জাগো জবস

টানা সাত বছরের চেষ্টায় সফল সোহান

ডা. সুজাউদ্দিন ফারুক সোহান ৪১তম বিসিএসে স্বাস্থ্য ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। তিনি কক্সবাজারের মহেশখালীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ব্যবসায়ী এবং মা গৃহিণী। তিনি ঢাকা ডেন্টাল কলেজ থেকে বিডিএস সম্পন্ন করেন।

Advertisement

সম্প্রতি জাগো নিউজের সঙ্গে তিনি বিসিএস জয়, ক্যারিয়ার পরামর্শ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মমিন উদ্দিন—

জাগো নিউজ: বিসিএস ক্যাডার পাওয়ার অনুভূতি কেমন?ডা. সুজাউদ্দিন ফারুক সোহান: বিসিএস আমার জন্য পরম আরাধ্য একটা জিনিস ছিল। টানা সাত বছর আমি কেবল বিসিএসের পেছনেই লেগেছিলাম। রেজাল্টে আমার রোল দেখে কেমন লেগেছিল তা আসলে বলার মতো নয়। সেই অনুভূতি প্রকাশ করার মতো কোনো শব্দ আমার জানা নেই।

আরও পড়ুন: ভিন্নধর্মী কাজ দিয়ে মন জয় করেছেন মনি

Advertisement

জাগো নিউজ: পড়াশোনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা ছিল?ডা. সুজাউদ্দিন ফারুক সোহান: প্রতিবন্ধকতা ছিল না তেমন। সুদীর্ঘ যাত্রায় পরিবার আমাকে সব সময়ই সাপোর্ট দিয়ে গেছে। পরিবারের এমন সাপোর্ট ছাড়া আমার দ্বারা বিসিএস ক্যাডার হওয়া সম্ভব ছিল না। আর্থিক ও মানসিক সাপোর্ট তারা এত বছর ধরে দিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত তাদের সেই আস্থার প্রতিদান আমি দিতে পেরেছি। তাই অভিভাবকদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে, আপনারাও সন্তানদের প্রতি একটু যত্নবান হবেন, তাদের সুযোগ দেবেন। পাস করার পরপরই টাকা রোজগারের কথা বললে, মানসিকভাবে প্রেসার দিলে বড় কিছু করা তার জন্য সম্ভব না-ও হতে পারে।

জাগো নিউজ: বিসিএসের স্বপ্ন দেখেছিলেন কখন থেকে?ডা. সুজাউদ্দিন ফারুক সোহান: আমি গ্রামে বেড়ে ওঠা মানুষ, আবার গ্রামেই ফিরে যেতে চাই। সিনিয়র চিকিৎসকদের মুখে শুনেছিলাম, গ্রামে থাকার জন্য বিসিএস হওয়াটা জরুরি। ইন্টার্ন করার সময়ই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, বিসিএসের জন্য লড়াই করে যাবো। সেই স্বপ্ন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত প্রাণপণ লড়াই চালিয়ে গেছি।

জাগো নিউজ: আপনার বিসিএস যাত্রার গল্প শুনতে চাই—ডা. সুজাউদ্দিন ফারুক সোহান: আমার যাত্রাটা অনেক কষ্টের ছিল। এই ক’বছর কী পরিমাণ কষ্ট আর যন্ত্রণার মাঝ দিয়ে আমি গেছি, তা কেবল আমার কাছের মানুষজনই জানেন। পাস করার পর ৫-৬ বছরেও একটা ভালো চাকরি না হওয়ায় অনেকের কটু কথা শুনতে হয়েছে। সমালোচনা সহ্য করতে হয়েছে। কিন্তু আমি দমে যাওয়ার পাত্র নই। গত সাত বছরে আমি মোট আটটা বিসিএসে অংশগ্রহণ করেছি। প্রথম চারটায় প্রিলিতেই বাদ পড়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু কখনো হতাশ হইনি, ধৈর্যহারা হইনি। স্বপ্নের পেছনে ছুটে চলেছি। লেগে ছিলাম লক্ষ্যের পানে। লেগে থাকলে সফলতা আসবে এমন একটা আত্মবিশ্বাস সব সময়ই ছিল। পরের চারটি প্রিলিতেই উত্তীর্ণ হয়েছি। তবে ৪১তম বিসিএস ছিল আমার প্রথম রিটেন এবং প্রথম ভাইভা। এবারই আল্লাহ সফলতা দিয়েছেন।

আরও পড়ুন: প্রস্তুতির পাশাপাশি নিয়মিত মডেল টেস্ট দিতে হবে: মুহিব

Advertisement

জাগো নিউজ: নতুনদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন?ডা. সুজাউদ্দিন ফারুক সোহান: আমার কাছে বিসিএস মানে চরম ধৈর্যের পরীক্ষা, ধৈর্যের পাশাপাশি দরকার নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস। এ দুটো জিনিস কারো মাঝে থাকলেই বিসিএসের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। একাগ্রতার সঙ্গে পরিশ্রম চালিয়ে যেতে হবে। বিসিএস জার্নিটা অনেক কণ্টকাকীর্ণ, সেই সঙ্গে অনিশ্চিতও। শেষ পর্যন্ত ভালো কিছু যে হবে সে নিশ্চয়তা নেই। তাই বিসিএসের পাশাপাশি অন্য চাকরির জন্যও চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া উচিত।

জাগো নিউজ: আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?ডা. সুজাউদ্দিন ফারুক সোহান: আমি সাধারণ জীবনযাপন পছন্দ করি; জেনারেল ক্যাডার পাওয়ার জন্য সামনে ৪৩, ৪৪, ৪৫ তিনটি বিসিএসেই আমার সুযোগ আছে। এসব আর দেওয়ার ইচ্ছা নেই। আল্লাহ সম্মানজনক একটি রিজিকের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এবার গ্রামে ফিরে যাবো, এলাকার মানুষদের সেবা দেবো, নিরিবিলি পরিবেশে থাকবো।

এসইউ/এমএস