বারবার বহুবার বলা হয়েছে, টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির তুলনায় বাংলাদেশ ওয়ানডেতে ভালো দল। ভালো ক্রিকেট খেলে। অন্য দুই ফরম্যাটের তুলনায় টাইগারদের ওয়ানডের পরিসংখ্যানও ভালো।
Advertisement
সাফল্য তথা জয়ের সংখ্যা আনুপাতিক হারে বেশি। কিন্তু একটা বড় ঘাটতি ও সীমাবদ্ধতা আছে টিম বাংলাদেশের। তা হলো, উইকেট যেমনই থাকুক, যত ব্যাটিংবান্ধবই হোক না কেন, বাংলাদেশের ব্যাটারদের ব্যাট থেকে বড় ইনিংস বেরিয়ে আসে কম। সেঞ্চুরির রেকর্ড বেশ কম।
ওপরের দিকের কেউ একজন যে ৫০ ওভারের ম্যাচে ৩৫ থেকে ৪০ ওভার উইকেটে থেকে ১২০-১৩০ রানের এক ইনিংস খেলবেন, সে প্রবণতা কম। ব্যক্তিগত স্কোরগুলো বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ২০ থেকে ৩০-এর ঘরে আটকে যায়। আর পঞ্চাশের পর সেগুলোকে বড় করে ৮০-১০০তে নেওয়ার প্রবণতা, মানসিকতা খুবই কম।
যে কারণে দেখা যায়, হয় বিশ-তিরিশের ঘরে; নয়তো অর্ধশতক পূর্ণ করে ৫০ থেকে ৬০-এর মধ্যে আউট হয়ে যান ব্যাটাররা। এতে স্কোরলাইন বড় হয় কম। বড় স্কোর, বিশেষ করে ৩০০+ রান ওঠে কালে-ভদ্রে।
Advertisement
তবে আশার কথা হলো, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ওয়ানডেতে বাংলাদেশ তিনবার ৩০০+ রান করেছে। সেটি অবশ্যই ইতিবাচক দিক।
ম্যাচ জিততে না পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে সর্বশেষ ওয়ানডেতেও টাইগারদের স্কোর ছিল ৩২১। ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে শেষ ওয়ানডেতেও এই রান করেছিল বাংলাদেশ।
সৌম্য সরকার (৭৩), মেহেদী হাসান মিরাজ (৭৭), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ (৮৪) আর জাকের আলী (৬২)-চারজন বড় ফিফটি হাঁকিয়েছিলেন।
এবার যে দেশে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দুটি ম্যাচ খেলতে হবে, সেই পাকিস্তানের লাহোর, করাচি ও রাওয়ালপিন্ডিতে গড়ে ৩০০+ রান হয়। স্বাগতিক পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড আর দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে যে ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্ট হচ্ছে, সেখানেও প্রতি খেলায় প্রথম ব্যাট করা দল ৩০০+ রান করেছে।
Advertisement
ধরে নেওয়া যায়, বাংলাদেশকে রাওয়ালপিন্ডিতে আগে ব্যাট করলে নিউজিল্যান্ড আর পাকিস্তানের সাথেও ৩০০-এর বেশি রান করতে হবে। আগে ব্যাট করলে প্রতিপক্ষকে আটকে রাখতে হবে ৩০০-এর মধ্যেই।
বাংলাদেশ কি তা পারবে? ব্যাটারদের সেই মানসিক প্রস্তুতি আছে? কিংবা বোলারদের আছে তিনশোর মধ্যে প্রতিপক্ষকে আটকে দেওয়ার সামর্থ্য। অধিনায়ক শান্তর কথা শুনে মনে হলো, আছে।
আজ বুধবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে যাওয়ার আগে মিডিয়ায় কথা বলতে এসে প্রসঙ্গক্রমে শান্ত জানালেন, দলের সবার মধ্যে ৩০০ রানের চিন্তাটা ভালোভাবেই আছে।
শান্ত বলেন,‘ এ ধরনের টুর্নামেন্টে চ্যালেঞ্জ, বাড়তি চাপ থাকবেই। আমি পাকিস্তানে আশা করছি ৩০০+ উইকেট হবে। এ ধরনের স্কোর করতে হবে আগে ব্যাট করলে। ডিফেন্ড করার ক্ষেত্রেও এমন রান ডিফেন্ড করা লাগবে।’
তবে সহআয়োজক সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের উইকেটের চরিত্র ভিন্ন। সেখানে ৩০০-এর কম, ২৬০-২৭০ হতে পারে লড়াকু স্কোর; এমন বিশ্বাস শান্তর।
টাইগার দলপতির ভাষায়, ‘আমার মনে হয়, দুবাইয়ের স্কোর ২৬০-২৮০ এর ভেতরেই থাকবে। এভাবে সংখ্যা অনুমান করা কঠিন, তবে অতীত দেখলে এমনই থাকে। নির্দিষ্ট দিনে কত রান করা দরকার বা কত রানে আটকানো দরকার, এসব বিশ্লেষণ করব।’
এআরবি/এমএমআর/জিকেএস