সাহিত্য

আনন ফাউন্ডেশনের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

শিল্প-সাহিত্য চর্চা বিষয়ক সংগঠন আনন ফাউন্ডেশনের ১১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়েছে। গত ১২ মে বিকেল ৩টায় রাজধানীর আনন সেন্টারে এ উপলক্ষে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

Advertisement

ফাউন্ডেশনের সভাপতি স ম শামসুল আলমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন লেখক ও নাট্যজন খায়রুল আলম সবুজ, কবি নাসির আহমেদ, কবি ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পরিচালক মিনার মনসুর, শিশুসাহিত্যিক ও চ্যানেল আইয়ের মহাব্যবস্থাপক (অনুষ্ঠান) আমীরুল ইসলাম, শিশুসাহিত্যিক ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির মহাপরিচালক আনজীর লিটন।

আলোচক ছিলেন শিশুসাহিত্যিক সৈয়দ আল ফারুক, শিশুসাহিত্যিক রহীম শাহ, শিশুসাহিত্যিক ফারুক হোসেন, শিশুসাহিত্যিক সারওয়ার-উল-ইসলাম। অনুভূতি প্রকাশ করেন আনন শিশুসাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশুসাহিত্যিক কাইজার চৌধুরী।

শুরুতে আনন ফাউন্ডেশনের সূচনা সংগীত এবং দেশাত্মবোধক গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করে আনন ফাউন্ডেশনের শিশুরা। স্বরচিত লেখা পাঠে অংশ নেন আতিক রহমান, চন্দনকৃষ্ণ পাল, ওমর ফারুক নাজমুল, গোলাম নবী পান্না, রুহুল আমিন সজল, মোকাদ্দেস-এ-রাব্বী, রবিউল মাশরাফী, হালিমা রিমা, মহসিন আহমেদ, সালমা আক্তার, অবিনাশ আচার্য, ড. কাজী আফজাল হোসেন, রানা হামিদ, শান্ত ইসলাম, মিশকাত রাসেল, সজীব মিয়া, ফারাহ দিবা, কায়েস আহমদ মাহদী, মামুন সরকার, সরকার হুমায়ুন, সাজ্জাদ বাবু, হাসান রাউফুন, মো. কায়সার আলী, সারমিন ইসলাম রত্না, খায়রুন নেসা রিমি ও অজিতা মিত্র।

Advertisement

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কবি মিনার মনসুর বলেন, ‘আমাদের ছোটবেলায় বইপড়া ও বই আদান-প্রদানের একটি প্রচলন ছিল। এখন তেমনটা দেখা যায় না। শুধু শিশুরা নয়, এখন বড়রাও বইয়ের পরিবর্তে মোবাইলে বেশি আসক্ত। আমাদের দেশের ধনীরা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান করতে যতো আগ্রহী, শিশুদের উন্নতিকল্পে কিছু একটা করার ব্যাপারে তারা ততটা আগ্রহী নন। যেটি করছেন স ম শামসুল আলম তার আনন ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে। শিশুদের মানসিক বিকাশে এবং শিশুদের বইমুখি করার লক্ষ্যে তিনি ‘আনন ফাউন্ডেশন পাঠাগার’ গড়ে তুলেছেন। তার এ কর্মকাণ্ডে সত্যিই আমি অভিভূত এবং আনন্দিত। আমি আনন পাঠাগারের জন্য বই উপহার দেব। আমি চেষ্টা করব জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের পাঠাগার অনুদানের তালিকায় আনন পাঠাগারের নাম নিবন্ধনের জন্য।’

কাইজার চৌধুরী বলেন, ‘আমি আননের শতায়ু কামনা করি। আমি বিশ্বাস করি, আনন ফাউন্ডেশনের শিশুরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আমদের দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করবে। আনন ফাউন্ডেশন যে পথে আছে, সে পথ থেকে যেন বিচ্যুত না হয়; আমি সে আশাই করব।’

ফারুক হোসেন বলেন, ‘আমি শুরু থেকেই আনন ফাউন্ডেশনের সঙ্গে আছি। আমার মনে হয়, আনন ফাউন্ডেশন সফলতার দ্বারপ্রান্তে এসে গেছে। আনন ফাউন্ডেশন শিশুসাহিত্যিকদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। আমি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম, আনন প্রকাশন আমাদের দেশের প্রতিষ্ঠিত লেখকদের বই প্রকাশ করে ইতোমধ্যেই নিজেদের একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। আমি আনন ফাউন্ডেশনের মতোই আনন প্রকাশনের সফলতা কামনা করি।’

সৈয়দ আল ফারুক বলেন, ‘আমাদের স ম শামসুল আলম কচি-কাঁচার মেলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং দাদাভাইয়ের খুব কাছের মানুষ ছিলেন। দাদাভাইয়ের আদর্শ আমি স ম শামসুল আলম এবং তার প্রতিষ্ঠিত আনন ফাউন্ডেশনের মধ্যে দেখতে পাই।’

Advertisement

কবি নাসির আহমেদ বলেন, ‘শিশু অধিকারের নামে এখন আর শিশুদের শাসন করা যায় না। যার কারণে শিশুরা অনেকটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে। শিশুদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও বেশি আনন ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠান দরকার। অর্থবিত্ত থাকলেই হয় না। তা ভালো কাজে খরচের একটা মানসিকতার প্রয়োজন আছে। সেটা আমাদের স ম শামসুল আলম শিশুদের জন্য কাজ করে সমাজের নানা শ্রেণির মানুষকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন।’

আনজীর লিটন বলেন, ‘আননের অনুষ্ঠান মানে ব্যতিক্রম কিছু। আনন ফাউন্ডেশন ব্যতিক্রম সব বিষয়ে। আনন আজ হয়তো ছোট পরিসরে অনুষ্ঠান করছে। এই ছোট পরিসরেও আনন শিশুসাহিত্যের সব দিকপালকে একত্রিত করেছে। আননের জন্য আমার শুভ কামনা।’

আমীরুল ইসলাম বলেন, ‘স ম শামসুল আলম শিশুদের ভালোবাসেন, শিশুরাও তাকে ভালোবাসে। আনন একটি সুশৃঙ্খল প্রতিষ্ঠান। এখানে এত লোকের সমাগম কিন্তু কোনো হইচই নেই। ছোটাছুটি নেই। সবাই আগ্রহভরে অনুষ্ঠান উপভোগ করছেন। আননের কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।’

খায়রুল আলম সবুজ বলেন, ‘এই আশাহীনতার মধ্যে আমরা কখনো কখনো আশা খুঁজে পাই। আজ আনন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এসে আমি মনে নতুন আশার আলো খুঁজে পেলাম। নতুন সুন্দর আলোকিত দিনের দেখা পেলাম। স ম শামসুল আলমের এই শুভ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। আমার অনুরোধ, আপনারা সত্যকে গ্রহণ করুন। মিথ্যা পরিহার করুন। তা হলে সমাজ আরও সুন্দর হবে। আনন ফাউন্ডেশন শিশুদের সেই সুন্দর জীবন উপহার দেওয়ার জন্য সতত কাজ করে যাচ্ছে। আমি আননের সফলতা কামনা করি।’

সবশেষে অনুষ্ঠানের সভাপতি সবার সহযোগিতা কামনা করে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘোষণা করেন। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মনিরুজ্জামান পলাশ।

এসইউ/এএসএম