শীতকালীন রঙিন সবজি হিসেবে স্যাভয় ক্যাবেজ, বেগুনি ব্রকলি ও জুকিনি/স্কোয়াশের দেশীয় জাত উদ্ভাবনে কাজ করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ ও তার গবেষক দল।
Advertisement
স্যাভয় ক্যাবেজ ও বেগুনি ব্রকলি নিয়ে গবেষণা করেছেন অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। রিসার্চ ফেলো হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ফাতেমা তুজ জোহুরা।১০টি বিভিন্ন রঙের জুকিনির জাত নিয়ে গবেষণা করেছেন ওই অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী আনিশা নূর মুমু।
অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ জানান, বেগুনি ব্রকলি দেশে প্রথমবারের মতো চাষের উপযোগী জাত হিসেবে বাছাই করা হচ্ছে। জাতটি ইংল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে এবং এর বৃদ্ধির হার সবুজ ব্রকলির চেয়ে বেশি। বেগুনি ব্রকলি স্বাদ ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি সবজি। এর বেগুনি রঙের কারণে এতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, বিশেষ করে অ্যান্থোসায়ানিন বিদ্যমান। এটি ক্যানসার প্রতিরোধী উপাদানে সমৃদ্ধ।
স্যাভয় ক্যাবেজের বিষয়ে তিনি বলেন, ফ্রান্সের স্যাভয় ক্যাবেজ বাংলাদেশে একদম নতুন একটি শীতকালীন সবজি। সফলতার সঙ্গে আমরা এটি চাষ করতে সক্ষম হয়েছি। সাধারণ বাঁধাকপির পাতাগুলো পরিপক্ক হলে কিছুটা শক্ত হয়ে যায়। কিন্তু স্যাভয় ক্যাবেজের পাতাগুলো মচমচে হওয়ায় এটি কাঁচা অবস্থায় খাওয়া যায় ও রান্না করে খেলেও সুস্বাদু লাগে। বিভিন্ন ফাস্ট ফুডে যেমন বার্গার, স্যান্ডউইচ ইত্যাদির সঙ্গেও খাওয়া যায়।
Advertisement
আরও পড়ুন:
আর কমবে না গাভীর দুধ উৎপাদন, ওলান প্রদাহের ভ্যাক্সিন উদ্ভাবন বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্যলাল বাঁধাকপির জাতও রয়েছে, যা বর্তমানে মাঠপর্যায়ে চাষ করা হচ্ছে বলে জানান বাকৃবির এই অধ্যাপক। তিনি বলেন, রঙিন হওয়ায় এর পুষ্টিগুণ সাধারণ (সবুজ) বাঁধাকপির তুলনায় বেশি। এটি মালচিং প্রক্রিয়ায় চাষ করা হয়েছে। ফলে পানি সংরক্ষণ করে ফলন বাড়ানো সম্ভব হয়েছে এবং পানির অপচয় রোধ হয়েছে।
জুকিনি চাষের বিষয়ে অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ বলেন, স্কোয়াশ যা ইতালিতে জুকিনি নামে পরিচিত, ইউরোপীয় দেশগুলোতে পিৎজা ও পাস্তায় ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, দেশীয় আবহাওয়ায় এর বৃদ্ধি ও বিকাশ অত্যন্ত ভালো। বাজারে সাধারণত সবুজ রঙের জুকিনি বেশি পাওয়া যায়। তবে গবেষণার মাধ্যমে কালো, হলুদ, গাঢ় সবুজ, হালকা সবুজসহ বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন আকৃতির জুকিনি উৎপাদন করা হয়েছে। মাত্র ৫৫ দিনেই জুকিনি সংগ্রহ করা সম্ভব।
রঙিন জুকিনি নিয়ে গবেষণার উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই গবেষণার অর্থায়নের জন্য আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছি। পুষ্টিগুণ ও রোগ প্রতিরোধী বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন রঙিন জুকিনি বাছাই এবং জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে এটি দেশের কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই।
Advertisement
আসিফ ইকবাল/এসআর/এমএস