‘আমার ঘরের দুটো দরজাই তারা বাইরে থেকে আটকে রেখে আগুন দেয়। আমার ঘুম ভাঙার পরে উঠে দেখি চারদিকে আগুন। ওরা আমাদের পরিবারসহ মেরে ফেলার উদ্দেশ্যে এই কাজ করেছে।’
Advertisement
এভাবেই নিজ বাড়ি পুড়ে যাওয়ার কথা বলছিলেন জুলাই আন্দোলনে সম্মুখসারিতে থাকা জনপ্রিয় কনটেন্ট ক্রিয়েটর নুরুজ্জামান কাফির বাবা মাওলানা এ বি এম হাবিবুর রহমান। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ বাড়ির ধ্বংসস্তূপের সামনে বসে এ কথা বলেন তিনি।
কাফির বাবা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘রাত দেড়টার পরপর হঠাৎ আমার ঘরের চারদিকে দেখি আগুন। দ্রুত সামনের দরজা খুলতে গিয়ে দেখি বাইরে থেকে আটকানো। সামনের দরজা খুলতে না পেরে দ্রুত পেছনের দরজায় গিয়ে দেখি সেটাও আটকানো। পরে অনেক কষ্ট করে পেছনের দরজা খুলতে সক্ষম হই। কোনোমতে আমার স্ত্রী, আমার ছেলের দুই বাচ্চা (একটির বয়স ৪০ দিন) নিয়ে বের হয়েছি। আর কিছু বাঁচানো সম্ভব হয়নি। হাঁস-মুরগিসহ রান্নাঘর, সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।’
আরও পড়ুন: দুর্বৃত্তের আগুনে মধ্যরাতে পুড়ে ছাই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর কাফির বাড়িএ ঘটনায় আগামী সাতদিনের মধ্যে পুনর্বাসন ও দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতারে আলটিমেটাম দিয়েছেন কাফি। তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে যদি কথা না বলতাম, রাজপথে মিছিল না করলে আজ কিছুই হতো না। দেশের পক্ষে কথা বলার কারণে টার্গেটে পড়ে আজ আমার এ অবস্থা হলো। সব শেষ হয়ে গেলো।’
Advertisement
আক্ষেপ প্রকাশ করে কাফি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার বসালাম, সে সরকারও আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারলো না। আমি এ সরকারকে সাতদিনের আলটিমেটাম দিয়েছি। সাতদিনের মধ্যে আমার এ পোড়ানো ময়লা সরিয়ে ঘর পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু করতে হবে। ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের গ্রেফতার করতে হবে। তা নাহলে ছাত্রসমাজ রাজপথে এর বিচারে নেমে পড়বে। অন্যথায় আমি একাই বিচারের দাবিতে বিকল্প ব্যবস্থা তৈরি করবো।’
আরও পড়ুন: পুনর্বাসন-দুষ্কৃতকারীদের গ্রেফতার চেয়ে কাফির আলটিমেটামপটুয়াখালী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কলাপাড়ার সার্কেল) বিমল কৃষ্ণ মল্লিক বলেন, এ ঘটনায় আইনি প্রক্রিয়া চলমান। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।
নূরুজ্জামান কাফির বাড়ি পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার রাজপাড়া গ্রামে। তার বাবা রাজপাড়া দ্বীন এ এলাহী দাখিল মাদরাসার সুপার। তারা দুই ভাই। করোনার সময় মশার কয়েল ও প্রাক্তনকে নিয়ে করা কনটেন্টে ভাইরাল হন কাফি। পরবর্তী সময়ে জুলাই আন্দোলনে শেখ হাসিনার পতনেও বেশ ভূমিকা রেখেছেন।
আসাদুজ্জামান মিরাজ/এসআর/জেআইএম
Advertisement