দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউজে ফিরছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার এই ফেরা বৈশ্বিক রাজনীতি ও নীতিতে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
Advertisement
তার আমেরিকা ফার্স্ট এজেন্ডা আন্তর্জাতিক সম্পর্কে নতুন রূপ দেওয়ার পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্প বলেন, তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ একদিনেই শেষ করতে পারবেন, তবে তিনি কীভাবে সেটা করবেন, তা বিস্তারিত বলেননি।
আরও পড়ুন>
Advertisement
তিনি ইউক্রেনকে বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা দেওয়ার সমালোচনা করেন। এতে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে যে, তিনি হয়তো ইউক্রেনকে আঞ্চলিক সমঝোতা করতে চাপ দিতে পারেন।
ট্রাম্পের মনোনীত বিশেষ দূত কিথ কেলগ ১০০ দিনের মধ্যে এ সংকট সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করছেন এবং ইউক্রেনকে শান্তি আলোচনায় অংশ নেওয়ার শর্তে সহায়তা দেওয়ার কথা বলেন।
ট্রাম্প ন্যাটো নিয়ে সমালোচনা অব্যাহত রেখেছেন। তিনি ইউরোপীয় সদস্যদের প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছেন।
যদিও তিনি ন্যাটো থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের কথা স্পষ্ট করেননি।
Advertisement
তবে তিনি ইউরোপে মার্কিন সেনাদের সংখ্যা কমিয়ে ন্যাটোকে দুর্বল করে দিতে পারেন।
মধ্যপ্রাচ্যে ট্রাম্প ইসরায়েলপন্থি অবস্থান ধরে রাখবেন। তিনি আব্রাহাম অ্যাকর্ডসের ভিত্তিতে সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে চুক্তি করার চেষ্টা করতে পারেন।
ইরানের বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থান অব্যাহত থাকতে পারে। তিনি ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক প্রতিরোধ জারি করতে পারেন।
গাজার যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জও তার নেতৃত্বের পরীক্ষা নেবে।
চীনের প্রতি ট্রাম্পের কঠোর মনোভাব আরও তীব্র হতে পারে। তিনি চীনা পণ্যের ওপর ৬০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব দেন।
তার প্রশাসন চীনকে একটি বড় হুমকি হিসেবে দেখে, বিশেষ করে তাইওয়ান ইস্যুতে।
ট্রাম্প সামরিক পদক্ষেপের বিরোধিতা করলেও তাইওয়ানের প্রতি চীনের যে কোনো আক্রমণাত্মক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছেন।
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে, ট্রাম্প আবার প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিতে পারেন ও জীবাশ্ম জ্বালানির উৎপাদন বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে পারেন।
তিনি সবুজ শক্তির জন্য আর্থিক প্রণোদনা কমানো ও তেল এবং গ্যাস ড্রিলিং বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন, যা বৈশ্বিক জলবায়ু প্রচেষ্টাকে ধীর করতে পারে, তবুও নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে বিশ্বের ধাবমান প্রবণতা থামবে না।
অভিবাসন নিয়ে, ট্রাম্প লাখ লাখ অনথিভুক্ত বা অবৈধ অভিবাসীকে বিতাড়িত করার প্রতিশ্রুতি দেন এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের পরিকল্পনা করেন।
তার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বিতর্কিত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল ও সীমান্ত নিরাপত্তা কঠোর করা।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন তার এই পরিকল্পনা আইনি, লজিস্টিক এবং আর্থিক দিক থেকে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে।
ট্রাম্প কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থের কথা উল্লেখ করে গ্রিনল্যান্ড কেনার এবং পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ব্যাপারে তার বিতর্কিত ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেন।
যদিও এই পদক্ষেপগুলো সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম, তবে এটি বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় ট্রাম্পের আকাঙ্ক্ষার বিষয়টি প্রকাশ করে।
সূত্র: বিবিসি
এমএসএম