মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারের সঙ্গে স্পিডবোটের সংঘর্ষে আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা চারজনে দাঁড়িয়েছে। শনিবার (১১ জানুয়ারি) নদীর কালীপুরা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
Advertisement
নিহতরা হলেন, উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলী ব্যাপারীর ছেলে ওদুদ ব্যাপারী (৩৬), মুন্সিগঞ্জ উপজেলার চরঝাপ্টা রমজানবেগ গ্রামের বাচ্চু সরকারের ছেলে বাবুল সরকার (৪৮), চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার সাবিক (২৬) ও একই এলাকার নাঈম (২৪)।
আরও পড়ুন:
মেঘনায় বাল্কহেড-স্পিডবোট সংঘর্ষে নিহত অন্তত ২, নিখোঁজ একাধিকহতাহতরা সবাই ডাকাত নয়ন বাহিনীর সক্রিয় সদস্য বলে জানা গেছে। তারা সবাই অবৈধ বালুমহাল পরিচালনার কাজে নিয়োজিত ছিল।
Advertisement
স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের জামালপুর গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীতে অবৈধ একটি বালুমহাল পরিচালনা করত নয়ন বাহিনীর লোকজন। দিনের আলোতে নদীর ওই অংশে বালুমহালের অস্তিত্ব না থাকলেও সন্ধ্যায় সেখানে চালু করা হতো বালুমহাল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অসংখ্য বার অভিযান পরিচালনা করেও অবৈধ এ বালুমহালটি বন্ধ করতে পারেনি। সন্ধ্যায় অবৈধ বালুমহাল চালুর পর আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ৩-৪টি স্পিডবোট ও ট্রলার নিয়ে নদীতে মহড়া দেয় নয়ন বাহিনীর লোকজন। এ বাহিনীর সঙ্গে বিগত কয়েক মাসে কয়েকবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রতিপক্ষের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের দাবি শুক্রবার রাতে অবৈধ বালুমহালের জন্য বাল্কহেড জব্দ করতে একটি স্পিডবোট ও ইঞ্জিনচালিত একটি ট্রলার নিয়ে যাচ্ছিলো নয়ন বাহিনীর লোকজন। এসময় নৌযান দুটিতে ১০-১১ জন আরোহী ছিল। রাতে ঘনকুয়াশার কারণে দ্রুতগতির স্পিডবোটটি দিক ভুলে ট্রলারে ধাক্কা দিলে ট্রলারটি তলিয়ে যায়।
উদ্ধার ইউনিট প্রত্যয় নারায়ণগঞ্জের কমান্ডার ও বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক মো. ওবায়দুল করিম খান বলেন, শুক্রবার রাতে আমরা শুনেছিলাম বাল্কহেডের সাথে স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়েছে তবে ঘটনাস্থলে আসার পরে আমরা নিশ্চিত হয়েছি স্পিডবোটের সঙ্গে একটি ইঞ্জিনচালিত ট্রলারের সংঘর্ষ হয়েছে। দুর্ঘটনায় ট্রলারটি তলিয়ে যায় এবং স্পিডবোটটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আমাদের ধারণা যারা মারা গেছে তারা সবাই ট্রলারের যাত্রী ছিল।
তবে নিহত ওদুদ ব্যাপারীর স্ত্রী ফেরদৌসীর দাবি, অবৈধ বালুমহাল পরিচালনা নয় পাশের মতলব উত্তর উপজেলার একটি সামাজিক অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে দুর্ঘটনার শিকার হয় তারা।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে নদীতে একটি ট্রলারের সঙ্গে দ্রুতগতির স্পিডবোটের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজন মারা গেছেন।
Advertisement
আরাফাত রায়হান সাকিব/আরএইচ/এমএস