জীবনের সঙ্গে মিলে যাবে। এতে ১২টি গল্প ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গিকে উপস্থাপিত হয়েছে।
জাগো নিউজ: এমন কোনো চরিত্রের কথা মনে পড়ে? যে চরিত্রের প্রেমে পড়েছিলেন—ফরিদুল ইসলাম নির্জন: বই পড়তে গিয়ে অনেক চরিত্রের প্রেমে পড়েছি। তবে হেনরি রাইডার হ্যাগার্ডের ক্লিওপেট্রা উপন্যাস পড়ে প্রেমে পড়েছিলাম। হার্মেসিস হয়ে ক্লিওপেট্রার সাথে মিশরে পিরামিডে প্রবেশ করেছি। চাবি ঘুরিয়ে পিরামিডের তালা খুলেছি। মনে হয়েছে জীবন্ত। যদিও চরিত্রটি রহস্যময়।
Advertisement
জাগো নিউজ: বইমেলার পাঠকদের জন্য কিছু বলুন—ফরিদুল ইসলাম নির্জন: বইমেলার সবকিছু নির্ভর করে পাঠকের উপস্থিতির ওপর। তাদের বই কেনার ওপর। তাই পাঠকের জন্য বলবো, আপনারা দলবেঁধে বইমেলায় আসুন। ইচ্ছেমতো বই কিনুন। বইমেলাকে প্রাণবন্ত করতে আপনার উপস্থিতির ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু।
এসইউ/জিকেএস