অমর একুশে বইমেলার আয়োজনে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে নতুন-নতুন বই। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বইমেলার ষষ্ঠদিনে এসেছে ৮০ নতুন বই। এর মধ্যে কবিতা ২২, উপন্যাস ১৩, গল্প ১১, ইতিহাস ও জীবনী চারটি করে, মুক্তিযুদ্ধ ৩, প্রবন্ধ, ভাষা এবং বিজ্ঞান দুটি করে, ভ্রমণ, চিকিৎসা/স্বাস্থ্য, শিশুসাহিত্য, ধর্মীয়, অনুবাদ, রচনাবলী, সায়েন্স ফিকশন, নাটক একটি করে এবং অন্যান্য আটটি বই এসেছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্মরণ: মাহবুবুল হক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন তারিক মনজুর। আলোচনায় অংশ নেন মাহবুব বোরহান এবং মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন সৈয়দ আজিজুল হক।
প্রাবন্ধিক তারিক মনজুর বলেন, মাহবুবুল হক বাংলাদেশের একজন প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও ভাষাবিজ্ঞানী। বাংলা ভাষার ব্যাকরণ প্রণয়ন এবং বাংলা বানান সংস্কারে তিনি নিবিড়ভাবে কাজ করেছেন। বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে তার অবদান যুগান্তকারী। তিনি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের বাংলা পাঠ্যবই রচনা ও সম্পাদনার কাজ করেছেন। মাহবুবুল হক কার্যকর অর্থেই রাষ্ট্রীয় ও প্রয়োগ-উপযোগী ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষাকে দেখতে চেয়েছেন। এর সফলতার জন্য তিনি ভাষার অবয়ব পরিকল্পনায় প্রত্যক্ষভাবে কাজ করেছেন। শিক্ষকতা তার পেশা হলেও তিনি সর্বসাধারণের কাছে একজন ভাষাবিজ্ঞানী ও পাঠ্যবইয়ের লেখক হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেন।
Advertisement
আলোচকদ্বয় বলেন, বাংলা ভাষা, সাহিত্য, শিক্ষা ও সংস্কৃতি জগতের একজন বিদগ্ধ পণ্ডিত ছিলেন মাহবুবুল হক। ব্যক্তি-মানুষ ও শিক্ষক হিসেবেও তিনি ছিলেন দায়িত্বশীল, পরিশ্রমী ও আন্তরিক। ইতিবাচক চিন্তা-চেতনার অধিকারী মাহবুবুল হক ভাষা ও ব্যাকরণের অনেক জটিল বিষয়কে সরল ও পরিচ্ছন্নভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন। ভাষা, লোকসাহিত্য, অভিধান ও অনুবাদ নিয়ে তার নিরলস সাধনা নিঃসন্দেহে আমাদের জ্ঞান-জগতকে সমৃদ্ধ করেছে। তার কর্মনিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও অগাধ পাণ্ডিত্য ভবিষ্যৎ গবেষকদের জন্য আদর্শ হয়ে থাকবে।
সভাপতির বক্তব্যে সৈয়দ আজিজুল হক বলেন, মাহবুবুল হক বাংলা ভাষার উৎকর্ষ সাধনে আজীবন নিবেদিত ছিলেন। প্রগতিশীল রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণেই তিনি একজন মানবিক, সুশৃঙ্খল এবং সামাজিক দায়-বোধসম্পন্ন মানুষ হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। তার আলোকিত জীবন ও সৃজন আমাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা জোগাবে।
এদিকে লেখক বলছি মঞ্চে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন- টোকন ঠাকুর এবং জাকির আবু জাফর। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন- কবি সাখাওয়াত টিপু এবং কবি জব্বার আল নাঈম। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তি-শিল্পী শহীদুল ইসলাম এবং আশরাফুল হাসন বাবু।
আজ ছিল শাহাবুদ্দিন আহমেদ দোলনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সুরসুধা সংগীতায়ন’ এবং সাইফুল ইসলামের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘উজান’ এর পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আজগর আলীম, সৈয়দ আশিকুর রহমান, খায়রুল ওয়াসি, মো. মানিক, অগ্নিতা শিকদার মুগ্ধ এবং আঁখি আলম। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন আব্দুল মতিন (তবলা), ডালিম কুমার বড়ুয়া (কী-বোর্ড), নাজমুল আলম খান (মন্দিরা) এবং মো. আতিকুল ইসলাম (বাঁশি)।
Advertisement
এমএইচএ/এমএএইচ/জেআইএম