দেশজুড়ে

যশোরে ইউনিয়ন পরিষদে তালা দেওয়া নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

যশোরের কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝোলানো নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।

Advertisement

বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় বিএনপির একাংশ এই তালা ঝোলানোর চেষ্টা করেন। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্তকে দায়িত্ব পালন করতে না দেওয়ার জন্য অফিসে তালা লাগানো হয় বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন।

কাজী মোস্তাফিজুল ইসলাম মুক্ত বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রাথী হিসে জয়লাভ করেন। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের ভাই তিনি।

Advertisement

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আকরাম হোসেনের নেতৃত্বে ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এসময় তারা বলেন, স্বৈরাচারের সহযোগী মোস্তাফিজুল ইসলামকে কোনোভাবেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে তারা মেনে নেবেন না। কোনো আওয়ামী লীগ নেতাকে এই চেয়ারে বসতে দেবেন না। তালা ঝুলিয়ে দেওয়া লোকজন ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতি আকরাম হোসেনের সমর্থক বলে জানা গেছে।

এদিকে, ইউনিয়ন পরিষদে তালা লাগানোর পর গ্রামবাসী দলবদ্ধ হয়ে ওই তালা ভেঙে ফেলেন। এসময় এলাকার বিএনপির একাংশের নেতা আমানত আলী তার সমর্থকদের নিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগ দেন। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে অন্তত ২০ জন আহত হন।

আহতদের মধ্যে মুজাহিদুল ইসলাম, মাজহারুল ইসলাম ও গোলাম মোস্তফা নামের তিনজনকে খুলনা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। তাদের কারও মাথা ফেটেছে, কারও হাত এবং পা ভেঙে গেছে।

এ বিষযে ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুল ইসলাম বলেন, জনগণ তালা খুলে দেওয়ার সময় বিএনপির ইউনিয়ন কমিটির সভাপতি আকরাম হোসেনের কিছু সন্ত্রাসী জনগণের ওপর হামলা করে। সেসময় এলাকার জনগণ দলমত নির্বিশেষে সন্ত্রাসীদের মোকাবেলা করে।

Advertisement

খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, কেশবপুর থানার পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন।

বিএনপির ইউনিয়ন সভাপতি আকরাম হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুল ইসলাম ৫ আগস্টের পরে ওই চেয়ারে বসে বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য অপতৎপরতায় লিপ্ত আছেন। বিভিন্ন সময় তিনি বিএনপিসহ এই সরকারের নামে বিভিন্ন কথাবার্তা বলেন। এ নিয়ে এলাকাবাসীর ক্ষোভ ছিল। সে কারণেই ইউনিয়ন পরিষদে তাকে আর চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হবে না মর্মে এলাকার মানুষ ঝুলিয়ে দেন।

তিনি দাবি করেন, চেয়ারম্যান পক্ষের লোকজন তালা ভেঙে ফেলতে গেলে তাদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।

কেশবপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন জানান, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মিলন রহমান/এসআর/জেআইএম