দেশজুড়ে

বিদ্যালয়ঘেঁষে ইটভাটা, ধোঁয়ায় অসুস্থ হচ্ছে শিক্ষার্থীরা

বিদ্যালয়ে ছোট শিশুরা যখন আনন্দে পা দুলিয়ে দোলনায় দোল খাচ্ছে, ঠিক তখনই বিদ্যালয়ঘেঁষে অবস্থিত দুটি ইটভাটার মুখ থেকে বের হচ্ছে ধোঁয়া। এই ধোঁয়াতে অসুস্থ হচ্ছে শিশুরা। রাজশাহীর গোদাগাড়ী কাদিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-২ এর পাশে দুটি ইটভাটা এভাবেই চলছে।

Advertisement

ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) ২০১৯ অনুযায়ী, বিশেষ কোনো স্থাপনা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, রেলপথ, হাসপাতাল ও ক্লিনিক, গবেষণা প্রতিষ্ঠান কিংবা অনুরূপ কোনো স্থান বা প্রতিষ্ঠান থেকে কমপক্ষে এক কিলোমিটার দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। অথচ নিয়ম না মেনে বিদ্যালয় সীমানার পাশেই স্থাপন করা হয়েছে ইটভাটা দুটি।

সরেজমিন দেখা গেছে, গোদাগাড়ী কাদিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-২ এর দুই পাশে অবস্থিত মেসার্স এমএস ব্রিকস ও এমএইচবি মুন হাওয়া ব্রিকস নামের দুটি ইটভাটা। দুটি ইটভাটাই চালু আছে। দিনের বেলাতেও পোড়ানো হচ্ছে ইট। বিদ্যালয়ের সামনে মাঠে বসানো আছে দোলনা ও স্লাইডার। সেখানে খেলা করছে শিশুরা। শিশুরা যখন খেলছে ঠিক তখনই পাশ থেকে ভেসে আসেছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী। সঙ্গে ধুলাবালি।

বিদ্যালয়ে প্রবেশ করতেই নজরে এলো চারটি শ্রেণিকক্ষের। প্রতিটিরই জানালা বন্ধ। শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা কখনোই জানালা খুলে ক্লাস করতে পারে না।

Advertisement

চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী হুমাইরা আফরিন জাগো নিউজকে বলে, ‘অনেক ধুলা ও ধোঁয়া আসে। এ কারণে আমাদের হাঁচি-কাশি হয়। পাশে দুটি ভাটার কারণেই এমনটি হচ্ছে। স্কুল বন্ধ থাকার পর যখন খুলি বেঞ্চগুলো ধুলায় ভরে যায়।’

একই ভোগান্তির কথা জানায় শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। সে বলে, ‘ধুলার কারণে আমরা জানালা বন্ধ করে রেখেছি। জানালা বন্ধের সময় শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।’

কথা হয় ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা কামরুন নেশার সঙ্গে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়টি প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত। এখানকার বাচ্চারা অনেক গরিব। দূষিত পরিবেশে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদেরও অনেক কষ্ট হয়। ধুলায় অফিসের আসবাবসহ জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যায়। সব ধুলায় একাকার হয়ে যায়।’

Advertisement

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইমাম হোসেন বলেন, ‘ভাটার কালো ধোঁয়া বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করছে। সংশ্লিষ্টদের উচিত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া।’

এ বিষয়ে জানতে এমএইচবি মুন হাওয়া ব্রিকস ইটভাটার মালিক আফজাল হোসেনের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

মেসার্স এমএস ব্রিকসের মালিক ওবায়দুল্লাহ বলেন, বিদ্যালয়টি আমাদের ভাটার পরে হয়েছে। তবে ভাটা কত সালে স্থাপিত হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন ব্যস্ত আছি। পরে কথা হবে বলে সংযোগ কেটে দেন।

রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ইটভাটা দুটির বিষয়ে অবগত আছি। আমরা পর্যায়ক্রমে ইটভাটগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসআর/এএসএম