দেশজুড়ে

টাঙ্গাইলে হেফাজতে ইসলামের বাধায় স্থগিত লালন স্মরণোৎসব

হেফাজতে ইসলামের আপত্তির মুখে টাঙ্গাইলের মধুপুরে স্থগিত হয়ে গেছে লালন স্মরণোৎসব। লালন সাঁইয়ের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে মধুপুর উপজেলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় স্মরণোৎসব হওয়ার কথা ছিল।

Advertisement

মধুপুর লালন সংঘের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ফকির লালন সাঁইজির ১৩৪তম তিরোধান বর্ষ উদযাপন উপলক্ষে মধুপুর লালন সংঘ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জুবায়ের হোসেনের উপস্থিত থাকার কথা ছিল।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উৎসব আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক সবুজ মিয়া বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম আমরা। কিন্তু হেফাজতে ইসলামের আপত্তির মুখে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি করতে পারিনি।’

এর আগে বিকেলে ফেসবুক পোস্টে লালন স্মরণোৎসব স্থগিত হয়ে যাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে সবুজ মিয়া লেখেন, ‘হঠাৎ করেই খবর পাই মধুপুর হেফাজতে ইসলাম আমাদের অনুষ্ঠান নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। এ নিয়ে গতকাল আলোচনা হয়েছে। এতে অংশ নেন উপজেলা হেফাজতের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল্লাহ, কওমি উলামা পরিষদের সভাপতি সোলায়মান কাসেমীসহ ১০-১৫ জন। লালন সংঘের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি ফরহাদ হোসেন তরফদার ও সবুজ মিয়া। দুই পক্ষের মধ্যস্থতা করেন মধুপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন সরকার।’

Advertisement

‘আমাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমরা এখানে মতাদর্শ প্রচারের জন্য এই আয়োজন করিনি। এখানে লালনের মতাদর্শ নিয়ে কোনো আলোচনা এর আগে হয়নি, এবারও হবে না। আমরা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করি শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য। এছাড়া যে গানগুলো নিয়ে তাদের আপত্তি, সেই গানগুলো অনুষ্ঠানে পরিবেশন করা হবে না’ বলেও ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেন সবুজ।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘লালন বাদ দিয়ে সাধারণ কনসার্ট করলে আপত্তি থাকবে না—শুরুতে হেফাজত নেতারা এমন কথা জানালেও পরবর্তীতে বলেন, কিছুতেই অনুষ্ঠান করতে দেবেন না।’

আপত্তির কারণ জানতে চাইলে হেফাজতে ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুল্লাহ বলেন, ‘ইসলামের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় আমরা ভ্রান্ত লালন মতাদর্শ প্রচারে আপত্তি জানিয়েছি।’

ইউএনও জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘অনুষ্ঠানে আমাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। তবে মঙ্গলবার রাতে আয়োজকরা জানিয়েছেন, অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে। এ ধরনের আয়োজন করার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। মধুপুর লালন সংঘ প্রশাসনকে না জানিয়ে এই আয়োজন করেছিল। তবে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি করা হয়নি।’

Advertisement

এসআর/জিকেএস