অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেছেন, উড়োজাহাজ টিকিটের সিন্ডিকেট ধরতে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দিন। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে উড়োজাহাজ টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
Advertisement
তিনি বলেন, প্রবাসীরা গণঅভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তারা রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করায় হাসিনার গদি কেঁপে ওঠে। মধ্যপ্রাচ্যে ৫৭ জন প্রবাসী গ্রেফতারও হয়। কিন্তু এর বিনিময়ে তারা কি পেয়েছে? সরকার তাদের ঠিকঠাক মূল্যায়ন করেনি। সৌদি আরবের উড়োজাহাজ ভাড়া এত বাড়লো কেন? সিন্ডিকেট ধরতে না পারলে দায়িত্ব ছেড়ে দেন।
রাশেদ খান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গণহত্যার বিচার করতে পারছে না, আওয়ামী লীগ ও শেখ পরিবারকে ধরতে পারছে না। তারা এখনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। দ্রব্যমূল্যের দাম হুঁড়হুঁড় করে বাড়ছে।
এখনো সচিবালয়ে আওয়ামী লীগ, পুলিশ-প্রশাসন-র্যাব-বিজিবিতে আওয়ামী লীগ। অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে এখনো আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ও নিবন্ধন স্থগিত করেনি। কিন্তু তাদের তারা জনগণের আবেগ নিয়ে খেলছে। এভাবে চলতে থাকলে তারা ব্যর্থ হবে। আর তারা ব্যর্থ হলে আওয়ামী লীগ আবার ফিরে আসবে।
Advertisement
গণঅধিকার পরিষদের মুখপাত্র ও উচ্চতর পরিষদের সদস্য ফারুক হাসান বলেন, বিমান টিকিটের দাম কমানোর জন্য ট্রাভেল ট্যাক্স, এক্সাইজ ডিউটি, জেট ফুয়েলের দাম, ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জসহ সব অপ্রয়োজনীয় চার্জ প্রত্যাহারের করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও ইউরোপগামী ফ্লাইটের টিকিটের দাম চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে, যা প্রবাসী কর্মীদের জন্য ভয়াবহ সংকট সৃষ্টি করেছে। অতিরিক্ত ভাড়ার কারণে বহু কর্মী বিদেশে যেতে পারছেন না, যা তাদের জীবিকা এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ফ্লাইটের টিকিটের মূল্য প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় প্রবাসী কর্মীরা বাধ্য হয়ে জমি বিক্রি করে বা উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে টিকিট কিনছেন। বিশেষত মধ্যপ্রাচ্যে কর্মরত বাংলাদেশিদের জন্য এই সংকট আরও তীব্র।
মানববন্ধনে উড়োজাহাজ টিকিটের দাম কমানোর জন্য বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ থেকে ৪ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো- ১. আগামী ৭ দিনের মধ্যে বিমান টিকিটের মূল্য যৌক্তিক পর্যায়ে আনতে হবে ও দাম কমাতে হবে।
২. ট্রাভেল ট্যাক্স, এক্সাইজ ডিউটি, জেট ফুয়েলের দাম, ল্যান্ডিং ও পার্কিং চার্জসহ সব অপ্রয়োজনীয় চার্জ প্রত্যাহার করতে হবে।
Advertisement
৩. বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি অন্যান্য দেশীয় ও আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে।
৪. টিকিটের দাম স্থিতিশীল রাখতে একটি বিমান টিকিট রেগুলেটরি বোর্ড গঠন করতে হবে।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, আব্দুর জাহের, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের মনজুর মোর্শেদ মামুন, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, গণঅধিকার পরিষদ ও প্রবাসী অধিকার পরিষদের নেতারা। প্রোগ্রাম সঞ্চালনায় ছিলেন শাহাব উদ্দিন শিহাব ও সভাপতিত্বে ছিলেন আসিফ আহমেদ জনি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ, বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার পরিষদের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ লিমন খান, সম্রাট আহমেদ, হাবিব আহমেদ, নয়ন খান কবির, জাকির খান, রাকিবুল হাসান, গোলাম রব্বানী, শফিকুল ইসলামসহ আরো অনেকে।
এএএম/এমআইএইচএস/জেআইএম