বহুল আলোচিত কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন শিয়ালদহ আদালত। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারকে নির্যাতিতার পরিবারকে ১৭ লাখ রুপি দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার (২০ জানুয়ারি) এই সাজা ঘোষণা করেন বিচারক অনির্বাণ দাস।
Advertisement
সেন্ট্রাল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন সিবিআই তার অভিযোগপত্রে বলেছিল, আরজি করের ঘটনা বিরল থেকে বিরলতম অপরাধ। কিন্তু শিয়ালদহ দায়রা আদালত বিচারক অনির্বাণ দাস বলেছেন, এই ঘটনা বিরল থেকে বিরলতম ঘটনা নয়। তাই অভিযুক্তকে আমরন সাজা খাটতে হবে, অর্থাৎ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হলো।
আরও পড়ুন:
আর জি করের ঘটনায় দুই অভিযুক্তের জামিন, উত্তাল পশ্চিমবঙ্গ আর জি কর কাণ্ড/ পুলিশের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আনলেন নিহতের মা-বাবা তরুণ চিকিৎসকদের নতুন কর্মসূচি, পাশে থাকবেন ভুক্তভোগীর মা-বাবাতবে এই রায়ে সন্তুষ্ট হতে পারেননি ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসকের পরিবারের সদস্যরা। তারা এরই মধ্যে কলকাতা হাইকোর্টে পুনঃতদন্তের জন্য পিটিশন দাখিল করেছেন। এদিকে, এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা।
Advertisement
এই সাজার পরেই নির্যাতিতার পরিবারের সদস্যরা বলে ওঠেন, আমরা মেয়ের হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই, কোন ক্ষতিপূরণ না। পরিবারের লোকেদের কথা শুনে বিচারক জানান, আইনে লেখা আছে এই ধরনের মামলায় পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। তাই ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হলো।
গত বছরের ৯ আগষ্ট কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় এক নারী চিকিৎসকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ঘটে। এরপরই শোরগোল পরে যায় পশ্চিমবঙ্গ সহ গোটা ভারত জুড়ে।
এই ঘটনা তদন্ত নেমে কলকাতা পুলিশের কর্মকর্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে গ্রেফতার করেছিলেন। ঘটনাস্থান থেকে বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণও সংগ্রহ করেছিল কলকাতা পুলিশ।
পরে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তভার যায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি সিবিআইয়ের হাতে। পরবর্তীতে তদন্ত চালিয়ে সিবিআই সঞ্জয় রায়কেই একমাত্র অভিযুক্ত বর্ণনা করে চার্জ গঠন করে।
Advertisement
আরও পড়ুন:
কলকাতায় বিনা চিকিৎসায় ২৯ জনের মৃত্যু, দাবি মমতার আর জি করে চলছিল বেওয়ারিশ মরদেহের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিক্রিনারকীয় ওই ঘটনার ৫ মাস ১১ দিন পর শনিবার (১৮ জানুয়ারি) শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস অভিযুক্ত কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলেন্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ ধারায় ধর্ষণ, ৬৬ ধারায় ধর্ষণের সময় আঘাত করে মৃত্যুর চেষ্টা ও ১০৩(১) ধারায় খুনের অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
শিয়ালদহ আদালতের অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক অনির্বাণ দাস জানিয়েছিলেন, সোমবার সঞ্জয়ের সাজা ঘোষণা করা হবে। সেই ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার দুপুর ২টা ৫০ মিনিটের দিকে প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেন এই বিচারক।
ডিডি/এসএএইচ