ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে পরিত্যক্ত বাথরুমের ট্যাংক থেকে ইসমাইল মিয়া (৬০) নামের এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
Advertisement
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার লালপুর ইউনিয়নের একটি পরিত্যক্ত বাথরুমের ট্যাংক থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইসমাইল মিয়া উপজেলার লামা শরীফপুর গ্রামের মৃত উজির আলীর ছেলে। তিনি ছয় সন্তানের জনক।
এ ঘটনায় নিহতের পরকীয়া প্রেমিকা (৩৫) ও তার স্বামী সুমন মিয়াকে (৪০) আটক করে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছেন স্থানীয়রা।
Advertisement
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা থেকে ইসমাইল মিয়া নিখোঁজ ছিলেন। তার পরিবারের লোকজন তাকে খুঁজে না পেয়ে শুক্রবার সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। দুপুর আড়াইটার দিকে গ্রামের একটি পরিত্যক্ত বাড়ির বাথরুমের ট্যাংকে ইসমাইলের মরদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে নিহতের প্রেমিকা ও তার স্বামীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন জনতা।
জিজ্ঞাসাবাদে আটক পরকীয়া প্রেমিকার বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, ইসমাইল মিয়ার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ওই নারীর পরকীয়া চলছিল। ইসমাইল বিভিন্ন ছলে প্রায়ই তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টায় ওই নারীর রাজমিস্ত্রি স্বামী কাজের সুবাদে বাড়িতে ছিলেন না। এ সুযোগে ইসমাইল তার ঘরে প্রবেশ করে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। তবে তিনি যৌন উত্তেজক ট্যাবলেট সেবন করায় তাকে ঘর থেকে বের করে দিতে চান ওই নারী। এসময় ইসমাইল ওই নারীর অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া মেয়েকে ঘুমের মধ্যে জাপটে ধরেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই নারী ইসমাইলের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তার পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
পরে মেয়ের সহযোগিতায় মরদেহ পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত বাড়ির বাথরুমের ট্যাংকে ফেলে দিয়ে আসেন। রাতে ওই নারীর স্বামী ঘরে ফেরেন। তবে এসময় মা-মেয়ে স্বাভাবিক থাকেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক সুমন মিয়া এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে দাবি করেছেন।
Advertisement
তবে নিহতের ছেলে সাদ্দাম হোসেনের দাবি, সুমন ও তার স্ত্রীসহ অজ্ঞাতপরিচয় খুনিরা আর্থিক কোনো কারণে তার বাবাকে খুন করেছেন।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিল্লাল মিয়া বলেন, খুনের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত সন্দেহে স্বামী-স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগ ও তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আবুল হাসনাত মো. রাফি/এসআর/এএসএম