আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূতভাবে ঢালাও শাস্তির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নিলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
Advertisement
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সঙ্গে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের নেতাদের মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। রাজধানীর রমনায় আইইবি’র সেমিনার হলে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক মুহম্মদ মফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সভা হয়। অনুষ্ঠানে ২৫টি ক্যাডারের সভাপতি-সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
পরিষদের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখির জন্য ২৫ ক্যাডারের ১২ জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত, একজনকে ওএসডি করা হয়েছে এবং কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম চলমান। অথচ, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরকারি বিধি-বিধানবহির্ভূত কার্যকলাপের পরও তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি বলে সভায় জানানো হয়।
Advertisement
সভার নেওয়া সিদ্ধান্ত তুলে ধরে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যদি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূতভাবে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো বিষয়ের কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তাহলে কঠোর কর্মসূচির ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রোফাইল ছবি পরিবর্তন কর্মসূচি শুরু ২৫ ক্যাডার নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য করে সিনিয়র সহকারী সচিব বরখাস্তএছাড়া প্রত্যেকটি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিয়মবহির্ভূতভাবে ২৫ ক্যাডার কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত, ওএসডি, বিভাগীয় ব্যবস্থার বিষয়ে জানানো হবে। প্রতিটি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন থেকে প্রশাসন ক্যাডারের বৈষম্যমূলক ও পক্ষপাতিত্বপূর্ণ আচরণের প্রতিবাদে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে বলে সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় বক্তারা বলেন, প্রচলিত আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সিভিল সার্ভিসের কার্যকর সেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। প্রতিটি সেক্টরে নীতি নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা, যারা সেই সেক্টর সম্পর্কে অনভিজ্ঞ ও অদক্ষ। ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। এছাড়া সব সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক সিন্ডিকেট, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও বৈষম্য রাষ্ট্রের সব সেক্টরকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারও যথাযথ কাজ করতে পারছে না বলে মিডিয়াতে প্রচার হচ্ছে।
Advertisement
বক্তারা আরও বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বারবার সময় নিলেও কোনো কাজ করছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে না। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারকে সিভিল সার্ভিস হতে আলাদা করতে চাওয়ায় জনমনে নতুন সন্দেহের উদ্রেক করেছে। অথচ আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ বা পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫টি ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে আলোচনা না করে এবং বারবার সময় বাড়িয়ে কালক্ষেপণ করছে, যা জনমনে সংস্কার নিয়ে নতুন প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তা দিয়ে পরিচালনা এবং কোটামুক্ত, মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল গঠনের বিকল্প নেই। কোটামুক্ত সেবামূলক মেধাবী সিভিল প্রশাসন বাস্তবায়ন না হলে, জুলাইয়ের রক্ত বৃথা যাবে- যা পরিষদ হতে দেবে না বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
আরএমএম/ইএ