বাংলাদেশের একজন অর্থনীতিবিদ, কূটনীতিবিদ এবং রাজনীতিবিদ। ১৯৩১ সালের ১ মে বাংলাদেশের সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পুরো নাম শাহ আবু মোহাম্মদ শামসুল কিবরিয়া। ১৯৫২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। সে বছরই বাংলা ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তান পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। অল্পকিছুদিন পরেই মুক্তি পান তিনি।
Advertisement
১৯৫৩ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর পাকিস্তান সরকারের সেন্ট্রাল সুপিরিয়র সার্ভিস পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে পাকিস্তানে বৈদেশিক বিভাগে যোগদান করেন। কিবরিয়া আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে ফ্লেচার স্কুল অব ল এবং যুক্তরাজ্যের লন্ডনে ব্রিটিশ ফরেন অফিসে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। পাকিস্তানের কূটনৈতিক মিশনের সদস্য হিসেবে কলকাতা, কায়রো, জাতিসংঘ মিশন, নিউইয়র্ক, তেহরান এবং জাকার্তায় নিয়োজিত ছিলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ঢাকায় নবপ্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন রাজনৈতিক বিষয়ক বিভাগের মহাপরিচালক হিসেবে যোগদান করেন। এছাড়াও তিনি সচিব হিসেবে প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮১-১৯৯২ সালের মধ্যেকার সময়ে তিনি জাতিসংঘের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক এবং সামাজিক কমিশন (এসকাপ)-এর প্রধান নির্বাহী ছিলেন।
জাতিসংঘের কার্যাবলী সম্পন্ন করে কিবরিয়া ১৯৯২ সালে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। দেশের সেবা করার লক্ষ্যে রাজনীতিতে আগ্রহী হয়ে ঐ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে যোগদান করেন। একই সময়ে কিবরিয়া জাতীয় দৈনিকগুলোতে অর্থনীতি এবং রাজনৈতিক ইস্যু সম্পর্কীয় নিবন্ধ লেখতে শুরু করেন। ৪টি বই রচনা করছেন। সেগুলো হলো- মৃদুভাষণ, ১৯৯৭, আইএসবিএন: ৯৮৪-০৫-০১৮৩-৬, দ্য ইমার্জিং নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার, ইংরেজি, ১৯৯৯, আইএসবিএন: ৯৮৪-০৫-১৪৭০-৯, বাংলাদেশ এট দ্য ক্রসরোডস্, ইংরেজি, ১৯৯৯, আইএসবিএন: ৯৮৪-০৫-১৪৬৩-৬, চিত্ত যেথা ভয়শূন্য। এছাড়াও তিনি সাপ্তাহিক মৃদুভাষণ পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা এবং সম্পাদক ছিলেন।
Advertisement
১৯৯৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতির ‘রাজনৈতিক উপদেষ্টা’ পদে নিযুক্ত হন। এছাড়াও অর্থমন্ত্রী হিসেবে কিবরিয়া ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে এম.পি বা সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। কিবরিয়া জানুয়ারি ২৭, ২০০৫ তারিখে তার নির্বাচনী এলাকা সিলেটের হবিগঞ্জে গ্রেনেড হামলায় মর্মান্তিকভাবে নিহত হন।
কেএসকে/জিকেএস